বিপুল উৎসাহ আর উদ্দীপনা এবং তারুণ্যের বাঁধভাঙা জোয়ারের মধ্য দিয়ে কানাডার টরন্টোয় অনুষ্ঠিত হয়েছে জমজমাট ‘বাংলা রকফেস্ট ২০২৩’। কানাডার বাংলাদেশি ব্যান্ড শিল্পীদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠান সকলস্তরের দর্শক শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে কমিউনিটির সেরা এবং সফল আয়োজন হিসেবে প্রশংসিত হয়েছে সকল মহলে।
বাংলাদেশি ব্যান্ড অ্যাসোসিয়েশন অব কানাডা এবং ম্যাপলহুড নেইবারকেয়ার এন্টারটেইনমেন্ট এর উদ্যোগে গত শনিবার ১৯০ রেলসাইড রোডের ‘টরন্টো প্যাভিলিয়ন’এ অনুষ্ঠিত হয় বাংলা ব্যান্ড সঙ্গীতের ব্যতিক্রমী এই অনুষ্ঠান।
এবারের আয়োজনে বাংলাদেশি শিল্পীদের নিয়ে গড়ে ওঠা ৭টি ব্যান্ড অংশ নেয়। এগুলো হচ্ছে ক্র্যাক প্লাটুন, আয়রন ক্লেফ, ঝড়, সেক্টর ২.০, ব্যান্ড ফোর, যান্ত্রিক এবং মানুষ।
এবারের রক ফেস্ট এর অন্যতম আকর্ষণ ছিলো নতুন দুটি ব্যান্ড গ্রুপের আত্মপ্রকাশ। উৎসবের শুরুও হয় এই দুটি গ্রুপ দিয়েই।
প্রথমেই মঞ্চে আসে ক্র্যাক প্লাটুন তাদের আত্মপ্রকাশের পারফরমেন্স নিয়ে। পরিবারের চার সদস্যের এই ব্যান্ড গ্রুপ তাদের অসাধারণ পরিবেশণায় দর্শকদের মুগ্ধ করে। এর পরেই আরেকটি নতুন ব্যান্ড আয়রন ক্ল্যাফ তাদেরে আত্মপ্রকাশের জানান দিয়ে মনকাড়া পরিবেশনার মধ্য দিয়ে।
এর পরে একে একে মঞ্চে আসে ব্যান্ড গ্রুপ- মানুষ, যান্ত্রিক, সেক্টর ২.০, ঝড়, এবং ব্যান্ড ফোর। ’মানুষ’ ব্যান্ড সফ্ট রক ফিউশন এ তাদের নিজেদের কিছু মৌলিক গান পরিবেশনা করে। এর পরেই মঞ্চে আসে যান্ত্রিক বেশ কিছু জনপ্রিয় গান নিয়ে। দর্শক শ্রোতারা প্রাণ খুলে তাদের সাথে গাইতে থাকে। সেক্টর ২.০ পরিবেশন করেন তাদের নিজেদের বেশ কিছু গান যা সত্যিই প্রশংসনীয়। এরপর ‘ঝড়’ যেন সত্যি সত্যি ঝড় তুলে দিলো টরোন্টো প্যাভিলিয়নে। ‘ব্যান্ড ফোর’ জনপ্রিয় সব গান দিয়ে মুগ্ধ করেন দর্শকদের মন। সবশেষে সকল ব্যান্ড মিলে প্রয়াত লিজেন্ড আইয়ুব বাচ্চুকে শ্রদ্ধা জানিয়ে 'সেই তুমি' গান টি গেয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানেন। প্রায় ৬ ঘণ্টার এই কনসার্ট ছিল টরোন্টোর বাংলাদেশীদের মিলনমেলা!
বিকেল থেকেই বিপুল সংখ্যক দর্শক শ্রোতা অনুষ্ঠানস্থলে ভীড় জমায়। গভীর রাত পর্যন্ত নেচে গেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তরুণরা। আয়োজকদের নিপুণ ব্যবস্থাপনায় পুরো অনুষ্ঠানটিই সম্পন্ন হয় কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই। শিল্পীদের পারফরমেন্সের পাশাপাশি বাংলা রক ফেস্ট এর ব্যবস্থাপনা টীমের নৈপুণ্যও দর্শকদের প্রশংসা অর্জন করেছে।
আয়োজকরা জানান, বাংলা রকফেস্ট এর মাধ্যমে প্রবাসের তরুণ প্রজন্মের সাথে বাংলা সংস্কৃতির মেলবন্ধন তৈরির মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন আমাদের লক্ষ্য। আমাদের তরুণ প্রজন্ম এখনো বাংলা সংস্কৃতিকে ভালবাসে, বাংলাদেশকে ভালবাসে। শুধু দরকার ছিল এমন একটা পদক্ষেপের।