খবর প্রকাশিত: ০১ ডিসেম্বর, ২০২৩, ০৩:২০ এএম
আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: রাশিয়া আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) থেকে ২০২৪ সালের পরই সরে আসবে এবং নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন তৈরি করবে বলে জানিয়েছে।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার সঙ্গে দীর্ঘদিনের অংশীদারিত্বের পাট চুকিয়ে রাশিয়ার আইএসএস ছেড়ে চলে আসার এই সিদ্ধান্ত এরই মধ্যে নেয়া হয়েছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে এমন কথাই জানিয়েছেন রুশ মহাকাশ সংস্থা রসকসমস এর প্রধান ইউরি বরিসোভ। তবে আইএসএস ছাড়ার আগ পর্যন্ত যেসব কর্তব্য আছে তা রাশিয়া ঠিকমতই পালন করবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ওদিকে, নাসার আইএসএস পরিচালক রবিন গ্যাটেনস বলছেন, নাসা এখনও আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন ছেড়ে রাশিয়ার চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে সরকারি কোনও বার্তা পায়নি। বিবিসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে মিলে ১৯৯৮ সাল থেকে সফলভাবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের (আইএসএস) কাজ করে আসছে। কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলো মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণে রাশিয়া মহাকাশ স্টেশন প্রকল্প ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে আগেই।
১৯৯৮ সালে পৃথিবীর চারপাশের কক্ষপথে স্থাপন করা হয়েছিল আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস)। এটি মূলত যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জাপান, কানাডা এবং ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার যৌথ প্রকল্প। হাজারো বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নীরিক্ষার জন্য এই মহাকাশ স্টেশন ব্যবহার করা হয়ে আসছে। এই স্টেশনের কার্যক্রম ২০২৪ সাল পর্যন্তই চালানোর অনুমোদন দেয়া হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র সব অংশীদারদের সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে এই মেয়াদ আরও ছয় বছর বাড়াতে চেয়েছে।
গতবছর ডিসেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন আইএসএস এর মেয়াদ ২০২৪ সাল থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। কিন্তু এই প্রকল্পে নাসার এক নম্বর অংশীদার রাশিয়া এ সংক্রান্ত চুক্তিতে কখনওই সই করেনি।
মঙ্গলবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে এক বৈঠকে মাহাকাশ সংস্থা রসকসমসের প্রধান বরিসোভ বলেছেন, ২০২৪ সালেই আইএসএস ছাড়া সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং এই সময়ের মধ্যে রাশিয়ান মহাকাশ স্টেশন স্থাপনের কাজ শুরু করা হবে বলেই তিনি মনে করছেন। নতুন এই স্টেশন তৈরির কাজকেই তার সংস্থা অগ্রাধিকার দিচ্ছে বলে জানান বরিসোভ।
সিএনএন জানায়, রাশিয়ার সরে যাওয়াটা হবে আইএসএস এর জন্য এক বড় ধরনের ধাক্কা। কারণ, আইএসএস দুটো ভাগে বিভক্ত। একটি হচ্ছে রাশিয়ান অরবিটাল সেগমেন্ট এবং অপরটি ইউএস অরবিটাল সেগমেন্ট। রাশিয়ার অংশটি আমেরিকান অংশের বিদ্যুৎ ছাড়া কাজ চালাতে পারে না। আবার আমেরিকান অংশ রাশিয়ার অংশের চালিকাশক্তি ছাড়া কাজ করতে পারেনা। ফলে এক পক্ষকে ছাড়া অন্য পক্ষ অসম্পূর্ণ।
তবে রাশিয়ার আইএসএস ছাড়ার হুমকির মুখে নাসা এবছরের শুরুর দিক থেকেই মাহাকাশ স্টেশনটিকে রাশিয়ার সহায়তা ছাড়াই চলনশীল রাখার পথ খুঁজছে। কিছু কিছু বিকল্প ব্যবস্থা তারা করছেও। কিন্তু তারপরও রাশিয়ার সহায়তা ছাড়া আইএসএস টিকে থাকতে পারবে কিনা সেটি এখনও বড় প্রশ্ন।