বিশ্বের অন্যতম বড় চলচ্চিত্র আয়োজন টরন্টো উৎসব। নিজের প্রথম ছবির প্রিমিয়ার হবে সেখানে। কেমন লাগছে?
উত্তর দেওয়ার আগে বলে নিই, টরন্টো উৎসবে সিলেকশনের সুখবরটা যখন এসেছিল, তখন দেশের অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না। মানুষের মনের অবস্থা ভালো ছিল না।
এটা আমার ও পুরো ‘সাবা’ টিমের জন্যই বড় প্রাপ্তি। আশা করছি ছবিটার গল্প ও চরিত্রের সঙ্গে সেখানকার দর্শক একাত্ম হতে পারবেন এবং প্রতিক্রিয়া জানাবেন।
উৎসবের ডিসকভারি বিভাগে নির্বাচিত হয়েছে ‘সাবা’। এই বিভাগের বিশেষত্ব কী?
যাঁরা প্রথমবার চলচ্চিত্র বানিয়েছেন, তাঁদের ছবি এখানে স্থান পায়। উৎসব কর্তৃপক্ষ এমন কিছু ছবি খুঁজে বের করতে চান, যেগুলো সবার দেখা উচিত।
এ কারণেই বিভাগটির নাম ডিসকভারি। এবার ‘সাবা’ ছাড়াও বিভিন্ন দেশের ২৪টি ছবি প্রদর্শিত হবে এই বিভাগে।
যেহেতু বহু দেশের ছবি অংশ নিচ্ছে, সুতরাং প্রতিযোগিতাও নিশ্চয়ই কঠিন হবে। ‘সাবা’ নিয়ে আপনার প্রত্যাশা জানতে চাই..
প্রথমত, আশা করিনি ছবিটা টরন্টো উৎসবে নির্বাচিত হবে। এটাই আমাদের কাছে অনেক বড় সারপ্রাইজ। আমি নিশ্চিত এখানে যেসব ছবি নির্বাচিত হয়েছে, সবই দুর্দান্ত। এর মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশি ছবি ‘সাবা’। হয়তো আমাদের ছবিটা উৎসবের বিচারকদের মন ছুঁতে পেরেছে, ভাবাতে পেরেছে, তাই বেছে নিয়েছেন। একটা ছবি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তাঁরা অনেক বিষয় বিবেচনা করেন।
ক্যারিয়ারের প্রথম ছবির প্রথম প্রদর্শনীতে উপস্থিত থাকবেন তো?
যাওয়ার ইচ্ছা আছে। দেখা যাক, দেশের পরিস্থিতি এবং সব কিছু মিলিয়ে সুযোগ হয়ে ওঠে কি না। উৎসবে ‘সাবা’র চারটি প্রদর্শনী হবে। আশা করব, প্রবাসী বাংলাদেশি যারা টরন্টোতে আছেন, তাঁরা ছবিটি দেখতে আসবেন।
ব্যক্তি মেহজাবীনের দৃষ্টিতে ছবির সাবা কেমন?
আমি বরাবরই এমন চরিত্রে অভিনয় করতে চাই, যার সঙ্গে আমার চিন্তা-ভাবনায় অমিল থাকে। এটাকেই আমার মূল চ্যালেঞ্জ মনে হয়। জীবনকে একদম আলাদা জায়গা থেকে চিন্তা করে সাবা। ব্যক্তি মেহজাবীনের চেয়ে সাবা অনেক সাহসী। এটা কেন বলছি, ছবিটা দেখলে বুঝতে পারবেন দর্শক।
দর্শককে দেখার কথা যেহেতু বললেন, সেই সুযোগটা দেশের দর্শক কবে পাবে?
প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির আগে উৎসবগুলোতে দেখাতে হয়। টরন্টোতে প্রিমিয়ার হবে, আরো কিছু উৎসবেও ছবিটি জমা আছে। উৎসব ঘোরা শেষে দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে। নির্দিষ্ট তারিখ এখনই বলতে পারছি না।
দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে অনেক দিন কাজ বন্ধ। কাজে নামবেন কবে নাগাদ?
বেশ কিছু কাজের কথা চলছে। কিছু কাজ প্রায় চূড়ান্ত। তবে এখন আসলে কেউ-ই শুটিং করার মতো মানসিক অবস্থায় নেই। সব কিছু গুছিয়ে নিতে একটু সময় লাগবে। এর মধ্যে সবাই মিলে যদি দেশটাও গুছিয়ে নেওয়া যায়, সেটাই ভালো হয়।
ছাত্র-জনতার আন্দোলন, পট পরিবর্তন—আপনার বিশ্লেষণ কী?
আন্দোলনটা যখন শুরু হয়, তখন আমি দেশে ছিলাম না। খবর দেখলেও সেগুলো অস্পষ্ট মনে হচ্ছিল। পরে যখন বিষয়টির গভীরতা বুঝতে পারি, তখন থেকে মনের কথাগুলো ফেসবুকে প্রকাশ করেছি। আমি মনে করি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা উচিত। কে আগে তুলল, কে পরে তুলল সেটা বিষয় না। অন্যায়টাকে রুখে দিতে পারছি কি না, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। যে সময়টাতে আর সহ্য করা যাচ্ছিল না, তখন সবাই রাস্তায় নেমে এসেছিল। আমার মনে হয় এই আন্দোলন সবাই মনে রাখবে, ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে।