আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: বিদেশি সংস্থার সহায়তা প্রশ্নে নতুন আইন সামনে নিয়ে এসেছে মিয়ানমার সরকার। আইনটির কারণে দেশটিতে বিদেশি সহায়তা পৌঁছানো কষ্টকর হয়ে যাবে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।  

নতুন ওই আইনে জান্তা সরকারের কালো তালিকায় থাকা গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সহায়তাকারীদের ‘প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ’ যোগাযোগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এতে করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) জন্য সংঘাত কবলিত দেশটিতে সহায়তা পাঠানো অনেকটাই কঠিন হয়ে উঠবে বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

 

 

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে জান্তা সরকার ক্ষমতা দখলের পর থেকে এ পর্যন্ত মিয়ানমারে পাঁচ কোটি ২০ লাখ ডলারের সহায়তা পাঠিয়েছে ইইউ।

নতুন আইনটি কী?
নতুন ওই আইনকে বলা হচ্ছে ‘সংস্থা নিবন্ধন আইন’। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থার একজন কর্মকর্তা এ প্রসঙ্গে বলেন, মিয়ানমারে কিভাবে সহায়তা পাঠানো হবে, আইনটি তাতে প্রভাব ফেলবে এবং স্থানীয় সংস্থাগুলো কিভাবে বিদেশি সংস্থার সঙ্গে কাজ করবে, তা-ও সীমিত করবে এটি।

সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠানের এক কর্মী জানান, অনেক স্থানীয় অলাভজনক সংস্থাই নিবন্ধন করবে না। কারণ এ কাজের মধ্য দিয়ে জান্তা সরকারকে বৈধতা দানকারী হিসেবে নিজেদের তুলে ধরতে চায় না তারা। এ ছাড়া জান্তা সরকার আগে থেকেই অনেক নাগরিক সমাজবিষয়ক সংস্থাকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়েছে বলেও জানা গেছে।       

‘সৃজনশীল হতে হবে’ সহায়তাকারী সংস্থাগুলোকে
বর্তমান পরিস্থিতিতে সহায়তাকারী সংস্থাগুলোকে হয় অনিবন্ধিত স্থানীয় দলের সঙ্গে কাজ করতে হবে এবং কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে শাস্তি পাওয়ার ঝুঁকিতে থাকতে হবে। আর না হয় তাদের সঙ্গে কাজ বন্ধ করে দিতে হবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, কাজ বন্ধ করে দিলে মানবিক সহায়তার প্রবাহে গুরুতর প্রভাব পড়বে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিভাগের উপপরিচালক ফিল রবার্টসন বলেন, স্বল্প থেকে মাঝারি মেয়াদে নাগরিক সমাজ গোষ্ঠীর ওপর আরোপিত এই নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নকে সহায়তা পাঠানোর জন্য বিকল্প খুঁজে বের করতে বাধ্য করবে। সম্ভবত সীমান্তভিত্তিক কর্মসূচি হাতে নেওয়া হবে, যার মধ্য দিয়ে দেশের ভেতরে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হবে।

মিয়ানমার বিষয়ক শিক্ষাবিদ ক্রিস্টিসা কিরোনস্কার মতে, মিয়ানমারে তহবিল পাঠানোর ক্ষেত্রে অলাভজনক সংস্থাগুলোকে ‘আরো বেশি সৃজনশীল হতে হবে'।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন কমিশনের এক মুখপাত্র নতুন আইন প্রসঙ্গে বলেন, আমরা পরিস্থিতিকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং এটি কোন দিকে মোড় নেয়, তা বোঝার চেষ্টা করছি, সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার সঙ্গে জড়িতরা বিপদে পড়ছে না, তা-ও নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।

ইইউ মুখপাত্র আরো বলেন, যা বদলে যায়নি, তা হলো- আমরা মিয়ানমারকে কিভাবে দেখছি, সেই বিষয়টি। যা গত বছরের সামরিক অভ্যুত্থানের পর নাটকীয়ভাবে প্রতিকূল হয়েছে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে