আবাসনসংকট কাটিয়ে উঠতে রবিবার গোল্ডেন ভিসার নিয়ম কঠোর করেছে গ্রিস। এই ভিসা পেতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগের পরিমাণ কয়েক গুণ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।
বিনিয়োগের বিপরীতে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি দিয়ে ভিসা দেওয়ার নিয়মটিকে গোল্ডেন ভিসা বলা হয়। বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে অনেক দেশই এমন সুযোগ দিয়ে থাকে।
এই প্রকল্পটি বেশ সাফল্যের মুখ দেখেছে। ২০১৪ সালে গোল্ডেন ভিসার নিয়ম ঘোষণার পর হাজার হাজার চীনা বিনিয়োগকারী গ্রিসে নানা ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন।
গ্রিক অর্থ মন্ত্রণালয় রবিবার ঘোষণা করেছে, নতুন নিয়মে কিছু আকর্ষণীয় স্থানে এখন গোল্ডেন ভিসার জন্য অন্তত আট লাখ ইউরো বিনিয়োগ করতে হবে। এসব এলাকার মধ্যে রয়েছে রাজধানী এথেন্স, আটিকা, থেসালোনিকি, মাইকোনোস, সান্তোরিনি ও তিন হাজার ১০০ জনের বেশি বাসিন্দার দ্বীপগুলো। অন্যান্য অঞ্চলে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়িয়ে করা হয়েছে চার লাখ ইউরো।
অর্থমন্ত্রী কোস্টিস হাৎসিদাকিস বলেছেন, ‘এই সিদ্ধান্ত সরকারের আবাসন নীতির অংশ, যার লক্ষ্য বেসরকারি খাতের সহযোগিতায় সব নাগরিকের জন্য সাশ্রয়ী ও মানসম্মত আবাসন নিশ্চিত করা।’
ব্যাংক অব গ্রিসের তথ্য অনুসারে, ২০১৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রায় এক দশক দীর্ঘ অর্থনৈতিক সংকট থেকে বের হয়ে আসার পর দেশটিতে বাসা ভাড়া ২০ শতাংশ বেড়েছে।
বিনিয়োগকারীদের এখন অন্তত ১২০ বর্গমিটারের একটি সম্পত্তি কিনতে হবে, অন্যদিকে আবাসনে রূপান্তরিত করা ঐতিহাসিক স্থাপনা ও শিল্প ভবনগুলোর মূল্য হবে অন্তত আড়াই লাখ ইউরো।
অভিবাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ভিসাগ্রহণ বা নবায়নের জন্য রেকর্ড ১০ হাজার ২১৪টি আবেদন জমা পড়েছে। ২০২৩ সালে মোট পাঁচ হাজার ৭০১টি গোল্ডেন ভিসা পারমিট দেওয়া হয়েছে এবং আরো আট হাজার ৮০০টি আবেদন এখনো নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে।
গ্রিসের অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিক লিমিটেড কম্পানিজ অ্যান্ড এন্টারপ্রেনারশিপ (এসএই/ই) অবশ্য এই নীতির কার্যকারিতা নিয়ে সন্দিহান। ২০০৮ সালে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক সংকটের পর থেকে সম্পত্তির বাজার এবং নির্মাণ শিল্প একটি গুরুতর মন্দার সম্মুখীন হয়েছিল।
এসএই/ই বলছে, এখন পর্যন্ত রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগের জন্য প্রায় ২০ হাজার বিনিয়োগকারীকে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অভিবাসন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, কেবল ২০২১ সালেই ছয় হাজার ৪০৫ জন চীনা নাগরিক গ্রিসে বসবাসের অনুমতি নিয়েছেন।