ইউক্রেনের উপর গত প্রায় দুই বছর ধরে রাশিয়ার লাগাতার হামলা ইউরোপের দীর্ঘকালীন নিরাপত্তার জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। শুধু সামরিক জোট ন্যাটোর ওপর ভরসা করে সেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যে পুরোপুরি সম্ভব নয়, ইউরোপে সেই উপলব্ধি বাড়ছে। বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো নেতা আবার যুক্তরাষ্ট্রের হাল ধরলে তো নয়ই। তুরস্ক ও হাঙ্গেরির মতো ন্যাটো সদস্য দেশের সাম্প্রতিক আচরণও সামরিক জোটের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টুস্ক সোমবার বার্লিনে ‘দ্য থ্রি মাস্কেটিয়ার্স’ বইয়ের উল্লেখ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোর মধ্যে এই তিন দেশের বিশেষ সহযোগিতার ডাক দেন। প্রথমে প্যারিস, তারপর বার্লিন সফর করে তিনি ইউরোপের প্রতিরক্ষা জোরদার করতে এই তিন দেশের সহযোগিতার প্রয়োজন তুলে ধরেন। এ ছাড়া ১৯৯১ সালে ‘ভাইমার ফরম্যাট’ নামে তিন দেশের সহযোগিতার কাঠামো আবার চাঙ্গা করার কথা বলেন টুস্ক।
অন্যদিকে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজও তিন দেশের সেই সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরেন। পাশাপাশি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ পোল্যান্ডের ‘আস্থাভাজন ও ইউরোপপন্থি সহযোগী’ হিসেবে টুস্কের সরকারের প্রশংসা করেন।
উগ্র জাতীয়তাবাদী ও ইউরোপবিরোধী পিস পার্টির অধীনে পোল্যান্ড বহুকাল জার্মানি ও ফ্রান্সের সঙ্গে দুরত্ব বজায় রেখে আসছিল। গত জানুয়ারি মাসেই ম্যাখোঁ বলেছিলেন, ওয়াশিংটন ইউক্রেনের জন্য সাহায্য বন্ধ করে দিয়ে ইউরোপকেই সেই শূন্যস্থান পূরণ করতে এগিয়ে আসতে হবে।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ সোমবার বার্লিনে টুস্কের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন। তাঁর মতে, ন্যাটোর কোনো সদস্য আক্রান্ত হলে, সে দেশের সহায়তার নিশ্চয়তা আপেক্ষিক করা অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন ও বিপজ্জনক। শোলজ চলতি বছর থেকে শুরু করে জার্মানির প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত ব্যয় জিডিপির দুই শতাংশের মাত্রা পেরিয়ে যাবে বলে মনে করিয়ে দেন, যা সামরিক জোট ন্যাটোর লক্ষ্যমাত্রা।আরো শোলজও অস্ত্র, সামরিক সরঞ্জাম ও গোলাবারুদ উৎপাদন দ্রুত বাড়াতে ইউরোপীয় স্তরে সহযোগিতার ওপর জোর দেন।