বিশ্বকাপের মতো আসরে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারাটাও গর্বের। জাতীয় সংগীত চলাকালে গলা মেলানো, আবেগে ফেটে পড়ার দৃশ্যটাও খুব বেশি অচেনা নয়। তবে আজ ইংল্যান্ডের মুখোমুখি যখন হলো ইরান, তখন ইরানিয়ান ফুটবলাররা কি-না সেই জাতীয় সংগীতই গাইলেন না। জাতীয় সংগীত বাজছে, তারা দাঁড়িয়ে রইলেন নির্বিকার হয়ে!
এমন দৃশ্যের দেখা সচরাচর মেলে না। আজ যখন খালিফা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হলো দুই দল, তখন কেন এমন করলেন ইরানি ফুটবলাররা? তার কারণটা লুকিয়ে আছে তাদের দেশে। ইরানে এখন চলছে হিজাব বিরোধী আন্দোলন।
দুই মাস আগে পুলিশি হেফাজতে তরুণ এক নারীর মৃত্যু ঘটে দেশটিতে। হিজাব ও বোরকা না পড়ে বাড়ির বাইরে বের হওয়ায় মাশা আমিনি নামের সেই তরুণীকে গ্রেপ্তার করে থানা হেফাজতে নিয়ে যায় দেশটির মর্যালিটি পুলিশ।
হেফাজতে নিয়ে যাওয়ার দু’ঘণ্টা পরই গুরুতর আহত অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানে তাকে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষ রক্ষা হয়নি, তিনি কোমায় চলে যান, শেষমেশ ঢলে পড়েন মৃত্যুর কোলে।
পুলিশি হেফাজতে তরুণীর মৃত্যুর পর থেকেি দেশটিতে হিজাববিরোধী আন্দোলন করছেন ইরানের নারীরা। চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন ১৯৭৯ সালে দেশটিতে ইসলামিক বিপ্লবের পর থেকে চলে আসা আইনকেও।
সেই আন্দোলনকে সমর্থন জানাতেই আজ ইরানের খেলোয়াড়রা জাতীয় সংগীতে গলা মেলালেন না। খলিফা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের লাউড স্পিকারে যখন বাজছে ইরানের জাতীয় সংগীত, তখন নির্বিকার হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন সবাই।
ফুটবলের বিশ্বআসরে এমন কাজে আন্দোলনকারীদের বড় সমর্থনই দেবে। তবে সেজন্য খেলোয়াড়দের ওপর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।