গত বছরের প্রথম চার মাসের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম চার মাসে শিল্পে ২১ শতাংশ বাড়তি গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। বুধবার (২৮ মে) থেকে শিল্পে স্বাভাবিকের পাশাপাশি দৈনিক আরও ১৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস যুক্ত করা হবে।
সোমবার (২৬ মে) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা নোবেল দে পেট্রোবাংলার উদ্ধৃতি দিয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপিতে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
বিজ্ঞপিতে বলা হয়েছে, গত বছর জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চার মাসে দিনে গড়ে গ্যাস সরবরাহ হয়েছে ৮২ কোটি ৩০ লাখ ঘনফুট। এবার গড়ে সরবরাহ করা হয়েছে ৯৯ কোটি ৭০ লাখ ঘনফুট। এর মধ্যে গত বছরের এপ্রিলের তুলনায় চলতি বছরের এপ্রিলে সরবরাহ বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। গত বছরের এপ্রিল মাসে দিনে গড়ে সরবরাহ করা হয় ৭২ কোটি ৬০ লাখ ঘনফুট। এবার এপ্রিলে সরবরাহ করা হয়েছে ১০৮ কোটি ৮০ লাখ ঘনফুট।
এতে আরও বলা হয়, শিল্পে গ্যাস সরবরাহ বাড়াতে গত বছরের তুলনায় এবার ছয়টি তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) কার্গো বেশি আমদানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর আমদানি মূল্য প্রতি ঘনমিটার ৬৫ টাকা। শিল্প খাতে প্রতি ঘনমিটারের দাম রাখা হয় ৩০ টাকা, আর শিল্পে উৎপাদিত নিজস্ব বিদ্যুতের ক্ষেত্রে দাম ৩১ টাকা ৫০ পয়সা, অর্থাৎ অতিরিক্ত গ্যাস সরবরাহের জন্য প্রতি ঘনমিটারে সরকারকে ৩৫ টাকা ভর্তুকি দিতে হবে।
সরকার শিল্পে গ্যাস সরবরাহের বিষয়ে তৎপর এবং দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সরকার আশা করে এ বিষয়ে সব বিভ্রান্তির অবসান ঘটবে বলেও জানানো হয়।
এর আগে গত রোববার (২৫ মে) সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ী নেতারা জানান, গ্যাস সরবরাহ পাওয়ার ক্ষেত্রে রপ্তানি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে অগ্রাধিকার প্রদান করা উচিত হলেও তা করা হচ্ছে না, বরং রপ্তানি আয়ের মূল উৎসের প্রতিষ্ঠানগুলো গ্যাসের অভাবে স্বাভাবিক উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না। অধিকাংশ টেক্সটাইল মিল এবং পোশাক কারখানায় গ্যাসের শূন্য চাপের প্রমাণ রয়েছে।
গ্যাস সরবরাহের এই অবস্থা চলতে থাকলে বিটিএমএ, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ এবং বিটিটিএলএমইএ এর অধীনের টেক্সটাইল এবং পোশাক খাতের প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে। এই সংকট চলতে থাকলে উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হয়ে রপ্তানি কমে যাবে। ফলে ফরেন রিজার্ভের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। সামষ্টিক অর্থনীতি মেরামতের সরকারের সাম্প্রতিক উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করবে। নেতিবাচক প্রভাব পড়বে দেশের অর্থনীতিতে। এতে আর্থিক সংকট ঘনীভূত হবে, ব্যাংক ঋণ এবং শ্রমিকদের বেতনাদি পরিশোধে আশঙ্কা তৈরি হবে মর্মে উৎপাদক এবং রপ্তানিকারকরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।