নামাজ পড়ার সময় কেউ যদি ভুলে রুকুর তাসবিহ সেজদাতে আর সেজদার তাসবিহ রুকুতে পড়ে ফেলে, অর্থাৎ রুকুতে ‘সুবহা-না রব্বিয়াল 'আলা’ পড়ে অথবা সেজদায় ‘সুবহা-না রব্বিয়াল 'আযীম’ পড়ে তাহলে তার কী করণীয়?
যা করণীয়
নবীজি (সা.) রুকু ও সিজদার মধ্যে আল্লাহর প্রশংসা মূলক বিভিন্ন বাক্য ও দোয়া পড়তেন। এগুলো একটার জায়গায় আরেকটা পড়লে কোনো সমস্যা নেই। যেকোনো ধরনের তাসবিহ যদি কেউ রুকুতে পড়ে তাহলে তার রুকু হয়ে যাবে। আর সিজদাহর মধ্যে যেকোনো ধরনের তাসবিহ পড়লেও সিজদাহ হয়ে যাবে।
যেমন সেজদায় সুবহানা রব্বিয়াল আজিম পড়া, রুকুতে সুবহানা রব্বিয়াল আলা বলা। এতে কোনো সমস্যা নেই। এর কারণে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে না। -কিতাবুস সালাত, প্রথম অধ্যায়।
তবে ইচ্ছাপূর্বকভাবে এমনটি করা ঠিক নয়। নামাজে অমনযোগীতার বিষয়টি গ্রহণযোগ্য নয় এবং সঠিক নয়। কারণ দুনিয়া ও আখেরাতের সফলতার একমাত্র উপায় হচ্ছে নামাজ। কিন্তু সতর্ক না হওয়ায় নামাজে মনযোগ থাকে না। যিনি সত্যিকার নামাজের প্রতি মনযোগী হবেন অথবা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নামাজ আদায় করবেন, তার এ ধরনের উল্টা-পাল্টা কাজ কোনোভাবেই হবে না।
রুকুর তাসবিহ
হাদিসে এসেছে, আল্লাহর রাসুল (সা.) রুকুতে গেলে এই দোয়া পড়তেন—
سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيْمِ.
উচ্চারণ : সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম। অর্থ : আমি আমার মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি। দোয়াটি তিনবার বা ততোধিক (পাঁচ/সাতবার) পড়া ভাল।
সেজদার তাসবিহ
সিজদায় আমরা সাধারণত একটি দোয়া পড়ে থাকি। সে আমাদের সবার কাছে পরিচিত এবং এতে আমরা অভ্যস্ত। দোয়াটি হলো-
আরবি :
سُبحانَ ربِّيَ الأعلَى
উচ্চারণ : সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা
অর্থ : আমার প্রতিপালক সুমহান ও পবিত্র। (সাহিহুল জামি, হাদিস : ৪৭৩৪)
রুকু ও সিজদার বিশেষ একটি তাসবিহ
রুকু ও সিজদায় বিশেষ একটি দোয়া পড়া ভালো। এটি আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর সুন্নতও বটে।
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে তিনি বলেন, 'নবী (সা.) রুকু ও সিজদায় এ দোয়া পড়তেন।' (বুখারি, হাদিস : ৭৯৪)
আরবি:
سبحانك اللهم ربنا وبحمدك، اللهم اغفرلي
উচ্চারণ : সুবহানাকাল্লাহুম্মা রব্বানা ওয়াবিহামদিকা, আল্লাহুম্মাগফিরলি।
অর্থ : হে আমাদের রব আল্লাহ, আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছি এবং আপনার প্রশংসা করছি। হে আল্লাহ, আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন।
আল্লাহ তাআলা আমাদের উত্তমভাবে ও যথাসময়ে নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন এবং আমাদের সর্বোত্তম বিনিময় দিন।