দুটি বিশাল লম্বা কান। সাদা-কালো রঙের মিশ্রণে মাথা। গলার ঠিক নিচে কালো গোলাকারের বৃত্ত। দেহের বাকি অংশটি সাদা। সেই সাদা অংশের বিভিন্ন জায়গায় মেহেদি দিয়ে সুন্দর রং করা হয়েছে। পা চারটির রং সাদা-কালোর মিশ্রণ। এটি একটি ছাগল। ছোটখাটো গরুর আকারের এই ছাগলের নাম ‘টাইগার’। ঈদুল আজহা উপলক্ষে নওগাঁ থেকে ঢাকার ভাটারা ১০০ ফিট পশুর হাটে ছাগলটি নিয়ে এসেছেন সুলতান মাহমুদ। ১০০ কেজি ওজনের ছাগলটির দাম হাঁকানো হচ্ছে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা।

বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ভাটারা ১০০ ফিট পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, উৎসুক জনতা ছাগলটি ঘিরে ধরেছেন। অনেকেই ছাগলটির পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন ও ভিডিও করছেন। আবার কেউ কেউ হাসি-ঠাট্টা করে বলছেন- ‘ছাগল মতিউর’র থেকেও এটি বড় ছাগল।

হাটে আসা উৎসুক জনতা মোবাইলে ছবি ও ভিডিও ধারণ এবং হাসি-ঠাট্টা করলেও ছাগলের মালিক সুলতাম মাহমুদের মুখে দেখা গেলো চিন্তার ভাঁজ। হাটে তিনি ছাগলটি নিয়ে এসেছেন এক সপ্তাহ হয়ে গেছে, কিন্তু এখনো বিক্রি করতে পারেননি।

ছাগলের নাম ‘টাইগার’, দাম হাঁকাচ্ছে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা

 

প্রথম দিকে কয়েকজন ছাগলটির দাম ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই দাম পছন্দ না হওয়ায় বিক্রি করেননি সুলতান মাহমুদ। তিনি আশা করেছিলেন ছাগলটি দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন। কিন্তু বুধ ও বৃহস্পতিবার (৪-৫ জুন) আর কেউ ছালগটির দাম বলেননি। এখন ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা পেলেই ছাগলটি বিক্রি করে দিতে চান তিনি।

সুলতান মাহমুদ বলেন, এটি আমার ঘরের ছাগল। তিন বছর ধরে লালন-পালন করেছি। ভালো দাম পাবো এই আশায় ঢাকায় নিয়ে এসেছি। গত বৃহস্পতিবার (২৯ মে) এই হাটে এসেছি। আমি ছাগলটির দাম চাচ্ছি ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। প্রথম দিকে বেশ কয়েকজন ১ লাখ ২০ টাকা দাম বলেছিলেন। ওই সময় ভেবেছিলাম দেড় লাখ টাকার ওপর বিক্রি করতে পারবো। তাই বিক্রি করিনি। কিন্তু দুদিন ধরে কেউ দাম বলছেন না। সবাই ঘুরে ঘুরে দেখে, দাম শুনে চলে যাচ্ছেন। কেউ কেউ ছবি তুলে নিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, আমাদের বাড়িতে একটি ধাড়ি ছাগল (মেয়ে ছাগল) ছিল। সেই ছাগলের বাচ্চা এটি। অনেক আদর-যত্নে এটি বাড়িতে লালন-পালন করেছি। শখ করে নাম দিয়েছি ‘টাইগার’। যাতে টাইগারের মতো দেখায় এজন্য বিভিন্ন অংশে মেহেদি দিয়েছি। ভুট্টা, অ্যাংকর ডাল, ভুসি খায় এই ছাগল। লাইভ ওজন মেপে দেখেছি প্রায় ১০০ কেজি হয়েছে।

 

ছাগলের নাম ‘টাইগার’, দাম হাঁকাচ্ছে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা

এক সপ্তাহেও বিক্রি করতে পারেননি এখন কী করবেন, কত দাম হলে বিক্রি করবেন? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, প্রথম দিকে বিক্রি না করে মনে হচ্ছে ভুলই করেছি। প্রথম দিকে অনেকেই ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দাম বলেছিলেন। তারা হয়তো ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা হলে নিতেন। কিন্তু আমি ভেবেছিলাম দেড় লাখ টাকার ওপর দাম পাবো। কিন্তু এখন তো সেই দামও পাচ্ছি না। এখন ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা হলে বিক্রি করবো।

ছাগলটি দেখে ছবি তোলা জুয়েল রানা নামের একজন বলেন, ছাগল হলেও এটি প্রায় গরুর সমান। এত বড় ছাগল আমি আগে কখনো দেখিনি। তাই শখ করে ছাগলটির সঙ্গে কিছু ছবি তুলে রাখলাম। বন্ধুদের গিয়ে দেখাবো।