বাংলাদেশের ১১৬ জন বরেণ্য আলেম ও এক হাজার মাদরাসার বিরুদ্ধে গণকমিশন কর্তৃক মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগের প্রতিবাদে নিউইয়র্কে সংবাদ সম্মেলন ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারক লিপি দেয়া হয়। স্বারকলিপি প্রদান শেষে জ্যাকসন হাইটসে নবান্ন পার্টি হলে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেন ইমাম ও ওলামা মাসায়েখগণ।
বাংলাদেশের ১১৬ জন বরেণ্য আলেম ও এক হাজার মাদরাসার বিরুদ্ধে গণকমিশন কর্তৃক মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগের প্রতিবাদে এবং দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিনষ্টকারী গণকমিশন ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবীতে প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করা হয়। ৩১ মে বিকালে ‘নিউইয়র্ক বাংলাদেশী ইমাম ও ওলামা মাশায়েখ’ ব্যনারে এই স্বারকলিপি দেয়া হয়। কনসাল জেনারেল ড: মনিরুল ইসলাম স্মারক গ্রহন করেন।
মুফতি ইসমাঈলের নেতৃত্ব স্বারক প্রদানের সময় উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা এমকে রহমান মাহমুদ, মাওলানা আবুল খায়ের, মাওলানা মঞ্জুরুল করীম। স্বারকলিপি শেষে জ্যাকসন হাইটসে নবান্ন পার্টি হলে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেন ইমাম ও ওলামা মাসায়েখগণ। প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া স্বারকলিপির বিস্তারিত লিখিতভাবে তুলে ধরেন। বাংলাদেশে হঠাৎ দৃষ্টিপটে আসা ‘মৌলবাদী ও সা¤প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গণকমিশন’ নামক একটি সংগঠন গত ১১ মে দেশের বরেণ্য ওলামা মাশায়েখ ও ওয়ায়েজিনগণকে ‘ধর্ম ব্যবসায়ী’ আখ্যা দিয়ে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে। ২২শত পৃষ্ঠার এই শ্বেতপত্রে ১১৬ জন আলেমের এবং এক হাজার মাদরাসার বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, সন্ত্রাস উসকে দেয়া, নারীদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করা ইত্যাদি নানান ধরনের কাল্পনিক অভিযোগ উত্থাপন করে দুর্নীতি দমন কমিশনে তদন্তের জন্য আবেদন করা হয়। ‘গণকমিশনে’র এসব পদক্ষেপ দেশে ও প্রবাসে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। এতে নিউইয়র্ক প্রবাসী ইমাম ও ওলামা মাশায়েখ চরম বিব্রত ও গভীরভাবে উদ্বিগড়ব। এই তালিকায় দেওবন্দি, আলিয়া, চরমোনাই, জৈনপুরী, বেরলবি, আহলে হাদিস প্রায় সব দল, মত ও অরাজনৈতিক আলেমদের নাম রাখা হয়েছে।
শ্বেতপত্রে আলেম-ওলামার বিরুদ্ধে ওয়াজ মাহফিলের মাধ্যমে মানুষকে উগ্রবাদের সবক দেয়া হয় বলে ভিত্তিহীন ও মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু আমরা দেখেছি এবং আপনিও ভালভাবেই অবগত যে, বাংলাদেশের আলেমগণ সন্ত্রাস ও উগ্রবাদের বিরুদ্ধে সর্বদা সরব। বিগত দিনে দেশে যখন উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল তখন প্রশাসনের পাশাপাশি এই আলেমদের উগ্রবাদ বিরোধী শক্ত অবস্থানের কারণেই সামাজিকভাবে উগ্রবাদকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে। সেই সময় এই ‘গণকমিশনে’র পেছনে থাকা ঘাতক দালাল কমিটির ব্যক্তিবর্গের শুধুমাত্র লম্ফ-জম্ফ ছাড়া কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি। বাংলাদেশে গুলশানের ‘হলি আর্টিজান’ সহ বিভিনড়ব সন্ত্রাসী কর্মকান্ডেও মাদরাসা ছাত্রদের সম্পৃক্ততা মেলেনি। তবে পুলিশি তদন্তে সেসব হামলায় দেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং ধনী পরিবারের সন্তানদের সংশ্লিষ্টতার তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
আমরা মনে করি, গণকমিশনের তালিকা সম্পূর্ণ একতরফা, মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ঔদ্ধত্যপূর্ণ এবং দেশের ইসলাম, ইসলামী শিক্ষা ও আলেমদের বিরুদ্ধে এক গভীর চকান্ত। তারা সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা নিয়ে তারা মাঠে নেমেছে। কারণ, শ্বেতপত্রে অভিযুক্ত কোনো আলেম বা মাদরাসার প্রিন্সিপালের বক্তব্য নেয়া হয়নি। তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়নি। গণকমিশনের অভিযোগ ও প্রকাশিত তালিকা যে ঠুনকো তার প্রমাণও পাওয়া গেছে। এক হাজার মাদরাসার তালিকায় এমন অনেক মাদরাসার নাম আছে বাস্তবে যেগুলোর কোনো অস্তিত্বই নেই।