নিউইয়র্ক: নিউইয়র্কে ব্যাপক আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রবাসের অন্যতম আঞ্চলিক সংগঠন গ্রেটার খুলনা সোসাইটি অব ইউএসএ ইনক’র বার্ষিক বনভোজন। গত ২০ আগস্ট রোববার ছায়া সুনিবিড় শ্যামল মনোরম পরিবেশে লংআইল্যান্ডের হেকশেয়ার স্টেট পার্কে অনুষ্ঠিত হয় গ্রেটার খুলনাবাসীর জমজমাট এ মিলন মেলা। চমৎকার আবহাওয়ায় ভিন্ন আমেজে জমে উঠেছিল এ বনভোজন। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বৃহত্তর খুলনা সোসাইটি অব অব ইউএসএ’র সদস্য ও তাদের বন্ধু-স্বজনরা দিনব্যাপি পার্কের খোলা মাঠে খেলাধুলা, বনভোজনীয় খাবার-দাবার, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপভোগ করেন।
এদিন সকাল ১১ টায় সংগঠনের সভাপতি ওয়াহিদ কাজী এলিন সংগঠনের কর্মকর্তা ও অতিথিদের সাথে নিয়ে বনভোজনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশী অর্গানাইজেশন্স অব নর্থ আমেরিকা-ফোবানা’র স্টিয়ারিং কমিটির চেযারম্যান গিয়াস আহমেদ। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা ডা. খন্দকার মাসুদুর রহমান। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সমাজ কল্যাণ সম্পাদক কাজী তোফায়েল ইসলাম ও সাবেক প্রচার সম্পাদক মফিজুল ইসলাম ভূঁইয়া রুমি, জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মীর নিজাম, কেনেডি, আজমসহ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
পার্কের ডিয়ার রেঞ্জ প্যাভিলিয়নে বনভোজনের উদ্বোধনের পর পরই অতিথিদের এপিটাইজার পরিবেশন করা হয়।
এরপর সংগঠনের ক্রীড়া ও আপ্যায়ন সম্পাদক মোহাম্মদ শাহিনুল হোসেন এবং বাংলাদেশ এ্যাথলেটিকস ফেডরেশনের সাবেক জাজ লায়ন আব্দুর রশিদের পরিচালনায় শুরু হয় খেলাধূলা। বিভিন্ন বয়সীরা এ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নেন।
দুপুর দু’টায় সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোহাম্মদ আনোয়ারুল হকের পরিচালনায় শুরু হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এসময় একের পর এক সঙ্গীত পরিবেশন করে দর্শকদের মাতিয়ে রাখেন প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী রায়ান তাজ, প্রমি তাজ, সেলিম ইব্রাহীম, ডা. শাহনাজ আলম লিপি, বাপ্পী সোম, মিতা, ঈদ ই আমিন, আনোয়ারুল হক এবং সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা ডা. খন্দকার মাসুদুর রহমান।
বেলা আড়াই টায় অতিথিদের দুপুরের খাবার পরিবেশন করা হয়। বনভোজন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক সরদার মুনির হোসেন ছিলেন আপ্যায়নের দায়িত্বে। অতিথিদের মিষ্টি ও পান-সুপারি দিয়েও আপ্যায়ন করা হয়। বৈকালিক নাস্তা ও চা পর্বও ছিল এ আয়োজনে।
মধ্যাহ্নভোজের পরে অনুষ্ঠিত হয় মহিলাদের আকর্ষণীয় বালিশ বদল খেলা। এ প্রতিযোগিতায় শতাধিক প্রতিযোগী অংশ নেন। এতে প্রথম হন রাসিদা বেগম, ২য় হন রাজিয়া সুলতানা এবং ৩য় স্থান অধিকার করেন হ্যাপি চৌধুরী। চমৎকার আবহাওয়ায় অনুষ্ঠিত দিনব্যাপি বনভোজনে বিভিন্ন খেলা-ধূলা ছাড়াও বিশেষ আর্কষন ছিল র‌্যাফেল ড্র। র‌্যাফল ড্র বিজয়ীরা আর্কষণীয় পুরস্কার জিতে নেন।
ডা. রিফাত আফরিন রিফির সৌজন্যে রাফেল ড্রতে ১ম পুরস্কার ছিল নিউইয়র্ক-ঢাকা রিটার্ণ এয়ার টিকিটি, ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুল খালেকের সৌজন্যে ২য় পুরস্কার ছিল ৬৫ ইঞ্চি এলইডি স্মার্ট টিভি, এটর্নী মঈন চৌধুরীর সৌজন্যে ৩য় পুরস্কার ছিল স্বর্ণালংকার, মহিউদ্দিন দেওয়ানের সৌজন্যে ৪র্থ পুরস্কার ছিল ৫৫ ইঞ্চি এলইডি স্মার্ট টিভি। রাফেল ড্রতে এছাড়াও ছিল আরও ২০টি আকর্ষণীয় পুরস্কার।
সংগঠনের উপদেষ্টা সৈয়দ এনায়েত আলীর পরিচালনায় সংগঠনের কর্মকর্তা ও অতিথিরা বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে বনভোজনের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ফোবানা’র স্টিয়ারিং কমিটির চেযারম্যান গিয়াস আহমেদ গ্রেটার খুলনা প্রবাসীদের এ সুন্দর মিলনমেলার প্রশংসা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা ডা. খন্দকার মাসুদুর রহমান প্রাণের আমেজে চমৎকার এমন আয়েজনের জন্য আয়োজক কমিটি ও কার্যকরী কমিটিকে ধন্যবাদ জানান।
সংগঠনের সভাপতি ওয়াহিদ কাজী এলিন বনভোজনে যোগদানের জন্য সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। এসময় সংগঠনের বিভিন্ন কর্মকান্ড তুলে ধরে তিনি বলেন, বৃহত্তর খুলনাবাসীর কল্যাণে সংগঠনটি নিবেদিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গ্রেটার খুলনা প্রবাসীরা সপরিবারে অংশ নিয়ে আজকের বনভোজনকে পরিণত করেন এক অন্য রকম মিলনমেলায়। পুরো দিন ভিন্ন এক উৎসবে মেতে ছিলেন সবাই।