কানাডার ক্যালগেরির বাংলাদেশ সেন্টারে স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় প্রদর্শিত হয়েছে ‘ও সোহাগী’ ও ‘নিরুদ্দেশ’ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্র প্রদর্শনের পূর্বে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ‘ও সোহাগী’ চলচ্চিত্রটি ইতিমধ্যেই দেশ- বিদেশের ১৪টি আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক প্রধান তথ্য অফিসার, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান নির্বাহী ও বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর এবং জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন।

আলোচনা সভায় ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন তার নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের পটভূমিতে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, ‘ও সোহাগী’ সিনেমাটি স্বপ্নবঞ্চিত নারী-শিশুর বৃত্তাকার জীবনের বিয়োগান্ত উপাখ্যান। বিশ্বময় সমাজের সর্বত্র আমাদেরই মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা রহস্যময় পুরুষের ঘৃণ্য লালসা ও ভয়াল পাশবিকতার থাবা ভালোবাসার অগণিত শিশু, কিশোরী ও নারীর স্বপ্ন-সম্ভাবনাকে গ্রাস করে অবলীলায়। আবহমানকালের ক্ষয়িষ্ণু বাস্তবতার সেই স্বপ্নভাঙা মানব হৃদয়ের বেদনা ও অপূর্ণ জীবনের অব্যক্ত বিলাপ এ কাহিনীতে রূপক ও বহুস্তর জাদুময় ব্যঞ্জনায় প্রকাশিত।

 

তিনি উপস্থিত সবাইকে ছবি দুটি দেখার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, সহপাঠী বন্ধুবর বায়াজিদ গালিব আমার একজন প্রিয় লেখক, আমার চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজনের জন্য তাকে অশেষ ধন্যবাদ। প্রবাসীদের বাংলা চলচ্চিত্র দেখার আগ্রহ ও উপস্থিতি তাকে মোহিত করেছে। তিনি বাংলাদেশ কানাডা অ্যাসোসিয়েশন অফ ক্যালগেরি সংগঠনকে ব্যবস্থাপনার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

বাংলাদেশ কানাডা অ্যাসোসিয়েশন অফ ক্যালগেরির সভাপতি কয়েস চৌধুরী বলেন, ড. জাহাঙ্গীরের মতো চলচ্চিত্র নির্মাতা আমাদের বর্তমান সমাজে খুবই প্রয়োজন। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য তার এই ধারা অব্যাহত থাকবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লাহ রফিক বলেন, ‘ও সোহাগী’ চলচ্চিত্রে বাংলাদেশের নারী সমাজের দুর্দশার সঠিক চিত্র ফুটে উঠেছে। প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম রিপন বলেন, ড. জাহাঙ্গীরের মতো একজন গুণী নির্মাতাকে আমাদের মাঝে পেয়ে আমরা আনন্দিত। তার চলচ্চিত্রে বর্তমান সমাজের সঠিক চিত্র ফুটে উঠেছে।

রম্যগল্পের লেখক বায়াজিদ গালিব বলেন, আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী জাহাঙ্গীর একজন সফল চলচ্চিত্র নির্মাতা। তার সান্নিধ্যে দীর্ঘদিন কাটিয়েছি, আমরা একসাথে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য হিসেবে কাজ করেছি। কিন্তু তার এমন বিরল প্রতিভার কথা জানা ছিল না। আজ তার নির্মিত চলচ্চিত্র দেখে আমি মুগ্ধ।

অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশ কানাডা অ্যাসোসিয়েশন অফ ক্যালগেরির পক্ষ থেকে ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা ও সঞ্চালনা করেন ড. জেবুন্নেসা চপলা। অনুষ্ঠানে ক্যালগেরির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং সুধীজনরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেনের নির্মিত ও নির্মাণাধীন স্বল্পদৈর্ঘ্য ও পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রামাণ্য চলচ্চিত্র সাতটি। প্রকাশিত গ্রন্থ ২২টি।