NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, শনিবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
আফ্রিকায় জিম্মি করে মুক্তিপণ, মানবপাচার চক্রের মূল হোতা আটক পোপ ফ্রান্সিসকে শ্রদ্ধা জানাতে সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় প্রধান উপদেষ্টা পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্য আজ, ড. ইউনূসসহ ভ্যাটিকানে বিশ্বনেতারা কিয়েভে হামলা, পুতিনকে ‘থামতে’ বললেন ট্রাম্প কাশ্মীরে হামলা ভারতের ‘সাজানো নাটক’, দাবি পাকিস্তানের কাশ্মীর হামলায় সরব হলেন সোনাক্ষী সিনহা ভ্যাটিকানের উদ্দেশ্যে কাতার ত্যাগ করলেন প্রধান উপদেষ্টা সৌদির কাছে ১০০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বেচবে যুক্তরাষ্ট্র, চুক্তি শিগগির হৃদয়কে দ্বিতীয়বার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তকে ‘হাস্যকর’ বললেন তামিম পুলিশের সামর্থ্য বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করবে ইতালি : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Logo
logo

দাস ব্যবসার কারণে পর্তুগালের উচিত ক্ষমা চাওয়া, বলছেন প্রেসিডেন্ট


খবর   প্রকাশিত:  ২২ মার্চ, ২০২৫, ০৩:৪৪ এএম

>
দাস ব্যবসার কারণে পর্তুগালের উচিত ক্ষমা চাওয়া, বলছেন প্রেসিডেন্ট

দাস বাণিজ্যে যুক্ত থাকার কারণে তার দেশের (পর্তুগালের) ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন পর্তুগিজ প্রেসিডেন্ট মার্সেলো রেবেলো ডি সুসা। একইসঙ্গে ট্রান্সআটলান্টিক দাস বাণিজ্যে পর্তুগাল যে ভূমিকা পালন করেছিল, তার দায়ও তার দেশের নেওয়া উচিত বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার (২৬ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রান্সআটলান্টিক দাস বাণিজ্যে নিজের ভূমিকার জন্য পর্তুগালের দায় নেওয়া ও ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে মঙ্গলবার মন্তব্য করেছেন পর্তুগালের প্রেসিডেন্ট মার্সেলো রেবেলো ডি সুসা। আর এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ ইউরোপীয় কোনও দেশের নেতা হিসেবে জাতীয়ভাবে ক্ষমা চাওয়ার পরামর্শ দিলেন তিনি।

রয়টার্স বলছে, ১৫ শতক থেকে ১৯ শতকের মধ্যে ৬০ লাখ আফ্রিকানকে অপহরণ করা হয়েছিল এবং পর্তুগিজ জাহাজে করেই আটলান্টিক মহাসাগরজুড়ে জোরপূর্বক তাদেরকে পরিবহন করা হয়েছিল। পরে অপহৃত এসব আফ্রিকানদের বেশিরভাগকে প্রাথমিকভাবে ব্রাজিলে দাস হিসেবে বিক্রি করা হয়।

কিন্তু এখন পর্যন্ত পর্তুগাল তার অতীত সম্পর্কে খুব কমই মন্তব্য করেছে এবং দক্ষিণ ইউরোপীয় এই দেশটির স্কুলেও দাসপ্রথার সঙ্গে পর্তুগালের ভূমিকা সম্পর্কে খুব কমই শেখানো হয়। বরং দেশের ঔপনিবেশিক যুগ বেশিরভাগ পর্তুগিজের কাছে প্রায়শই গর্বের উৎস হিসাবে বিবেচিত হয়ে থাকে।

মূলত ঔপনিবেশিক যুগে অ্যাঙ্গোলা, মোজাম্বিক, ব্রাজিল, কেপ ভার্দে, পূর্ব তিমুরসহ বহু দেশের পাশাপাশি ভারতের বেশ কিছু অংশও পর্তুগিজ শাসনের অধীনে ছিল।

১৯৭৪ সালের ‘কারনেশন’ বিপ্লব পর্তুগালে একনায়কত্বকে পতন ঘটিয়েছিল। আর সেই বিপ্লবের বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট রেবেলো ডি সুসা বলেন, (দাস বাণিজ্যে ভূমিকার কারণে) তার দেশের ক্ষমা চাওয়া উচিত। যদিও এ বিষয়ে তিনি কোনও সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেননি।

উন্নত ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য দেশের অতীত কর্মকাণ্ডের ‘দায়িত্ব গ্রহণ’ করা উচিত জানিয়ে প্রেসিডেন্ট রেবেলো বলেন, ‘ক্ষমা চাওয়া কখনও কখনও করা সবচেয়ে সহজ কাজ: আপনি ক্ষমা চান, এরপর ফিরে চলে যান এবং এতেই আপনার কাজটি হয়ে গেছে।’

আফ্রোলিংক অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্ল্যাক প্রফেশনালস ইন পর্তুগাল’র প্রতিষ্ঠাতা পাউলা কার্ডোসো বলেছেন, প্রেসিডেন্ট রেবেলো ডি সুসার এই ধরনের মন্তব্য ‘প্রতীকী’ হলেও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তারা দাস বাণিজ্যের এই বিষয়টিকে অন্তত সামনে নিয়ে এসেছেন।

কার্ডোসো রয়টার্সকে বলেছেন, ‘(কিন্তু) প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে আরও জোরালো কিছু শুনতে পেলে আমার ভালো লাগত। তবে কোনও প্রভাব ফেলতে চাইলে এই ধরনের মন্তব্যগুলো... পদক্ষেপ এবং প্রতিশ্রুতিসহ করতে হবে।’

এছাড়া পর্তুগালের অতীত কর্মকাণ্ডের কারণে সৃষ্ট বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ক্ষতিপূরণ এবং এ সংক্রান্ত সরকারি নীতিও অপরিহার্য বলে কার্ডোসো মন্তব্য করেন।

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম ইউরোপ সফরে পর্তুগালে গিয়েছিলেন। সেসময় পর্তুগিজ পার্লামেন্টে লুলা ভাষণ দেন এবং এরপর রেবেলো ডি সুসা দাস বাণিজ্য নিয়ে এই মন্তব্য করলেন। ১৮২২ সালে পর্তুগালের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে ব্রাজিল।

তিনি বলেন, ব্রাজিলের উপনিবেশেরও ইতিবাচক বেশ কয়েকটি দিক রয়েছে, যেমন পর্তুগিজ ভাষা ও সংস্কৃতির বিস্তার। তার ভাষায়, ‘(কিন্তু) খারাপ দিক হচ্ছে, আদিবাসীদের শোষণ... দাসত্ব, ব্রাজিল এবং ব্রাজিলিয়ানদের স্বার্থের বিসর্জন।’

ব্রাজিলের মানবাধিকার মন্ত্রী সিলভিও আলমেদা বলেছেন, রেবেলো ডি সুসা ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ একটি পদক্ষেপ নিয়েছেন।

এক বিবৃতিতে আলমেদা বলেছেন, ‘আমরা ব্রাজিলে দাসত্বের উত্তরাধিকারের প্রভাব ক্রমাগত ভোগ করছি। ৩০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে লাখ লাখ ক্রীতদাস মানুষের শোষণকে স্বীকৃতি দেওয়া একটি কম অসম সমাজের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ।’

এর আগে ইউরোপের শীর্ষ মানবাধিকার গোষ্ঠী বলেছিল, নিজেদের ঔপনিবেশিক অতীত ও ট্রান্সআটলান্টিক ক্রীতদাস বাণিজ্যে ভূমিকার জন্য এবং বর্তমানে বর্ণবাদ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করার জন্য পর্তুগালকে আরও কিছু করতে হবে।