খবর প্রকাশিত: ০৭ জুন, ২০২৪, ১২:২৫ এএম
আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: ইরানে পুলিশ হেফাজতে তরুণী মাশা আমিনির মৃত্যুর ৪০ দিন পূর্তিতে দেশটিতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের মাত্রা আবার বেড়েছে। বিক্ষোভ দমন করতে গিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এক কুর্দি যুবকের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। এসব ঘটনার সঙ্গে নতুন মাত্রা যোগ করেছে ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত আরেক নিষেধাজ্ঞা।
মাশা আমিনির মৃত্যুর ৪০ দিন পূর্তিতে তাঁর নিজের শহর সাকাজে গত বুধবার হাজার হাজার বিক্ষোভকারী জড়ো হয়।
শহরটিতে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হলেও তাতে দমেনি বিক্ষুব্ধরা। বিক্ষোভের মাত্রা কমার পরিবর্তে আরো বেড়ে যায়। সেদিন রাতের সহিংসতায় ইসমাইল মাওলুদি (৩৫) নামের এক বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়। ওই যুবকের মৃত্যুর জের গড়ায় পরদিনে।
বৃহস্পতিবার ইরানের পশ্চিমাঞ্চলীয় আজারবাইজান প্রদেশের মাহাবাদ শহরে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে কুর্দি সম্প্রদায়ের এক যুবক নিহত হন।
নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হেনগাও অর্গানাইজেশন ফর হিউম্যান রাইটস বলছে, নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ওই কুর্দি যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ওই যুবকের মাথায় গুলি করা হয়েছিল।
সংস্থাটির ভাষ্য, বিক্ষোভকারীরা মাহাবাদ শহরের একটি থানা ঘেরাও করলে শহরের একটি পাড়ায় গুলি চালান সরকারি বাহিনীর সদস্যরা।
ইরানের কঠোর পোশাকবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ২২ বছর বয়সী কুর্দি তরুণী মাশা আমিনি। গ্রেপ্তারের তিন দিন পর গত ১৬ সেপ্টেম্বর নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে তাঁর মৃত্যু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইরানজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
ইরানি কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা : ইরান সরকারের ১২ জনের বেশি কর্মকর্তার ওপর গত বুধবার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সাকেজ শহরের বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর পরিপ্রেক্ষিতে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
ইসলামি রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) গোয়েন্দাপ্রধান মুহাম্মদ কাজেমি এবং সিস্তান ও বেলুচিস্তান প্রদেশের গভর্নর হোসেইন মোদাররেস খিয়াবানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। আইআরজিসির আরো দুই কর্মকর্তাকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাঁদের মধ্যে একজন ইসফাহানের পুলিশপ্রধান। তালিকায় আছেন ইরানের সাতজন জাতীয় ও আঞ্চলিক কারা কর্মকর্তা এবং দুই গোয়েন্দা কর্মকর্তাও। মার্কিন অর্থ বিভাগ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আইআরজিসির গোয়েন্দাপ্রধান কাজেমির তত্ত্বাবধানে ইরানজুড়ে সহিংসভাবে বিক্ষোভ দমন করা হয়েছে। আইআরজিসি ও এর বাসিজ মিলিশিয়া বাহিনী বিক্ষোভকারীদের দমনে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেছে। ’
‘মৃত্যু ও মাজারে হামলার সম্পর্ক আছে’
এদিকে হিজাববিরোধী বিক্ষোভে এক যুবকের মৃত্যু এবং মাজারে হামলার ঘটনাকে এক সুতোয় গাঁথতে চাইছেন ইরানের অতিরক্ষণশীল প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। তাঁর দাবি, দেশের উন্নতিকে বাধাগ্রস্ত করাই শত্রুদের উদ্দেশ্য। আর দেশে চলমান ‘দাঙ্গা’ সন্ত্রাসী হামলার পথ প্রশস্ত করেছে।
সূত্র : এএফপি, বিবিসি