NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, শুক্রবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৫ | ১২ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
পুলিশের সামর্থ্য বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করবে ইতালি : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জনগণমুখী সংসদের জন্য ই-পার্লামেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ : আইন উপদেষ্টা প্রবাসীদের সহযোগিতায় দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে : ড. ইউনূস শান্তি আলোচনা বাধাগ্রস্ত, জেলেনস্কিকে দায়ী করছেন ট্রাম্প কাশ্মীরে হামলা মোদী সরকারের পাশে দাঁড়ালো বিরোধীদলগুলো বিদেশের ৪০ শহরে মুক্তি পাচ্ছে ‘জংলি’ কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক বাংলাদেশে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন চায় অস্ট্রেলিয়া: হাইকমিশনার একসঙ্গে ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র ভারতের কূটনৈতিক পদক্ষেপের কঠোর জবাব দেবে পাকিস্তান
Logo
logo

মোদীর সামনেই ভারতের ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের


খবর   প্রকাশিত:  ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৮:২৩ পিএম

মোদীর সামনেই ভারতের ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার ক্ষমতাগ্রহণের পর প্রথমবার তার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে ভারতীয় প্রধনমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউজে বৈঠকে বসেন দুই নেতা। ট্রাম্প জানিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদী যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভারতের শুল্কনীতি শিথিল করা, তাদের কাছ থেকে আরও তেল, গ্যাস এবং যুদ্ধবিমান কেনার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ভারতের এই পদক্ষেপে তাৎক্ষণিকভাবে দুই দেশের বাণিজ্য অচলাবস্থা সমাধান করবে না। কারণ হোয়াইট হাউসে দুই নেতার বৈঠকের কিছুক্ষণ আগেই ট্রাম্প ভারতের বাজারে মার্কিন ব্যবসায়ীদের জন্য প্রতিকূল পরিবেশ নিয়ে কঠোর মন্তব্য করেন এবং মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপকারী দেশগুলোর জন্য পাল্টা শুল্ক ব্যবস্থা চালুর পরিকল্পনা ঘোষণা দেন।

 

ভারতের শুল্কনীতির সমালোচনা

ট্রাম্প বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদী সম্প্রতি ভারতের ‘অত্যন্ত কঠোর ও অন্যায্য শুল্ক’ কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন, যা আমাদের ভারতীয় বাজারে প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করছিল। এটি সত্যিই একটি বড় সমস্যা।

হোয়াইট হাউজে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ভারত আমাদের ওপর যে শুল্ক বসাবে, আমরাও তাদের ওপর একই হারে শুল্ক আরোপ করবো।

 

এসময় মোদী বলেন, আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছ থেকে যা শিখেছি, তা হলো তিনি সবসময় জাতীয় স্বার্থকে সবার ওপরে রাখেন। আমিও ভারতের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেই।

এদিন দুই নেতা বাণিজ্য ইস্যু সমাধানের লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন। তাদের বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি জানিয়েছেন, আগামী সাত মাসের মধ্যে একটি চুক্তি হতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসনের এক কর্মকর্তাও বলেছেন, চলতি বছরেই একটি সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হতে পারে।

 

প্রতিরক্ষা ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা

বৈঠকে উভয় পক্ষের আলোচনা মূলত প্রতিরক্ষা ও জ্বালানি খাতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রীভূত ছিল। ট্রাম্প জানান, ভারত ‘বিলিয়ন ডলার’ মূল্যের মার্কিন প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম, বিশেষ করে যুদ্ধবিমান কিনতে আগ্রহী এবং যুক্তরাষ্ট্রকে প্রধান তেল ও গ্যাস সরবরাহকারী বানাতে চায়।

মোদী জানিয়েছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে কাজ করছে ভারত। এছাড়া, পারমাণবিক শক্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পিত সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। যদিও এ নিয়ে কিছু আইনি জটিলতা রয়েছে।

ট্রাম্প বলেছেন, আমরা ভারতকে এফ-৩৫ স্টিলথ ফাইটার সরবরাহের পথও খুলে দিচ্ছি। তবে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব মিশ্রি জানিয়েছেন, এটি এখনো প্রস্তাব মাত্র, কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয়নি।

 

ভারত-চীন প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা

বৈঠকে দুই নেতা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদারের বিষয়ে একমত হন, যা মূলত চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতার ইঙ্গিত বহন করে। এসময় যৌথভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও অন্যান্য প্রযুক্তির উৎপাদন নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

ট্রাম্প জানান, ভারত-চীন সীমান্ত সংঘাত নিরসনে তিনি সহযোগিতা করতে চান। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত আশঙ্কা করছে, ট্রাম্প চীনের সঙ্গে এমন কোনো চুক্তি করতে পারেন, যাতে ভারত উপেক্ষিত হয়।

রাশিয়া-ভারত সম্পর্ক ও মার্কিন উদ্বেগ

ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেও ভারত রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে এবং রুশ জ্বালানি আমদানি অব্যাহত রেখেছে। পশ্চিমা বিশ্ব যেখানে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, সেখানে ভারত নিজেকে নিরপেক্ষ রাখার চেষ্টা করেছে।

 

মোদী বলেন, বিশ্ব মনে করে যে ভারত নিরপেক্ষ অবস্থানে রয়েছে, কিন্তু এটি সত্য নয়। ভারত শান্তির পক্ষে রয়েছে।

অভিবাসন ও অন্যান্য ইস্যু

ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসন মোকাবিলায় ভারতের আরও সহায়তা চান। কারণ যুক্তরাষ্ট্রে বিপুলসংখ্যক অবৈধ ভারতীয় অভিবাসী রয়েছেন। তিনি আরও জানান, ২০০৮ সালে মুম্বাই হামলার এক অভিযুক্তের প্রত্যর্পণের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এদিন মোদী ইলন মাস্কের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন, যেখানে মাস্কের স্টারলিংক কোম্পানির ভারতীয় বাজারে প্রবেশের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে ভারত এখন চীন প্রতিরোধের কৌশলে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে দুই দেশের সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।

সূত্র: রয়টার্স