খবর প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর, ২০২৪, ০৮:২২ এএম
ঢাকা: রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে ব্রিটিশ সংসদ সদস্যদের বিশ্বব্যাপী অগ্রণী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ৫ বছর ধরে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১১ লাখ রোহিঙ্গার আশ্রয় ও সুরক্ষা দিয়ে আসছে। রোহিঙ্গা সংকটের একমাত্র সমাধান হচ্ছে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের স্বদেশ মিয়ানমারে নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তন।
আজ শুক্রবার লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্যদের সঙ্গে ‘বাংলাদেশ রাইজিং’ শীর্ষক ইন্টারেক্টিভ সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও ব্রিটিশ সংসদ সদস্যদের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা, বিশেষ করে সংসদীয় গণতন্ত্র ও সুশাসন শক্তিশালীকরণ, এজেন্ডা ২০৩০, জলবায়ু পরিবর্তন, নারীর ক্ষমতায়ন এবং রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানের ওপর জোর দেন স্পিকার।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশসহ জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশসমূহকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে ওয়েস্টমিনস্টারে সংসদ সদস্যদের আরও সোচ্চার হতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যয় এড়াতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে ক্ষতিকর কার্বন নিঃসরণ ও বৈশ্বিক উষ্ণতা দূরীকরণে জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে।
শোকের মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে স্পিকার বলেন, তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এবং কনজারভেটিভ ও লেবার উভয় দলের সংসদ সদস্যদের সঙ্গে ছিল বঙ্গবন্ধুর স্থায়ী ও অমূল্য বন্ধুত্ব, যা বাংলাদেশ এবং যুক্তরাজ্যের মধ্যে অত্যন্ত শক্তিশালী এবং বহুমুখী দ্বিপাক্ষিক কর্মকাণ্ডকে অনুপ্রাণিত করেছে।
‘বাংলাদেশ রাইজিং’ অনুষ্ঠানে স্পিকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী ও গতিশীল নেতৃত্বে গত এক দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতির অভাবনীয় অগ্রগতি নিয়ে ব্রিটিশ সংসদ সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য বন্ধুত্ব জোরদারে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত চার ব্রিটিশ-বাংলাদেশি সংসদ সদস্য এবং একজন হাউস অব লর্ডস সদস্যের অবদানের কথাও তুলে ধরেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম। ইন্টারেক্টিভ সংলাপে অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ অন বাংলাদেশের ভাইস চেয়ারম্যান লর্ড শেখ অব কর্নহিল, হাউজ অব লর্ডস কমিটি অন এসএমই এর সদস্য লর্ড ইভান্স অব ওয়াটফোর্ড, ছায়া মুখপাত্র (সমতা ও নারীবিষয়ক) ব্যারনেস থর্নটন, হাউজ অব লর্ডসে প্রথম ব্রিটিশ বাংলাদেশি পিয়ার ব্যারনেস মানজিলা পলা উদ্দীন, সিপিএ’র সেক্রেটারি জেনারেল স্টিফেন টুইগ, সাবেক পরিবহণ ছায়ামন্ত্রী স্যাম ট্যারি, ব্রিটিশ সরকারের ঊধ্র্বতন কর্মকর্তারা, সংসদ সচিবালয়ের যুগ্মসচিব এম এ কামাল বিল্লাহ অংশগ্রহণ করেন।
ব্রিটিশ সংসদ সদস্যরা এবং হাউস অব লর্ডসের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত এক দশকে বাংলাদেশের অর্জিত অসামান্য অর্থনৈতিক সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ সময় তারা বাংলাদেশকে নতুন এশিয়ান টাইগার হিসেবে স্বীকৃতি দেন। বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য ঐতিহাসিক কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সব ব্রিটিশ সংসদ সদস্য ও হাউস অব লর্ডসের সদস্যদের বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান স্পিকার।
অনুষ্ঠান শেষে স্পিকার লন্ডনের গ্ল্যাডস্টোন পার্কে লন্ডন বরো অব ব্রেন্টের সহযোগিতায় বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ‘বঙ্গবন্ধু সেন্টেনারি পিস গ্রোভ’ পরিদর্শন করেন। ঐতিহাসিক মুজিববর্ষের প্রাক্কালে এখানে শতাধিক চারা রোপণ করা হয়।