NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, শনিবার, মে ১৭, ২০২৫ | ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
অভ্যুত্থানের ৯ মাস পরও বড় পরিবর্তন সহজ হচ্ছে না এনসিপির যুব সংগঠন ‘জাতীয় যুবশক্তি’ স্বাগত জানাতে মেলোনিকে দেখে হাঁটু গেড়ে বসলেন আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী দুই ঘণ্টাতেই শেষ রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনা, মেলেনি সমাধান নতুন অধিনায়ক নিয়ে অন্যরকম শুরুর অপেক্ষায় বাংলাদেশ ট্রাম্প আলফা মেল হলে মোদি ওর বাবা : কঙ্গনা মায়ানমারে নিযুক্ত প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা আফতাব প্রত্যাহার ঈদে সব পশুর হাটে মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক বসবে : প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা মাউন্ট এভারেস্টে দুই পর্বতারোহীর মৃত্যু, একজন ভারতীয় এবার আমিরাতের সঙ্গে ২০ হাজার কোটি ডলারের চুক্তি করলেন ট্রাম্প
Logo
logo

এজলাস থেকে লোহার খাঁচা অপসারণে আইনি নোটিশ


খবর   প্রকাশিত:  ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০১:৫৭ এএম

এজলাস থেকে লোহার খাঁচা অপসারণে আইনি নোটিশ

ঢাকা: আদালত কক্ষে (এজলাস) অভিযুক্তকে লোহার খাঁচায় বন্দি রাখা সংবিধান, আইন ও আন্তর্জাতিক নীতি-ঘোষণা পরিপন্থী আখ্যা দিয়ে তা অপসারণ করতে সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবীর পক্ষে রবিবার আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির রেজিস্ট্রি ডাকে এ নোটিশ পাঠান। আইনসচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের দপ্তরে এ নোটিশ পাঠানো হয়।

আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নোটিশ পাওয়ার চার সপ্তাহের মধ্যে আদালত কক্ষ (এজলাস) থেকে লোহার খাঁচা অপসারণ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।

না করলে সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুসারে হাইকোর্টে রিট আবেদন করে আইনি প্রতিকার চাওয়া হবে।’

 

আদালত কক্ষে লোহার খাঁচা ব্যবহারের ইতিহাসের পাশাপাশি সংবিধান, আইন ও আন্তর্জাতিক নীতি-ঘোষণা, শর্ত ও চুক্তি তুলে ধরা হয়েছে নোটিশে। 

মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র (ইউডিএইচআর), ১৯৪৮-এর ৫ অনুচ্ছেদ তুলে ধরে বলা হয়েছে, প্রকাশ্য আদালতে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে লোহার খাঁচায় বন্দি রাখার কারণে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নিরপেক্ষ বিচার, প্রকাশ্য আদালতে শুনানি লাভের অধিকার এবং মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।

নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি (আইসিসিপিআর), ১৯৬৬-এর কয়েকটি অনুচ্ছেদ তুলে ধরে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে প্রকাশ্য আদালতে লোহার খাঁচায় বন্দি করে তার প্রতি অমানবিক ও অবমাননাকর আচরণ করা হচ্ছে, যা স্পষ্টভাবে এই চুক্তির ৭ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন।

আর চুক্তির ১০(২) অনুচ্ছেদ তুলে ধরে বলা হয়েছে, ব্যতিক্রম ছাড়া অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দোষী ব্যক্তিদের থেকে আলাদা রাখতে হবে এবং তাদের মর্যাদা অনুযায়ী আলাদা ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু আদালত চলার সময় অভিযুক্ত ও দোষী ব্যক্তিকে একই সঙ্গে লোহার খাঁচায় বন্দি করে রাখা এই অনুচ্ছেদের পরিপন্থী।

 

আদালতে লোহার খাঁচা ব্যবহারের ইতিহাস টেনে নোটিশে বলা হয়েছে, আসামি হাজিরার জন্য আদালতে কাঠগড়ার প্রচলন ব্রিটিশ আমলেই শুরু হয়। তবে দুর্ধর্ষ আসামি, ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতাসংগ্রামীদেরও ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে আদালতে হাজির করানো হতো।

বিচার শেষে দোষীকে লোহার খাঁচায় বন্দি রাখার ইতিহাস থাকলেও বিচার চলার সময় আদালতে লোহার খাঁচায় বন্দি রাখার কোনো ইতিহাস পাওয়া যায় না।

 

ভারতে সাধারণ আদালত কক্ষে লোহার খাঁচার ব্যবহার নেই উল্লেখ করে নোটিশে বলা হয়েছে, দেশের কোনো আইনে কাঠগড়ায় লোহার খাঁচার ব্যবহার সংক্রান্ত কোনো বিধান নেই। তবে কারা আইন, ১৮৯৪-এর ৫৬ ধারায় জেলে বন্দি কয়েদিকে সরকারের অনুমোদনক্রমে লৌহ-শৃঙ্খলে আটক করে রাখার বিধান আছে।

নোটিশে বলা হয়েছে, বিচারে দোষী প্রমাণিত হওয়ার আগেই অভিযুক্তকে প্রকাশ্য আদালতে লোহার খাঁচায় বন্দি করে অভিযুক্ত ব্যক্তি যে নির্দোষ হতে পারেন, সে ধারণা বা নীতিকে লঙ্ঘন করা হচ্ছে। যা দেশের সংবিধান, প্রচলিত আইন ও আন্তর্জাতিক বিধি-বিধান, চুক্তি, ঘোষণা এবং অভিযুক্তের নির্দোষ অনুমান নীতির পরিপন্থী।

তাই মানুষের স্বাভাবিক মর্যাদা সমুন্নত রাখতে ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে আদালতে লোহার খাঁচার অপসারণ একান্ত প্রয়োজন।