NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, শনিবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
Logo
logo

জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার গৃহিত পদক্ষেপের প্রশংসায় কংগ্রেসম্যান অ্যান্ড্রু


খবর   প্রকাশিত:  ২১ এপ্রিল, ২০২৫, ০১:৫৬ এএম

জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার গৃহিত পদক্ষেপের প্রশংসায় কংগ্রেসম্যান অ্যান্ড্রু

নিউইয়র্ক প্রতিনিধি : মার্কিন কংগ্রেসে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিষয়ক কমিটির অধীনস্থ সাইবার সিকিউরিটি এবং অবকাঠামোগত সুরক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান কংগ্রেসম্যান (রিপাবলিকান) এ্যান্ড্রু গারবারিনো বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা এবং সামনের জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার গৃহিত পদক্ষেপের প্রশংসা করে বললেন, অনেক দেশেরই উচিত বাংলাদেশকে অনুসরণ করা। নিউইয়র্ক কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট-২ থেকে নির্বাচিত অ্যান্ড্রু গারবারিনো এ সংবাদদাতার প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ সম্পর্কে অনেক শুনেছি। গত ১৪ বছর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে সফলতা দেখিয়েছে সেটিও জেনেছি। আমি আরো জানি যে, সামনের জানুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশে নির্বাচন হবে, সেটি অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের স্বার্থে তিনি (শেখ হাসিনা) সমস্ত দায়িত্ব স্বাধীনভাবে কর্মরত নির্বাচন কমিশনের কাছে অর্পণ করবেন। এবং আন্তর্জাতিক বিশ্বকে অবহিত করবেন যে ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশনে বাংলাদেশ কার্পণ্য করে না। আমি আশা করছি, বাংলাদেশ অর্থনীতির ক্ষেত্রে অসাধারণ অগ্রগতিসাধন করেছে, বিশেষ করে জ্বালানী সেক্টর এবং অবকাঠামো খাতে-তা অব্যাহত থাকবে। বিশেষ করে সন্ত্রাস নির্মূলে, সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে চলমান জিরো টলারেন্স অব্যাহত থাকা জরুরী।’ কংগ্রেসম্যান উল্লেখ করেন, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের পাশাপাশি করোনাকালেও মানুষের জীবন-মানের উন্নয়নে বাংলাদেশ যে অসাধারণ ভ’মিকা পালন করেছে তা অন্যান্য দেশের এগিয়ে চলার জন্যে অনুকরণীয় হতে পারে। গত ১৪ বছরের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতেই বর্তমান প্রশাসনকে (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন) আবারো সুযোগ দেয়া উচিত বলে কংগ্রেসম্যান আশা পোষণ করেন।

 

কংগ্রেসম্যান এ্যান্ড্রু কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাসে যোগদান করেছেন ১৭ আগস্ট। এজন্যে নিউইয়র্কের প্রবাসীরা ১৮ আগস্ট শুক্রবার সন্ধ্যায় লং আইল্যান্ডে তাঁকে নিয়ে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে উপস্থিত হলে কংগ্রেসম্যানকে স্বাগত জানান বিশিষ্টজনেরা। হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে এ আয়োজনের সামগ্রিক সমন্বয়ে ছিলেন মূলধারায় প্রবাসীদের পথিকৃত মোর্শেদ আলম, বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের মিয়া এবং নিউ আমেরিকান ডেমক্র্যাটিক ক্লাবের নেতা আহনাফ আলম। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের যুব বিষয়ক সম্পাদক এবং জেবিবিএর সভাপতি ড. মাহাবুবুর রহমান টুকু, জেবিবিএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুলতান আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ এবং কুইন্স থেকে নির্বাচিত জুডিশিয়াল ডেলিগেট নূসরাত আলম উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় বাংলাদেশের সাফল্য উপস্থাপন করেন। বাংলাদেশের জন্যে মার্কিন কংগ্রেসে সরব থাকার অভিপ্রায়ে কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাসে যোগদানের জন্যে অ্যান্ড্রু গারবারিনোকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তারা।

কংগ্রেসম্যান এ সময় আরো বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সবচেয়ে বেশী ট্রুপস সরবরাহ করছে বাংলাদেশ। বিশ্বশান্তির ক্ষেত্রে এ এক অনন্য উদাহরন। শুধু তাই নয়, শান্তির পরিক্রমায় দুই শতাধিক বাংলাদেশী সৈন্য তাদের জীবন উৎসর্গ করতেও দ্বিধা করেননি। একইভাবে নিজেরা নানা সমস্যায় জর্জরিত থাকা সত্বেও ১৩ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ মানবিকতার ক্ষেত্রের অবিস্মরণীয় এক ভ’মিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।

 

বঙ্গবন্ধুর ঘাতক হিসেবে দন্ডিত রাশেদ চৌধুরীকে আশ্রয় দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র মানবিকতার ক্ষেত্রে প্রশ্নের মুখে পড়েছে, এহেন অবস্থায় ডনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাবস্থায় জাতিসংঘে সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে অনুরোধ জানিয়েছেন ঐ ঘাতককে বাংলাদেশে ফিরিয়ে দিতে। তারর পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প তার এটর্নী জেনারেল বীল বারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন ঘাতকের নাগরিকত্ব বাতিলের প্রক্রিয়া অবলম্বনের জন্যে। সেটি শুরুও হয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের বিদায়ের পর প্রেসিডেন্ট বাইডেন সেটি ফলো করেননি বলে এ সংবাদদাতা উল্লেখ করলে কংগ্রেসম্যান বলেন, বিষয়টি নিয়ে ক্যাপিটল হিলে ফিরে তিনি সহকর্মীগণের সাথে কথা বলবেন। কংগ্রেসের সদস্য হিসেবে তারা শুধু পর্যবেক্ষণ/মন্তব্য উপস্থাপন ও সুপারিশ সাবমিট করে থাকেন। তবে অধিকাংশই ফলো করতে হয় বিভিন্ন দেশে কর্মরত রাষ্ট্রদূত এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রিপোর্টের ভিত্তিতে।

শুভেচ্ছা বিনিময় পর্বের শুরুতে বাংলাদেশ নিয়ে এই আমেরিকায় বিভ্রান্তিকর প্রচারণা সম্পর্কে আলোকপাত করেন প্রবীন সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ। তিনি বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধজনিত পরিস্থিতির ভিকটিম সারাবিশ্বের মত আমরা আমেরিকানরাও, বাংলাদেশ তার বাইরে নয়। এতদসত্বেও শেখ হাসিনার বিচক্ষণতাপূর্ণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রেই অসাধারণ অগ্রগতি সাধন করেছে। ১৩ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা আশ্রয় দিয়ে মানবিকতার ক্ষেত্রে এক অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কম্যুনিটি অ্যাক্টিভিস্ট অসীম সাহা অভিযোগ করেন, কংগ্রেসে ‘টম ল্যান্টোস মানবাধিকার কমিশন’র শুনানী হলো ১৫ আগস্ট। দিনটি ছিল বাঙালি জাতির মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে নৃশংসভাবে হত্যার দিন। অথচ সে ব্যাপারে নূণ্যতম কোন মন্তব্য/মতামত উপস্থাপন না করে একতরফাভাবে বাংলাদেশে মানবাধিকার লংঘিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এভাবেই কংগ্রেসনাল কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে মহলবিশেষের ইন্ধনে।

সময়ের প্রয়োজনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এ আয়োজনে বিশিষ্টজনদের মধ্যে আরো ছিলেন সালেহা আলম, হোসনেআরা, কাজী মনির, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ’৭১ এর যুগ্ম সম্পাদক আলিম খান আকাশ, নির্বাহী সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদ, আওয়ামী লীগ নেতা জেড এ জয়, যুবলীগ নেতা জাহিদ খন্দকার। কংগ্রেসম্যান অ্যান্ড্রু কথা বলার সময়েই কংগ্রেসে পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির র‌্য্যাকিং মেম্বার কংগ্রেসম্যান গ্রেগরী মিক্স ফোন করেন অ্যান্ড্রুকে। বাংলাদেশের ব্যাপারে প্রবাসীদের অনুভ’তির আলোকে সম্মিলিতভাবে কিছু করার ওপর জোর দিলে কংগ্রেসম্যান অ্যান্ড্রু তাকে জানান যে, ওয়াশিংটন ডিসিতে ফিরে অন্যদের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে কিছু একটা করতে হবে।