NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, শুক্রবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৫ | ১২ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
পুলিশের সামর্থ্য বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করবে ইতালি : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জনগণমুখী সংসদের জন্য ই-পার্লামেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ : আইন উপদেষ্টা প্রবাসীদের সহযোগিতায় দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে : ড. ইউনূস শান্তি আলোচনা বাধাগ্রস্ত, জেলেনস্কিকে দায়ী করছেন ট্রাম্প কাশ্মীরে হামলা মোদী সরকারের পাশে দাঁড়ালো বিরোধীদলগুলো বিদেশের ৪০ শহরে মুক্তি পাচ্ছে ‘জংলি’ কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক বাংলাদেশে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন চায় অস্ট্রেলিয়া: হাইকমিশনার একসঙ্গে ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র ভারতের কূটনৈতিক পদক্ষেপের কঠোর জবাব দেবে পাকিস্তান
Logo
logo
শোটাইমের আলমগীর খান আলম উপস্থাপন করলেন

সুরের মূর্ছনায় নিউইয়র্ক মাতিয়ে গেলেন নগর বাউল জেমস


খবর   প্রকাশিত:  ২১ এপ্রিল, ২০২৫, ০৭:৪৬ এএম

সুরের মূর্ছনায় নিউইয়র্ক মাতিয়ে গেলেন নগর বাউল জেমস

আশরাফুল হাবিব মিহির 

সুরের মূর্ছনায় নিউইয়র্ক মাতিয়ে গেলেন নগর বাউল জেমস শোটাইম মিউজিকের আয়োজনে গত ৪ জুন রবিবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের জ্যামাইকার অ্যামাজুরা হলে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো বাংলাদেশের রকস্টার ও নগর বাউল খ্যাত জেমসের কনসার্ট।সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় নিউ ইর্য়ক সহ আশেপাশের স্ট্রেট থেকে এসেছিলো জেমসের কনসার্ট উপভোগ করার জন্য। বাইরে দীর্ঘ লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে, দর্শকরা সুশৃঙ্খলভাবে কনসার্ট হলে প্রবেশে করে। অনেকেই অনুষ্ঠান হল থেকে টিকেট সংগ্রহ করেছেন। অনুষ্ঠান হলের ভীড় সামলাতে নেওয়া হয়ে ছিলো বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা।অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদের শুভেচ্ছা বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সুনাম বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে কাজ করার জন্য তিনি যুব সমাজের প্রতি আহবান জানান। পাশাপাশি তিনি নগর বাউল খ্যাত জেমসকে মঞ্চে স্বাগত জানান।  বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনের তুমুল জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা জেমস যখন স্টেজে উঠলেন, সবাই তখন গুরু, গুরু বলে চিৎকার করে পুরো হল প্রকম্পিত করে তোলে। কানায় কানায় পরিপূর্ণ হলে, জেমসের গানের সুরের যাদুতে মেতে উঠল নিউ ইয়র্কের দর্শকরা। গুরুকে সামনাসামনি এক নজর দেখতে আর সুর-মূর্ছনায় আচ্ছন্ন হতে যুগান্তকারী কনসার্টে আসেন শামিল হন তার ভক্তরা। জেমস পরপর প্রায় ১৩টি গান পরিবেশন করেন।'কবিতা তুমি স্বপ্নচারিণী' গানটি দিয়ে জেমস তার কনর্সাট শুরু করলেন। এরপর একে একে তার জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে - দিওয়ানা মাস্তানা, গুরু ঘর বানাইলা কী দিয়া, 'মা', কানামাছি ভোঁ ভোঁ, দুষ্ট ছেলের দল, ও বিজলী চলে যেও না, বাংলার লাঠিয়াল, আসবার কালে আসলাম একা, মীরা বাঈ, তারায় তারায়, পাগলা হাওয়া ও ভিগি ভিগি -পরিবেশন করতে থাকেন।  গুরুর সাথে কন্ঠ মিলায়ে সুর ধরে দর্শকরা প্রতিটি গাইতে থাকেন। কনসার্টের আগত দর্শকরা হাত তালি দিয়ে, বাঁধ ভাঙ্গা আনন্দ-উচ্ছ্বাসে, মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে, নেচে গেয়ে অনেকদিন পর স্মরণকালের সেরা কনসার্ট উপভোগ করলো।অনুষ্ঠানে আগত কণ্ঠশিল্পী দিনাত জাহান মুন্নি বলেন -কিছুদিন আগেও আমি স্বপ্ন দেখতাম অন্য দেশের শিল্পীদের মতো আমাদের দেশের কোনো শিল্পী যদি এভাবে সবাইকে অবাক করে দিতে পারত! গতকাল ছিলো সেই দিন। আমি গর্বিত আমাদের একজন জেমস আছে, আমি গর্বিত আমাদের জেমসকে ভালোবেসে মানুষের স্রোতে নিউইয়র্কের একটি এলাকা উত্তাল হয়ে উঠেছিল। কাল এই আনন্দে চোখে পানিও চলে এসেছে। একেই বলে আমার দেশ, আমার গান, আমাদের গর্ব আর জেমস। জেমস ভাই আপনি আমাদের অহংকার।  সাংবাদিক আকবর হায়দার কিরণ বলেন - যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে শোটাইম মিউজিক আয়োজিত জেমসের লাইভ ইন কনসার্ট যেন ঐতিহাসিক। আলমগীর খান আলম ম্যাজিশিয়ানদের মতো যাদুর খেলা দেখালেন, এতো বিশাল ক্রাউড প্রবাসে এর আগে বাংলাদেশী কোনো অনুষ্ঠানে দেখিনি। আগত দর্শকদের অনেকেই বলেন বলেন - নিউইয়র্কের তরুন প্রজন্মর এই ধরনের কনসার্টের ক্ষুধা ছিলো অনেকদিনের, আজ সেই ক্ষুধা মিটলো, বার বার মনে হচ্ছিলো বাংলাদেশেই কনসার্ট আছি। বাংলাদেশে মনে হয় এমন একজনই শিল্পী আছেন যিনি ছোট থেকে বড়, সকলশ্রেণীর দর্শকদের উন্মাদনায় ভাসাতে পারেন। তারা আরো বলেন -টিকেট কেটে নিজের সীটি বসতে না পারা নিয়ে আক্ষেপ নেই, উপভোগ করেছি কনসার্ট। তবে নির্দিষ্ট সীটে বসানোর জন্য বাড়তি লোকজন নিয়োগ করলে আরো ভালো হতো, ভবিষ্যতে আয়োজকরা এই বিষয়টি নজরে আনবেন।সাংস্কৃতি কর্মী আয়েশা তাহমিনা অধরা বলেন, ছোটকাল থেকেই জেমসের গান শুনে বড় হয়েছি, এর আগেও নগর বাউলের অনেক কনসার্টে গিয়েছি। এবারে যে দর্শকদের এত বেশী ভীড় হবে, সেটা আমার অনুমানের বাইরে ছিল।

পরিবারের সবাইকে নিয়ে অনেকদিন পর জমজমাট কনসার্ট উপভোগ করলাম। এজন্য তিনি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান।  সংগীত শিল্পী বিউটি দাশ বলেন, প্রথম মনে হলো আমি বাংলাদেশেই নগর বাউল এর কনসার্ট দেখছি, এই অনুভুতি কোনো মিউজিক লাভার ছাড়া কেউ বুঝবে না। তার চাইতে ভীষন আনন্দের ছিল যাদের সাথে আমি কনসার্ট এ চিৎকার করেছি, গলা মিলিয়ে গেয়েছি, তারা অনেকেই ছিল প্রায় ২০ বছরের নিচে বয়স, নতুন প্রজন্ম জানে বাংলা গান কি বাংলাদেশের ব্যান্ড কি। নগর বাউল ১৫ বছর বয়সী থেকে ৬০ বছর বয়সী সবাইকে মাতিয়ে, নাচিয়ে গেলেন, তিনিই তো অনন্য -জেমস। এটি বিদেশের মাটিতে আমার দেখা সেরা কনসার্ট।  শোটাইম মিউজিকের কর্ণধার আলমগীর খান আলম বলেন, আমেরিকার বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে দর্শকরা এসেছেন কনসার্ট উপভোগ করার জন্য। তাদের স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতায় এই ধরনের আয়োজন সম্ভব হয়েছে। আগামী ২৫ জুন আমাজুরা হলে ঢালিউড ফিল্ম অ্যান্ড মিউজিক অ্যাওয়ার্ড ২০২৩ অনুষ্ঠিত হবে, সেখানে জেমসের আবারও গান গাওয়ার কথা রয়েছে। এবার যারা টিকিট কিনতে পারেননি, তারা ২৫ জুনের অনুষ্ঠানের টিকিট আগে থেকে কিনে রাখবেন। এই বিশাল আয়োজনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল স্পন্সর, কলাকুশলী ও মিডিয়া পার্টনারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।জেমসের সঙ্গে লাইন আপে কি-বোর্ডে আব্দুল কাইয়ুম, গিটারে সুলতান রায়হান খান রানা, বেজ গিটারে তালুকদার সাব্বির এবং ড্রামসে ছিলেন আহসান এলাহী ফান্টি। অনুষ্ঠানের সাউন্ড সিস্টেমের দায়িত্বে ছিলেন, সাউন্ড গিয়ারের সায়েম এবং উপস্থাপনায় ছিলেন আশরাফুল হাসান বুলবুল।

 উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক সিটির কাউন্সিলারের বিশেষ সম্মাননাটি অনুষ্ঠানের অতিথিবৃন্দরা সবাই মিলে নগর বাউল জেমসের হাতে তুলে দেন।টেকনিক্যাল কারনে গানের ট্রেক না চলায় শিল্পী শেফালী সারগম গান পরিবেশন করতে পারেন নাই। তাছাড়া কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই এতো সুন্দর আয়োজন করার জন্য আয়োজকদের সাধুবাদ জানাই। এধরনের অনুষ্ঠানের জন্য নিউ ইয়র্কের সংগীতপ্রেমীরা দর্শকরা সবসময় মুখিয়ে থাকেন। ভবিষ্যতে নতুন কোনো প্রোগ্রাম নিয়ে শোটাইম মিউজিক হাজির হবে, সে প্রত্যাশায়ই থাকলাম।  ছবিগুলো তুলেছেন নিহার সিদ্দিকী