সিরিয়ার ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতায় অন্তত এক হাজার ৩৮৩ বেসামরিক নিহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই আলাউইত সম্প্রদায়ের। এক পর্যবেক্ষক সংস্থা বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, এই বেসামরিকরা ‘নিরাপত্তা বাহিনী ও তাদের মিত্র গোষ্ঠীগুলোর হাতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার’ ফলে নিহত হয়েছেন। গত সপ্তাহে এই সহিংসতা উপকূলীয় অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে, যা আলাউইত সংখ্যালঘুদের মূল ঘাঁটি এবং যেখানে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের জন্মস্থান।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থাটি আরো জানায়, সহিংসতা কিছুটা স্তিমিত হলেও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। কারণ এখনো নতুন নতুন মরদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে, যার অনেকগুলো খামার কিংবা বাড়ির ভেতর পাওয়া যাচ্ছে। সর্বশেষ হতাহতের ঘটনা লাতাকিয়া ও তারতুস উপকূলীয় প্রদেশ এবং পার্শ্ববর্তী কেন্দ্রীয় হামা প্রদেশে রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানায় সংস্থাটি।
সংস্থাটি নিরাপত্তা বাহিনী ও তাদের মিত্রদের বিরুদ্ধে ‘মাঠ পর্যায়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি ও ঘরবাড়ি পোড়ানোর’ অভিযোগ এনেছে, যা ‘কোনো আইনি বাধা ছাড়াই’ সংঘটিত হয়েছে।
এদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর জানিয়েছে, তারা ‘সংক্ষিপ্ত বিচারপ্রক্রিয়ায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের’ ঘটনা নথিভুক্ত করেছে, যা ‘ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ভিত্তিতে সংঘটিত বলে মনে হচ্ছে’।
আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করা সুন্নি ইসলামপন্থী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্ব দেওয়া সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমাদ আল-শারা ‘বেসামরিক রক্তপাতের জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার’ অঙ্গীকার করেছেন এবং এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। এই কমিটির মুখপাত্র ইয়াসের আল-ফারহান বলেছেন, সিরিয়া ‘অবৈধ প্রতিশোধের ঘটনা প্রতিরোধ ও দায়মুক্তি নিশ্চিত না করার’ জন্য বদ্ধপরিকর।
এ ছাড়া সিরিয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা সোমবার থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত সাতজনকে ‘বেসামরিকদের বিরুদ্ধে অপরাধ’ সংঘটনের সন্দেহে গ্রেপ্তার করেছে।
এইচটিএস আগে আল-কায়েদার সিরীয় শাখার অংশ ছিল।
সূত্র : এএফপি