সিরিয়ার বিদ্রোহী বাহিনী উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় বড় ধরনের আক্রমণ শুরু করেছে। এ বছর প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বাহিনীর কাছ থেকে কিছু এলাকা দখলও করে নিয়েছে। ইসলামপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) এবং সহযোগী দলগুলো জানিয়েছে, তারা গত বুধবার থেকে আলেপ্পো এবং ইদলিব প্রদেশের বেশ কয়েকটি শহর ও গ্রামের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার (২৭ নভেম্বর) থেকে সিরিয়ার আলেপ্পো ও ইদলিব প্রদেশের বেশ কয়েকটি শহর ও গ্রামে ওই লড়াই শুরু হয় বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সিরিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের বাহিনী ‘সন্ত্রাসবাদীদের’ বড় আকারের আক্রমণের মোকাবেলা করছে এবং তারা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
২০১১ সালে শান্তিপূর্ণ গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভে সরকার সহিংসভাবে দমন করার পর শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে অর্ধমিলিয়নেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
ছিটমহলটি বেশির ভাগই এইচটিএস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, তবে সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (এসএনএ) এবং তুর্কি বাহিনীর ব্যানারে পরিচালিত তুর্কি সমর্থিত বিদ্রোহী দলগুলোও সেখানে অবস্থান করছে।
২০২০ সালে তুরস্ক এবং রাশিয়া (আসাদের কট্টর মিত্র) ইদলিব পুনরুদ্ধারে সরকারের ওপর চাপ থামাতে একটি যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা করেছিল।
গত মাসেই সিরিয়ার জন্য জাতিসংঘের বিশেষ দূত সতর্ক করে দিয়েছিলেন, গাজা এবং লেবাননের যুদ্ধগুলো ‘উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় একটি বিপজ্জনক প্রভাব ফেলবে।’
এইচটিএস সরকার-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় একটি উল্লেখযোগ্য অভিযান চালিয়েছে। রাশিয়াও কয়েক মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো বিমান হামলা পুনরায় শুরু করেছে। এ ছাড়া সরকারপন্থী বাহিনী ড্রোন হামলা এবং গোলাবর্ষণ বাড়িয়েছে।
ইউকে-ভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) অনুসারে, আক্রমণের প্রথম দিনের শেষে বিদ্রোহীরা পশ্চিম আলেপ্পোর গ্রামাঞ্চলে অগ্রসর হয়েছিল। তারা জানিয়েছে, সিরিয়ান সেনাবাহিনীর ৪৬তম রেজিমেন্টের ঘাঁটি এবং কমপক্ষে আটটি গ্রাম দখল করেছে তারা।
এসওএইচআর জানিয়েছে, গত দুই দিনে ১২১ জন বিদ্রোহী, যাদের অধিকাংশই এইচটিএস সদস্য এবং ৪০ জন সরকারি সেনা ও ২১ জন যোদ্ধা নিহত হয়েছে।
বিদ্রোহীরা টেলিগ্রাম বিবৃতিতে বলেছে, তারা আলেপ্পো শহরের পাঁচ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত খান আল-আসাল শহর দখল করেছে এবং সরকার সমর্থক বাহিনীর ২০০ জনেরও বেশি সদস্যকে হত্যা করেছে।
বৃহস্পতিবার একটি সিরিয়ান সামরিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তাদের বাহিনী সন্ত্রাসী হামলার মোকাবেলা করেছে। সন্ত্রাসীদের সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং অনেকে হতাহত হয়েছে। তবে নিজেদের কোনো ক্ষয়ক্ষতির কথা উল্লেখ করেনি।
এদিকে ইরানের সংবাদ সংস্থাগুলো বলেছে, সিরিয়ায় ‘সামরিক উপদেষ্টা’ হিসেবে কাজ করা ইরানের বিপ্লবী গার্ডের একজন সিনিয়র কমান্ডার আলেপ্পো প্রদেশে নিহত হয়েছেন।
সূত্র : বিবিসি
