ফিলিস্তিনের গাজায় অনাহারকে যুদ্ধের একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল। অধিকৃত ভূখণ্ডটিতে ত্রাণ প্রবেশের অপ্রতুলতাকে ‘মানবসৃষ্ট’ বিপর্যয় বলে আখ্যা দিয়েছেন তিনি।
এদিকে অতি প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ নিয়ে সাইপ্রাস থেকে স্পেনের একটি জাহাজ রওনা দিয়েছে। গাজা অভিমুখে যাত্রা করা প্রথম ত্রাণবাহী জাহাজ এটি।
অন্যদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রাফাহ শহরসহ গাজার দক্ষিণাংশে আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। তবে গত মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া ভাষণে বোরেল বলেন, কার্যকর স্থলপথের অভাবেই গাজায় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন এমন একটি জনসংখ্যার মুখোমুখি হয়েছি যারা তাদের নিজেদের বাঁচানোর জন্য লড়াই করছে।
অনাহারকে যুদ্ধের একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। যখন আমরা ইউক্রেনে এটি হচ্ছে বলে নিন্দা করেছি তখন গাজায় যা হচ্ছে তার জন্যও আমাদের একই শব্দ ব্যবহার করতে হবে।’ এদিকে জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, গাজার জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ, অন্তত পাঁচ লাখ ৭৬ হাজার মানুষ, দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।
এদিকে উত্তর গাজায় স্থলপথে খাদ্য সহায়তা পৌঁছাতে তিন সপ্তাহের মধ্যে প্রথমবারের মতো নতুন একটি স্থলপথ ব্যবহার করা হয়েছে বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে।
তবে ইসরায়েলের বাধার কারণে স্থলপথে গাজায় ত্রাণ পাঠাতে না পেরে বিমান থেকে খাদ্য ত্রাণ ফেলা ও সমুদ্রপথের মতো বিকল্প বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছে ত্রাণ সরবরাহকারীরা।
এদিকে জার্মানি গতকাল বুধবার বলেছে, তারা গাজা উপত্যকায় বিমান থেকে প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেবে। গাজায় বিমান থেকে মানবিক সহায়তা দেওয়া প্রথম শুরু করে জর্দান।
অন্যদিকে গাজায় সমুদ্রপথে ত্রাণ পৌঁছে দিতে অস্থায়ী বন্দর নির্মাণ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিকল্পনার সাফল্য নিরাপত্তার ওপর নির্ভর করছে। সক্রিয় যুদ্ধক্ষেত্র থেকে হঠাৎ করে কোনো গোলা এসে আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া সহায়তার জন্য মরিয়া মানুষ তীরে এসে ভিড় করলেও দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।