সাগরপথে চলে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের একটা সময় পর্যন্ত আলবেনিয়ায় রাখার ব্যবস্থা করতে চলেছে ইতালি সরকার। এ লক্ষ্যে আলবেনিয়ায় দুটি সাময়িক আশ্রয়শিবির নির্মাণের বিষয়ে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি হয়েছে। সোমবার ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি এ তথ্য জানান।
মেলোনি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন গত বছর।
২০২৩ সালের পরিসংখ্যান বলছে, গত বছরের তুলনায় অবৈধ পথে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ইতালিতে প্রবেশের হার অনেক বেড়েছে।
মেলোনি সরকার মনে করে, আলবেনিয়ায় দুটি অস্থায়ী আশ্রয়শিবির গড়ে সাগরপথে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সেখানে রেখে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো সম্ভব। সোমবার রোমে আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী এডি রামা ও ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি এমন আশ্রয়শিবির নির্মাণের বিষয়ে একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
চুক্তি সম্পাদনের পর মেলোনি জানান, ‘রিসিপশন সেন্টার’, অর্থাৎ অস্থায়ী আশ্রয়শিবির দুটি নির্মাণ করা হবে আলবেনিয়ার শেংজিন ও জাদার অঞ্চলে।
তবে প্রধানমন্ত্রী মেলোনি জানিয়েছেন, পর্যায়ক্রমে ধারণক্ষমতা বাড়াতে বাড়াতে একসময় বছরে ৩৬ হাজারের মতো অভিবাসনপ্রত্যাশীকে সেখানে রাখা যাবে বলে তিনি আশা করেন।
আলবেনিয়ার রিসিপশন সেন্টারে কে, কেন থাকবে?
আলবেনিয়ার শেংজিন ও জাদার অঞ্চলে দুটি রিসিপশন সেন্টারে অপ্রাপ্তবয়স্ক ও অন্তঃসত্ত্বা নারী ছাড়া বাকি সব অভিবাসনপ্রত্যাশীকে রাখা হবে। তবে কাউকেই দীর্ঘদিন রাখা হবে না।
সোমবার আলবেনিয়ায় নির্মিতব্য অস্থায়ী আশ্রয়শিবির দুটি সম্পর্কে আরো দুটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানানো হয়েছে। এক, আশ্রয় শিবির পরিচালিত হবে ইতালির আইনে। দুই, শিবিরের বাহ্যিক নিরাপত্তার যাবতীয় বিষয় দেখভাল করবে আলবেনিয়া।
বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া
নির্বাচনের আগে ইউরোপের বাইরে এমন অস্থায়ী আশ্রয়শিবির নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল মেলোনির দল ব্রাদার্স অব ইতালি। সরকার গঠনের পর উত্তর আফ্রিকার কয়েকটি দেশের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনাও করেছে মেলোনির সরকার। কিন্তু সে অঞ্চলের কোনো দেশ এমন আশ্রয়শিবির নির্মাণে রাজি হয়নি।
এবার আলবেনিয়া রাজি হয়ে চুক্তিও স্বাক্ষর করায় মেলোনি খুব খুশি। এতে তিনি ইউরোপের জন্য কল্যাণকর কিছু করার আনন্দ পাচ্ছেন—এমন ইঙ্গিত দিয়ে ইতালির প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার বিবেচনায় এটা সত্যিকার অর্থেই একটি ইউরোপীয় চুক্তি। অভিবাসীদের স্রোত ব্যবস্থাপনার কাজ যে সবাই মিলে করা সম্ভব—এটি (চুক্তি) তা দেখিয়ে দিল।’
ইতালির বিরোধী দলের সংসদ সদস্য আঞ্জেলো বনেলি অবশ্য তা মনে করেন না। তার মতে, ইতালি আর আলবেনিয়া সরকারের এ চুক্তি ‘কনভেনশন ও আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।’