জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ সংস্থার মতে, বাড়ি এবং অ্যাপার্টমেন্ট ভবন লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বিমান হামলা এবং গোলাবর্ষণের ফলে গাজায় প্রায় ১ লাখ ২৩ হাজার ৫৩৮ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ফিলিস্তিনিরা বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। অনেকেই উপকূলীয় ছিটমহলের প্রায় ৬৪টি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ের কার্যালয় তার সর্বশেষ খবরে এমনটাই জানিয়েছে।
ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংস হওয়া উল্লেখযোগ্য ভবনগুলোর মধ্যে রয়েছে চারটি বড় টাওয়ার। যার একাধিক তলায় আবাসিক ইউনিট রয়েছে। আরো জানা গেছে, মোট ১৫৯টি আবাসন ইউনিট ধ্বংস হয়েছে এবং ১ হাজার ২১০টি ভবন গুরুতর ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। গাজার হাসপাতালগুলোতে আহত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
অন্যান্য বেশ কয়েকটি দেশ অভিযোগ করেছে, দেশটি নিজেদের নাগরিকদের হত্যা করা হয়েছে বা হামাস অপহরণ করেছে। এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী রণতরী ইসরায়েলের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী কট্টরপন্থী সংগঠন হামাস হঠাৎ যেভাবে খোদ ইসরায়েলের মাটিতে ঢুকে রক্তক্ষয়ী আক্রমণ চালিয়েছে, তা দেশটিকে তো বটেই, গোটা বিশ্বকেই চমকে দিয়েছে। মাত্র ২০ মিনিটে দেশটিতে ৫ হাজারের বেশি রকেট ছোড়ার কথা জানায় হামাস। এ হামলা ঘিরে দুই পক্ষের মধ্যে শুরু হওয়া লড়াইয়ে ইতিমধ্যে ১হাজার ১০০ ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
৫০ বছর আগে ‘ইয়ম কিপ্পুর’ যুদ্ধের (১৯৭৩ সালে ৬ দিনের আরব–ইসরায়েল যুদ্ধ) পর এমন রক্তক্ষয়ী হামলার মুখে দ্বিতীয়বার পড়েনি ইসরায়েল।
সবচেয়ে বেশি আলোচনা চলছে হামাসের বেছে নেওয়া হামলার সময়টি ধরে। নজিরবিহীন এই আক্রমণ ঘটেছে এমন সময়ে, যখন সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আলোচনা চলছে। এই আলোচনার অংশীদার ছিল ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) নিয়ন্ত্রক পশ্চিম তীরের শাসকগোষ্ঠী ফাতাহ।
এমন সন্ধিক্ষণেই ফাতাহর প্রতিদ্বন্দ্বী হামাস ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে বড় সংঘাতে জড়াল। বলা হচ্ছে, এটি ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা আরব দেশগুলোর প্রতি একটি বার্তাও বটে। হামাসের অভ্যন্তরে বিভক্তির কথা বলাবলি হচ্ছে। এ অবস্থায় বিভিন্ন সূত্র বলছে, সংগঠনটির সামরিক শাখা মারাত্মক যুদ্ধের দিকে নজর দিচ্ছে। এর প্রভাব হতে পারে সুদূরপ্রসারী ও দীর্ঘমেয়াদি।