শুক্রবার থেকে মাঠে গড়াতে যাচ্ছে নবম বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) আসর। এই টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে ফ্র্যাঞ্চাইজি দলগুলো শুরু করে দিয়েছে অনুশীলন।

ফরচুন বরিশালের পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি ঢাকা পোস্টের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতাই জানালেন, বিপিএল এক্মট্রা অর্ডিনারি পারফর্ম করে ফিরতে চান জাতীয় দলে। এছাড়া দলের অধিনায়ক কিংবা বিপিএলে নিজের লক্ষ্যের কথাও জানিয়েছেন।

সবমিলিয়ে বরিশাল দলের পরিবেশ কেমন দেখছেন?

রাব্বি: প্রাকটিস তো করলাম মাত্র কয়েকদিন হলো। আমরা চেষ্টা করছি দলের সবার মধ্যে বন্ডিং তৈরি করার। আমরা আগেও অনেকে একসাথে খেলেছি একেক সাথে একেক দলে। তারপরেও এবার আমাদের জন্য নতুন একটা সিজন, নতুন একটা টুর্নামেন্ট। সেখানে চেষ্টা করছি একটা বন্ধন তৈরি করার জন্য এক জন আরেক জনের সঙ্গে। আমরা এভাবেই প্রাকটিস করে চলেছি।

গেল বছর রানার আপ ছিল বরিশাল এবার কি সেই চ্যাম্পিয়ন খরা কাটবে?

দেখুন, দল তো সবাই ভালো। বরিশাল দলও ভালো হয়েছে। শিরোপা নেওয়ার জন্যই তো প্রতিটা ফ্র্যাঞ্চাইজি দল গঠন করে। প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ও যখন মাঠে নামে তাদেরও চিন্তা একই থাকে আমরা কিভাবে সেরাটা খেলব। আগের বার যেহেতু বরিশাল রানার আপ হয়েছিল। এবার তারা চাচ্ছে যেন চ্যাম্পিয়ন হতে পারে, আমরা খেলোয়াড়রাও চাইছি সেটা মাঠে বাস্তবায়ন করতে।

বিপিএলে ব্যক্তিগত লক্ষ্য কি থাকবে আপনার?

রাব্বি: আলহামদুলিল্লাহ টি-টোয়েন্টিতে সবসময় ভালো পারফর্ম করতে পারি আল্লাহর রহমতে। উইকেটের সাথে এবার ইকোনোমি রেটটা নিয়ে চিন্তা রয়েছে। যদিও বেশিরভাগ সময়ে আমি পাওয়ার প্লেতেই বল করি। সে কারণেই আমার ইকোনোমিটা বেড়ে যায়। আমার এবার প্লান যেটা সেটা হচ্ছে যে বিগত বছরগুলোতে যেভাবে পারফর্ম করেছি ঠিক ওভাবেই যেন ধারাবাহিক রাখতে পারি।

জাতীয় দলে ফেরার জন্য বিপিএল কতটা সাহায্য করবে বলে মনে করেন?

রাব্বি: হ্যাঁ, অবশ্যই একটা খেলোয়াড়ের পারফর্ম করার জন্য প্রত্যেকটা টুর্নামেন্টেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তারপরও বিপিএল একটা বড় আসর বাংলাদেশের। এখানে ভালো করলে টি-টোয়েন্টি বা ওয়ানডে ফরম্যাটে বিবেচনায় রাখবে বলে আমি আশা করি।  সো অবশ্যই ভালো পারফর্ম করে যেন থাকতে পারি সেটাই আশা করি।

বঙ্গবন্ধু বিপিএল সহ ঘরোয়াতে টুর্নামেন্টে পারফর্ম করছেন এরপর ডাক পেয়েও জাতীয় দলের হয়ে খেলা হয়নি কিভাবে দেখছেন?

রাব্বি: বঙ্গবন্ধু বিপিএলে আমি ভালো করে পাকিস্তান সিরিজে কল পেয়েছিলাম কিন্তু আমি ইনজুরির কবলে পড়ে খেলতে পারিনি। পরের বিপিএলটাও ভালো খেলছিলাম যদিও আর কল পাইনি। দেখেন আসলে জাতীয় দলের জায়গাটা তো কম থাকে, তো যারা এখন জাতীয় দলে খেলতেছে তারা যদি ভালো পারফর্ম করতে থাকে তাহলে একজন ভালো খেলোয়াড়কে অফ করে আরেকজন খেলোয়াড়কে নিবে না। আমি চাচ্ছি যে নিজের সর্বোচ্চ পারফর্মটা করতে। অর্ডিনারি পারফর্ম করে জাতীয় দলে ঢোকা কঠিন, তাইতো আমি চাচ্ছি এক্সট্রা অর্ডিনারি পারফর্ম করতে, তাহলে হয়তো আমাকে গণ্য করবেন তারা।

শেষ জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন ৪ বছর আগে, দীর্ঘদিন দলে নেই কোন জিনিসটা বেশি মিস করেন?

রাব্বি: জাতীয় দলের অনেক কিছুই মিস করা হয়, আমরা যখন অনুর্ধ্ব ১৯ খেলি ২০১০ থেকে এরপর থেকে যতদিন পর্যন্ত এখনো ক্রিকেট বোর্ডের যে কোনো ক্যাম্পে থাকি। হয় আমি এ টিমে থাকি, একাডেমিতে ছিলাম ৮ বছর প্রায় (এইচপি)। এবার বাংলা টাইগার্সে ছিলাম। আমি খুব কাছাকাছি অবস্থাতেই আছি কিন্তু জাতীয় দল অবশ্যই মিস করি, ড্রেসিংরুম মিস করি। দেশের জন্য হয়ে খেলা। আমি টেস্ট খেলেছি তবে আমার অনেক ইচ্ছা ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে যেনো ডেব্যু হয়। কয়েকবার জাতীয় দলের ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে ডাক পেয়েছি কিন্তু আমার মাঠে নামা হয়নি। আমি জানিনা আমার দুর্বলতা কোথায়, কোথায় আমার সমস্যা আমি নিজেও খুঁজে পায়না। কেন আমি ম্যাচ খেলতে পারি না, ভালো পারফর্ম করেই জাতীয় দলে আসি, তবে আমি মনে করি সবকিছুই তকদিরের ব্যাপার রাব্বুল আলামিন এখনো সুস্থ রাখছেন এটাই বড় ব্যাপার। আল্লাহ যখন চাইবেন আমার জন্য উপযুক্ত যখন হবে তখনই খেলব। যদি নাও হয় আফসোস নেই নিশ্চয় আল্লাহ ভালো কিছু লিখে রেখেছেন।

অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের কাছে প্রত্যাশা কি আপনার?

রাব্বি: জাতীয় দলের হয়ে যখন শেষ খেলেছি তখনো সাকিব ভাই আমার অধিনায়ক ছিল। সাকিব ভাইয়ের সাথে ক্রিকেট খেলাটা খুবই সোজা। সাকিব ভাই অনেক বন্ধুত্বপূর্ণ অধিনায়ক। ক্রিকেটারদের অনেক স্বাধীনতা দেয়, বোলিংয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ করে। একেকজন অধিনায়কের একেকরকম এথিকস থাকে আমার কাছে মনে হয় সাকিব ভাইয়ের অধিনায়কত্বে তার স্বাধীনতা অনেক বেশি থাকে। সে মাঠের  ভেতরে উত্তজনা খুবই কম হয়, খেলোয়াড়ের উপর প্রেশারটা কম দেয়। সাকিব ভাই স্বাধীনতা দেয় তখন একটা খেলোয়াড় কিন্তু তৈরী হয় সে বুঝতে পারে আমি কিভাবে বোলিং করবো। কিভাবে ব্যাটিং করবো। যদি পড়ালেখার মতো বুঝিয়ে দিল এটা করবা এটা করবা না সে তো আর নিজে তৈরী হতে পারল না। এক্ষেত্রে খেলাধুলাই স্বাধীনতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।