কাতার বিশ্বকাপের আর বাকি মাত্র কয়েক মুহূর্ত। এরপরই মরুর বুকে শুরু হয়ে যাবে ফুটবলের মহাযজ্ঞ। আর সব বিশ্বকাপের মতো এবারও বিশ্বকাপের আগে আলোচনায় বেশ কিছু তরুণ তুর্কি। দারুণ ছন্দে থেকে এসেছেন কাতারে। এবার আলো কাড়তে পারেন ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসরেও।
চলুন পরিচিত হয়ে নেওয়া যাক বিশ্বকাপের সম্ভাব্য সেরা তরুণ তুর্কিদের সঙ্গে-
ভিনিসিয়াস জুনিয়র (ব্রাজিল)
‘বয়স মাত্র ২২, এখন না হলে কখন!’ – কথাটা ভিনিসিয়াস জুনিয়রের সঙ্গে মিলে যায় বেশ। বয়স ২২ চলছে, ইতোমধ্যেই ফুটবলে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছেন তিনি।
দারুণ গতি আছে, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে জয়সূচক গোল করে তিনি জানান দিয়েছেন, চাপটাও ভালোই সামলান। চলতি মৌসুমে ১৪ ম্যাচে ৬ গোল আর ৩ অ্যাসিস্ট করে ফেলেছেন, বিশ্বকাপেও যে এমন ফর্মটা টেনে আনবেন, তা আঁচ করাই যাচ্ছে।
রদ্রিগো গোয়েজ (ব্রাজিল)
২১ বছর বয়সী এই তারকাও ব্রাজিলের, খেলেন ভিনিসিয়াসের ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদেই। তিনিও নিজেকে চিনিয়েছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ দিয়েই। প্রতিযোগিতাটির ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ হ্যাটট্রিকম্যানও তিনিই।
ভিনিসিয়াসের মতো চাপটা তিনিও ভালো সামলান, গেল মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে তার গোলেই চেলসির বিদায়ঘণ্টা বাজিয়েছিল রিয়াল। গতি আর স্কিল তার শক্তির জায়গা, সব কিছুর মিশেলে নেইমারের কাঁধ থেকে বোঝা নামিয়ে বিশ্বকাপ মাতাতে তৈরি তিনিও।
গাভি (স্পেন)
ভিনিসিয়াস-রদ্রিগোদের চেয়েও তিনি ৪-৩ বছরের ছোট। তবে তাই বলে ঝাঁজটা পাবলো পায়েজ গাভির কম নয়। এই বয়সেই ঢুকে গেছেন বিশ্বকাপ স্কোয়াডে, গড়ে ফেলেছেন স্প্যানিশ রেকর্ডও। ২০২২ কোপা ট্রফি আর গোল্ডেন বয়ের পুরস্কার উঠেছে তার হাতে। এই বয়সেই বার্সেলোনার মতো ক্লাবে খেলছেন নিয়মিত।
তার শক্তির জায়গাটা ৯০ মিনিট প্রেস করা আর দারুণ সব ড্রিবল। সব মিলিয়ে আর সব তারকাকে টেক্কা দিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন স্পেনের বিশ্বকাপ দলে। লা ফিউরিয়া রোহাদের একাদশের নিয়মিত মুখ হওয়ায় বিশ্বকাপে দলটির ভালো-মন্দও নির্ভর করবে অনেকটা তার ওপরই।
জুড বেলিংহ্যাম (ইংল্যান্ড)
বিশ্বকাপে এবার ইংল্যান্ড তরুণ এক দল নিয়ে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় জুড বেলিংহ্যামের নাম। বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে ইতোমধ্যেই নাম করে ফেলেছেন বেশ, দলটির অধিনায়কও তিনিই, তাও মাত্র ১৯ বছর বয়সে!
তার দারুণ ড্রিবল তো আছেই, পারফর্ম করার মানসিকতা তাকে ইংল্যান্ডের জন্য গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে, কথাটা ওয়েইন রুনির। মাঠের খেলাতে যে পূর্বসুরির কথার মান রাখতে চাইবেন জুড, তা বলাই বাহুল্য।
জামাল মুসিয়ালা (জার্মানি)
জার্মান কিংবদন্তি লোথার ম্যাতায়াস বলেছিলেন, বর্তমানে একজন খেলোয়াড় আছেন যার খেলা দেখলে লিওনেল মেসির কথাই মনে হয়ে যায়! সেই খেলোয়াড়টা তার দেশ জার্মানিরই, জামাল মুসিয়ালা তার নাম।
বায়ার্ন মিউনিখের মতো দলে ইতোমধ্যেই তিনি খেলে ফেলেছেন ১০০ ম্যাচ, গড়ে ফেলেছেন সবচেয়ে কম বয়সে এই মাইলফলক ছোঁয়ার রেকর্ড। চলতি মৌসুমে গোল করে-করিয়ে ২২ গোলে অবদান রেখে জামাল জানান দিয়েছেন, কথাটা মোটেও অত্যুক্তি নয়।
সেই জামাল এবার বিশ্বমঞ্চে। জার্মান জাতীয় দলের আক্রমণভাগের বাকি খেলোয়াড় যারা, সেই থমাস মুলার, সের্জ গেনাব্রি আর লেরয় সানেদের সঙ্গে বোঝাপড়াও দারুণ তার। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপ মাতাতে যে তিনি প্রস্তুত, তা আঁচ করা যায় সহজেই।
পেদ্রি গনজালেস (স্পেন)
গাভির মতো পেদ্রি গনজালেসও খেলছেন বার্সেলোনায়। ১৯ বছর বয়সেই বনে গেছেন দলটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সেরা তরুণ খেলোয়াড়ের পুরস্কারটা তিনি জিতেছিলেন ২০২১ সালে।