গতকাল মধ্যরাতে তরুণ নাট্য নির্মাতা রাফাত মজুমদার রিংকুকে আটক করেছে পুলিশ। রাতে তাকে রাখা হয় গুলশান থানায়। দুপুরের কিছুক্ষণ আগে এই নির্মাতাতে নেওয়া হয় আদালতে। তবে কী কারণে বা কোন মামলায় আটক করা হয়েছে সেটা দুপুর অব্দি স্পষ্ট করেনি পুলিশ।
তবে তাকে নিয়ে সরব হয়েছেন ছোট পর্দার নির্মাতারা। আটকের খবর শুনে বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন নাট্যাঙ্গনের মানুষ। ফেসবুকে চলছে তাকে আটকের প্রতিবাদ।
গুণী নির্মাতা আশফাক নিপুণ লেখেন, ‘রাফাত মজুমদার রিংকু আমাদের নির্মাতা ছোট ভাই।
অভিনেত্রী তানজিন তিশা লেখেন, ‘রিংকু ভাই কখনো কারোর ক্ষতির কারণ হতে পারে না।
অভিনেতা খায়রুল বাসার তাঁর ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি এবং আমি জানি, নির্মাতা রাফাত মজুমদার রিংকু কখনো কারো ক্ষতির কারণ হতে পারে না। নির্মাতা রিংকুকে যারা চেনেন বা জানেন তারাও তা ভালো করেই জানার কথা।’
অভিনেতা তৌসিফ মাহবুব লিখেছেন, ‘রাফাত মজুমদার রিংকুকে সব সময় সবার বিপদে পাশে দাঁড়াতে দেখেছি। আমার যারা সহশিল্পী আছেন, তাদের প্রতি অনুরোধ আপনারাও তার এই বিপদে তার পাশে দাঁড়ান।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মনিরা মিঠু লিখেন, ‘পুলিশ গভীর রাতে ধরে নিয়ে গেছে নির্মাতা রাফাত মজুমদার রিংকুকে। এখন গুলশান থানায় আটক। সে একজন জনপ্রিয় নির্মাতা, সে ভালো মানুষ। রিংকু কখনো কারো ক্ষতি করে নাই। সে মানুষের বিপদে সবার আগে এগিয়ে আসত। তার বাবা-মা কেউ নেই। সে কখনোই কোনো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত না। তার একমাত্র পেশা তিনি একজন নির্মাতা। তার মুক্তি চাই।’
গোলাম ফরিদা ছন্দা ফেসবুকে লিখেছেন, ‘রাফাত মজুমদার রিংকুকে চিনি পরিচালক হওয়ার আগে থেকে। ছোট্ট একটা ছেলে মনে স্বপ্ন নিয়ে শেখার আগ্রহ থেকে সহকারী পরিচালক হয়েছিল। নির্মাতা আমাকে টাকা দিতে ঝামেলা করছিল কিন্তু সেই টাকাও সে দায়িত্ব নিয়ে তুলে দিয়েছিল। এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে গেছে সে। সহকারী থেকে একজন জনপ্রিয় পরিচালক হয়েছে। প্রচুর কাজ করেছে। সব সময় মানুষের বিপদ-আপদে ছুটে গেছে। মানবিকতাসম্পন্ন একজন মানুষ বলেই ওকে জানি। ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গেও সে ভীষণ অ্যাকটিভ ছিল। সে কী এমন অন্যায় করতে পারে যে তাকে আটক করতে হলো! কোনো প্রতিহিংসার শিকার যেন না হয় সে। মুক্ত হোক রিংকু- এটাই আমাদের চাওয়া।’
নির্মাতা সাগর জাহান ফেসবুকে লেখেন, ‘আমি কোনোভাবেই মানতে পারছি না রিংকুর আটক হওয়া। রিংকু শুধু ভালো ছেলেই না, সে পরোপকারী। সবার পাশে থাকে। যে কারো বিপদে এগিয়ে যায়। যদি আমার কথাই বলি, আমার বাবা-মা মারা যাওয়ার সময় থেকে টানা আট মাস আমি কোনো কাজ করতে পারিনি। এই রিংকু আমার অফিসে এসে আমাকে অনেক সান্ত্বনা দিয়ে কাজে ফেরায়। সব ভুলে কাজে মনোযোগ দিতে বলে আমাকে। এমনও বলেছে, আপনার কাছ থেকে আমরা ভিউ চাই না, চাই আপনার মতো করে সুন্দর একটা নাটক। ভাই রিংকু তুমি কোনো চিন্তা কোরো না, আমরা আছি। তোমার পাশে দাঁড়ানো মানুষের অভাব হবে না। আল্লাহ অবশ্যই সহায় হবেন। শিল্পী, কলাকুশলীসহ সবার বিপদে সবার আগে এগিয়ে আসা উচিত।’
তারা ছাড়াও অসংখ্য মানুষ ফেসবুকে রিংকুর মুক্তি চেয়ে পোস্ট দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, রিংকু এই সময়ে জনপ্রিয় নির্মাতাদের একজন। তার নির্মিত নাটকের সংখ্যা শতাধিক। রিংকুর নির্মিত নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে রঙিন আশা, পুতুলের সংসার, ইতিবৃত্ত, নরসুন্দরী, কবর, বন্ধন, ব্লগার মিতু, জাল, কাটুস, অতিরিক্ত, নোঙ্গর, রিকশা গার্ল প্রভৃতি।