ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত চত্বর থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার পর দেশের সব আদালতে নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশনা দেওয়া হয়। মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) বিকেল ৫টা পর্যন্ত নীলফামারীর জেলা জজ আদালতে বাড়তি কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখা যায়নি।

নীলফামারী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে গিয়ে দেখা গেছে, মূল ফটক দিয়ে বিচারপ্রার্থীসহ সাধারণ লোকজন অবাধে যাতায়াত করছে। এসময় একটি খালি ট্রাক্টর আদালত চত্বর থেকে বের হতে দেখা যায়। আদালতের মূল ভবনের প্রবেশদ্বার, বারান্দায় মানুষের অবাধ চলাচল থাকলেও বাড়তি কোনো নিরাপত্তারক্ষী বা পুলিশ সদস্য চোখে পড়েনি। এজলাস গুলোর সামনে বিচারপ্রার্থী ও সাধারণ মানুষের জটলা ছিল সাধারণ দিনের মতোই।

এছাড়া আদালত চত্বরে ফেরিওয়ালা ও ভ্রাম্যমাণ দোকানদারদের তৎপরতাও ছিল স্বাভাবিক দিনের মতো। মূল ফটকের ভেতরে বসে এসব দোকানে বিভিন্ন মালামালের পসরা সাজিয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে তাদের।

নীলফামারী জেলা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুহাম্মদ নূর আমীন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাড়তি কোনো নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়নি। তবে সবাই সজাগ আছে। সারাদেশের আদালতে বাড়তি নিরাপত্তার বিষয়ে পুলিশের সাথে কথা হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

নীলফামারীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, গোটা জেলায় সতর্ক অবস্থানে পুলিশ কাজ করছে। এছাড়াও গোয়েন্দা তৎপরতা ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত রোববার বেলা ১২টা ৪৫ মিনিটে একটি মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি মইনুল হাসান শামীম ও আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিবকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। হাজিরা শেষে পুলিশ সদস্যরা তাদের নিয়ে আদালত চত্বর ছেড়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় পুলিশের চোখে-মুখে স্প্রে করে শামীম ও সাকিবকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় আগে থেকেই অবস্থানরত পেতে থাকা অন্যান্য জঙ্গিরা। ওই দুজন ২০১৫ সালে বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় এবং জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।

এরপর তাদের গ্রেপ্তার করতে ঢাকা জুড়ে অভিযান শুরু করে পুলিশ। পালিয়ে যাওয়া দুই জঙ্গিকে ধরিয়ে দিলে প্রত্যেকের জন্য ১০ লাখ করে ২০ লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করেছে পুলিশ। পাশাপাশি দেশজুড়ে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।