ঢাকা: একদিকে শীতের সকাল অন্যদিকে কর্মব্যস্ততার দিন। এই দুইয়ের কারণে সেরকম যাত্রীর দেখা পায়নি মেট্রো রেল। তবে সকাল ৮টার দিকে যাত্রীর দেখা না পেলেও ১০টার পরে কিছুটা চাপ দেখা যায় স্টেশনগুলোতে। অন্যদিকে যাত্রী কম থাকলেও সকাল থেকে নিয়মতান্ত্রিকভাবেই চলেছে মেট্রো রেল।

কর্মব্যস্ততার মধ্যেও সুযোগ পেয়ে আজও মেট্রো রেলে চড়তে ও এর স্বাদ গ্রহণ করতে দূর-দূরান্ত থেকে আসে ভ্রমণার্থীরা। সকাল ১০টার পর থেকেই বন্ধু-বান্ধব ও পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে আসে ভ্রমণার্থীরা। এর মধ্যে অনেকে একবার মেট্রোতে চললেও বেশিরভাগই প্রথমবার আসেন।

মেট্রো রেলে চড়ার জন্য কুড়িগ্রাম থেকে পরিবার নিয়ে এসেছে আমিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, 'খুব ভালো লাগছে। নতুন কিছু দেখতে পারছি। আসব আসব বলে আর আসা হচ্ছিল না। কাল অফিস থেকে ছুটি নিয়েই চলে এসেছি। মেট্রোতে ঘুরে আবার বাড়ি চলে যাব।'

আমিরুল ইসলামের মেট্রোরেলে ঘুরতে কিশোরগঞ্জ থেকে ভাগিনার সাথে এসেছেন মামা আল আমিন। আল-আমিন বলেন, 'আমি মেট্রোতে চড়ব বলে ভাইগ্না আমাকে নিয়ে এসেছে। আমরা কাল রাতেই এসেছি। সকালে উঠেই চলে আসছি মেট্রোতে চড়ার জন্য। খুব ভালো লাগছে মেট্রোতে চড়তে পেরে।'

শুধু ঢাকার বাইরে নয়, ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও মেট্রো রেলে ঘুরতে এসেছে ভ্রমণার্থীরা। কাঁঠাল বাগান থেকে সপরিবারে মেট্রোর অভিজ্ঞতা নিতে আগারগাঁও এসেছে মোহাম্মদ লাবিব। পরিবারের অর্ধেক মানুষকে পাঠিয়ে আরো অর্ধেকের জন্য অপেক্ষা করছেন মেট্রো স্টেশনে।

লাবিব বলেন, 'আমি কলকাতায় মেট্রোতে চড়েছি। তবে পরিবারের সকলের ইচ্ছা তারা ঢাকার মেট্রোতে চড়বে। তাই সবাইকে নিয়ে এসেছি। এখনো পুরোপুরি চালু হয়নি৷পুরোপুরি চালু হলে বুঝতে পারব কতটুকু সার্ভিস দিবে ঢাকা মেট্রো।'

যাত্রীর চাপ কম থাকলেও টিকিট ভেন্ডর মেশিনগুলো সমস্যামুক্ত হয়নি। আগারগাঁও সি ব্লকের একটি মেশিন ১০ মিনিটের জন্য বিকল হয়ে যায়। তবে যাত্রীর চাপ কম থাকায় সমস্যা তৈরি হয়নি। এ ছাড়া টিকেট ভেন্ডর মেশিনগুলো ধীরে কাজ করায় হাতে হাতে টিকেট নেওয়ার লাইন দীর্ঘ হয়। পাশাপাশি মেট্রো স্টেশনের নিযুক্ত স্কাউট টিমের সদস্যরা টিকেট ভেন্ডর মেশিনের সামনের লাইনে দাঁড়ানো যাত্রীদের বলছে দ্রুত জার্নি করলে হাতে টিকেট কেনার লাইনে দাঁড়ানোর জন্য।

এ বিষয় জানতে চাইলে মেট্রো স্টেশনের টিকেটের দায়িত্বরত স্কাউট সদস্য বলেন, 'এখনও পুরোপুরি সেটাপ হয়নি মেশিনগুলো। কোনো টাকা গ্রহণ করছে আবার কোনো টাকা গ্রহণ করছে না। এর ফলে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।'

সকাল ১১টার পর ট্রেনগুলোতে লোকের চাপ তৈরি হয়। তবে ১২টার পর্যন্ত ট্রেন চললেও ১১টা ৫০ এর দিকে স্টেশনের ভিতরে পুরোপুরি খালি হয়ে যায়।

স্টেশনের নিচে এসে দেখা যায় আরেক চিত্র। সাড়ে ১১টার দিকে গেট বন্ধ থাকায় অনেকে প্রবেশ করতে পারেনি। এতে অনেকেই বিরুক্তি প্রকাশ করেন। মতিঝিল থেকে বন্ধুদের সাথে মেট্রো রেল ঘুরতে এসেছেন ইসতিয়াক হোসেন। প্রবেশ করতে না পেরে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'ট্রেন চলে ১২টা পর্যন্ত। সাড়ে ১১টায় গেট বন্ধ করার প্রয়োজনীতাই বুঝলাম না। আর আজকে এত চাপ নাই যে গেট বন্ধ করতে হবে। এ রকম করলে মানুষের আশার ইচ্ছাই নষ্ট হয় যাবে।'