ঢাকা: রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসনে সাবকমিটি অন মুসলিম কমিউনিটিজ অ্যান্ড মাইনরিটিজ অব দ্য পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন অব দ্য ওআইসি মেম্বার স্টেটসের (পিইউআইসি) কার্যকর ভূমিকা প্রত্যাশা করেছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তিনি বলেছেন, নিজস্ব জন্মভূমিতে ফিরে যাওয়ার অধিকার রক্ষা ও বাংলাদেশের পরিবেশগত দিক বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসন জরুরি।
আজ সোমবার স্পিকারের সংসদ ভবনস্থ কার্যালয়ে পিইউআইসি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। প্রফেসর ড. ওরহান আটালের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে ছিলেন, পিইউআইসি সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ খৌরাইচি নিয়াজ, ইরানের সংসদ সদস্য আবুলফজল আমই, উগান্ডার সংসদ সদস্য বাসির লুবেগা সেম্পা, পিইউআইসি ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল আলী আজগার মোহাম্মাদি সিজানি, এক্সপার্ট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স আমির আব্বাস ঘাসেমপুর, লেজিসলেটিভ এক্সপার্ট রেজাক তাভলি, সেক্রেটারি অব ডেলিগেশন মুসতাফা ফাতিহ বায়দার ও ডিরেক্টর অব পিইউআইসি জাহিদ হাসান কুরেশি।
এ সময় স্পিকার বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার মাধ্যমে যে মানবিকতা ও বদান্যতা দেখিয়েছেন তা বিশ্ববাসীর কাছে একটি উদাহরণ। বিশ্বদরবারে সব মহলে প্রশংসিত হয়ে তিনি ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। ”
তিনি আরো বলেন, ‘২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা নিধন শুরু হলে দফায় দফায় বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী তাদের আশ্রয় দেন। আয়তনে ক্ষুদ্র ও ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হওয়ার পরেও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কক্সবাজারে আশ্রয় দেন প্রধানমন্ত্রী। এর পর থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব সহায়তায় তাদের খাদ্য, চিকিৎসা, স্বাস্থ্য নিরাপত্তাসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সরকার নিবিড়ভাবে সহযোগিতা করেছে। ’
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করে বাংলাদেশ সফররত ওআইসি পিইউআইসির প্রতিনিধিদলের সভাপতি প্রফেসর ড. ওরহান আটালে বলেন, ‘সমগ্র বিশ্বে মুসলিম মাইনরিটি ও মুসলিম ধর্মাবলম্বী শরণার্থীদের মানবাধিকার সংরক্ষণে ওআইসি পিইউআইসি কাজ করছে। কক্সবাজারে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ’
শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করে প্রতিনিধিদল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি।
পিইউআইসি সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ খৌরাইচি নিয়াজ বলেন, ‘সমগ্র বিশ্বে রোহিঙ্গা ইস্যু বর্তমানে একটি আলোচিত ও মানবিক বিষয়। ওআইসি পিইউআইসি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সব রকম মানবাধিকার বিষয়ে সোচ্চার। ’
রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসনে বৈশ্বিক পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে এই জটিল সমস্যা সমাধানে তারা প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন বলে অবহিত করেন তিনি।
ইরানের সংসদ সদস্য আবুলফজল আমই বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশ যে উদারতার পরিচয় দিয়েছে, তা দৃষ্টান্তমূলক। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিজ জন্মভূমিতে ফিরে যাওয়া তাদের মানবাধিকার। ’
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পরিদর্শন করে তাদের যথাযথ প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।
প্রতিনিধিদলকে ধন্যবাদ জানিয়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন বলেন, ‘পিইউআইসি প্রতিনিধিদলের এই সফরের মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা উৎসাহ পাবে। আর প্রতিনিধিদলের রিপোর্ট আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উপস্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে। ’