ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্র সহিংসতামুক্ত সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। এর বাইরে কিছুই চায় না। মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়ার সাক্ষাতের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

আজরা জেয়ার নেতৃত্বে মার্কিন প্রতিনিধিদল আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে।

 

এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা সব কিছু নিয়ে সন্তুষ্ট এবং তারা বলেছেন যে আগামী নির্বাচন যাতে ভীতিমুক্ত ও সহিংসতামুক্ত হয় এটা তারা দেখতে চান। আমরা বলছি যে আমাদের নির্বাচনের সময় সংবিধান অনুযায়ী আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকবে। কমিশন যেভাবে নির্দেশনা দেবে, সেভাবেই তারা কাজ করবে।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রস্তুত আছে এবং তারা যে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কিছু বিশেষায়িত বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র দিয়েছে সেটাও আমি তাদের মনে করিয়ে দিয়েছি।’

 

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘অংশগ্রহণমূলক (নির্বাচন) তারা বলেননি। তারা ফ্রি, ফেয়ার এবং পিসফুল ইলেকশন চেয়েছেন। ভায়োলেন্স ফ্রি ইলেকশন তারা চেয়েছেন। আমরা বলেছি, আমাদের সিকিউরিটি ফোর্স, আমাদের ল এনফোর্সমেন্ট ফোর্স সব সময় তৈরি আছে।

তারা ওয়েল ট্রেইন্ড, তাদের আপনারা অনেক কিছু দিয়ে ট্রেইনিং করিয়েছেন এবং সেই ট্রেইনিংয়ে তারা উজ্জীবিত আছে। ইতিমধ্যে অনেকগুলো ইলেকশন হয়ে গেছে, যেগুলো অত্যন্ত পিসফুল হয়েছে। সে রকম ন্যাশনাল ইলেকশনটাও পিসফুল হবে। আমরা সেটাই আশা করছি।’

 

দূতাবাসের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের চলাফেরায় সতর্ক করার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে এ রকম কথা বলেননি।

এখানে যে কথা হয়েছে, সেখানে এ রকম কথা হয়নি।’

 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। আইনমন্ত্রী ইতিমধ্যে বলে দিয়েছেন যে আমাদের কিছু আইন যুগোপযোগী করার জন্য; বিদেশে যেভাবে আছে সেগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের আইন আরেকটু সংশোধিত হবে। আজকে তারা (প্রসঙ্গ) তোলার পরে আমিও একই কথাই বলেছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য আমি তাদের সহযোগিতা চেয়েছি। ওনারা বলেছেন, তারা সব সময় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য বা এই সংকটে পাশে আছেন।’

রোহিঙ্গাতের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কোনো পর্যবেক্ষণ জানিয়েছে কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা কোনো পর্যবেক্ষণ দেয়নি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাদের যে আলোচনা হয়েছে, সেই আলোচনায় আমার মনে হয়েছে তারা অত্যন্ত সন্তুষ্ট।’

বিএনপির এক দফা প্রসঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি জানিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা এটুকু বলেছেন, তারা কোনো দলকে উৎসাহিত করতে এখানে আসেন নাই। তারা কোনো দলকে সাপোর্ট করেন না। তারা এসেছেন এখানে যেন একটি সহিসংতামুক্ত শান্তিপূর্ণ সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। এর বাইরে তারা কিছুই চান না, কিছুই বলেননি। এটা বারবার বলে গেছেন, কোনো দলকে, কোনো ব্যক্তিকে সাপোর্ট করার জন্য তারা এখানে আসেননি।’

র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার প্রসঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এসব নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কালকের যে সভা দুটি হয়েছে, তারা দেখেছেন, তারা সন্তুষ্ট। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী যে কাজটি কালকে করেছে এবং এখন পর্যন্ত করে আসছে এতে তারা সন্তুষ্ট।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক আলোচনা হয়নি। তারা বলেছেন, কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে এখানে আসেননি। তারা কোনো দলকে সাপোর্ট করার জন্য এখানে আসেননি, কারো প্রতি বিরাগভাজন হয়েও আসেননি। তারা চাচ্ছেন বাংলাদেশ যেভাবে উন্নত হচ্ছে এটা নির্বিঘ্নে যাতে চলতে থাকে। তারা যে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন সেটা সবার জন্য, কোনো দলকে উদ্দেশ্য করে দেননি।’