NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, বুধবার, মে ৭, ২০২৫ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
ভবিষ্যতে এমন হামলার চেষ্টা করলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না: উপদেষ্টা অর্ডিন্যান্স আকারে আইন করে বাংলাদেশ হেলথ সার্ভিস গঠনের সুপারিশ মালয়েশিয়া সফর স্থগিত করলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হামজা-শামিত জুটি সম্ভাবনার আরেক ধাপ অগ্রগতি কোরবানির চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে কমিটি গঠনের নির্দেশ - প্রধান উপদেষ্টা মহসিন কলেজ ছাত্রলীগ নেত্রীকে পুলিশে দিলো শিক্ষার্থীরা ইসরায়েলে বিদেশি এয়ারলাইনসগুলোর ফ্লাইট বাতিলের হিড়িক তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতা চান না ট্রাম্প বাংলাদেশি হিসেবে রিশাদের রেকর্ডের দিনে লাহোরের হার ভারতীয় অনুরাগীদের মন্তব্যে হানিয়া বললেন ‘আমি কেঁদে ফেলব’
Logo
logo

শহীদ জননী জাহানারা ইমাম - মৃত্যুবার্ষিকীতে নির্মূল কমিটি নিউইয়র্ক চ্যাপ্টারের আলোচনা


খবর   প্রকাশিত:  ১০ জানুয়ারী, ২০২৪, ০৪:৩৮ পিএম

শহীদ জননী জাহানারা ইমাম - মৃত্যুবার্ষিকীতে নির্মূল কমিটি নিউইয়র্ক চ্যাপ্টারের আলোচনা

স্বাধীন বাংলাদেশে স্বাধীনতা বিরোধী কতৃক এক চরম বিভ্রান্তির সময় শহীদ জননী জাহানারা ইমাম আলোর দিশারির ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি তাঁর জীবদ্দশায় যে জাগরণ সৃষ্টি করে গেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে মৌলবাদ মুক্ত ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে শহীদ জননীর সেই জাগরণের চেতনাকে ধরে রাখতে হবে। ২৬শে জুন শহীদ জননী জাহানারা ইমামের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ২৭শে জুন সোমবার ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, নিউইয়র্ক চ্যাপ্টারের আয়োজনে আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

 

অনলাইনে  অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, নিউইয়র্ক চ্যাপ্টারের সভাপতি ফাহিম রেজা নূর। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক স্বীকৃতি বড়ুয়া। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক ডঃ নুরুন নবী, সংগঠনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ এবং শহীদ সন্তান ও লেখক তৌহীদ রেজা নুর।  অনুষ্ঠানের শুরুতেই মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদ,  জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শহীদ জননীর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানানো হয়।  

 

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক ডঃ নুরুন নবী শহীদ জননীর সাথে বিভিন্ন স্মৃতি বিশেষ করে শহীদ জননীর মৃত্যু সজ্জায় থাকা অবস্থায় স্মৃতির কথা বলতে গিয়ে আবেগাফ্লুত হয়ে পরেন। নিজের লেখা বই 'জাহানারা ইমামের শেষ দিনগুলি' থেকে তিনি পাঠ করে শুনান এবং বলেন জাহানারা খালাম্মাকে যখন শেষ বারের মত মিশিগানের এক হাসপাতালে দেখতে যাই, তিনি কাগজে লিখে দেশের কথা জিজ্ঞেস করলেন, আন্দোলনের কথা জানতে চাইলেন। মৃত্যুর পরে তার অবর্তমানে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবির আন্দোলন দেশবাসীর উপর অর্পণ করার কথা জানালেন শহীদ জননী।  ডঃ নুরুন নবী বলেন আমার দৃষ্টিতে বঙ্গবন্ধুর পরে শহীদ জননীর মতো দেশপ্রেমিক আর কেউ ছিলেন না। তিনি আরও বলেন মৃত্যুর মাধ্যমে এই দেশ প্রেমিকের ইতিহাস শেষ নয়, শহীদ জননীর  যে আদর্শ, উনার যে অবদান  ও কর্ম ক্ষমতা সেগুলো প্রকাশ করতে হবে এবং বঙ্গন্ধুর জীবনী ও শহীদ জননীর জীবনী পাঠ করলেই নতুন প্রজন্ম দেশপ্রেমিক হতে পারবে। 

 

প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা বিরোধীদের দাপটে দেশ যখন অন্ধকারে নিমজ্জিত, দেশের ইতিহাসকে যখন করা হচ্ছিল বিকৃত, নতুন প্রজন্মকে যখন শেখানো হচ্ছিল মুক্তিযুদ্ধের ভুল তথ্য, সংবিধানকে যখন করা হচ্ছিল খণ্ড বিখন্ড, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী যুবসমাজ যখন দিশেহারা ঠিক তখনি আলোর পথের দিশারী হয়ে এসেছিলেন শহীদ জননী জাহানারা ইমাম। তিনি দেশের জনগণকে আবার স্বপ্ন দেখার সাহস যুগিয়েছেন, যুদ্ধাপরাধী মুক্ত এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে একযোগে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। জাহানারা ইমাম বাঙালি জাতির জন্যে ‘ইতিহাসের এক বিশেষ ব্যক্তি’ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন।

তারই ধারাবাহিকতায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মানবতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের  বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। 

 

শহীদ সন্তান ও লেখক তৌহীদ রেজা নুর বলেন, শহীদ জননী জাহানারা ইমামের সাথে কাজ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে, তিনি অসুস্থ শরীর নিয়ে অনেক ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে একটি বৈরী পরিবেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি বলেন ১৯৮৭ সালে 'একাত্তরের ঘাতক ও দালালেরা কে কোথায়' বইটি যখন প্রকাশিত হয়, তখনই মূলত আমরা বুঝতে পারি সমাজ, প্রশাসন, মন্ত্রণালয়সহ সব জায়গায়তেই কিভাবে স্বাধীনতা বিরোধীরা প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে। তিনি আরও বলেন, আমরা যারা যুদ্ধাপরাধের প্রত্যক্ষ স্বীকার হয়েছি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিটা আমরা অনুভব করতে পারতাম, এবং প্রতিটি সভায় যেন শহীদের সন্তানদের বক্তব্য থাকে সেটা শহীদ জননী উল্লেখ করে দিতেন। 

 

সভায় সম্প্রতি বাংলাদেশের নড়াইলে ধর্মান্ধ কতৃক পুলিশের উপস্থিতিতে শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাস -এর লাঞ্ছিত করার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয় এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হলেও ধর্মান্ধদের দৌরাত্ম্য তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন বক্তারা। 

 

সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্য থেকে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ওয়েলস ইউকের সভাপতি ও ইউকে বিডি টিভির চেয়ারম্যান মকিস মনসুর, ক্যালিফোর্নিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার রানা মাহমুদ,  যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহসভাপতি রাফায়েত চৌধুরী, নির্মূল কমিটি নিউইয়র্ক চ্যাপ্টারের সহসাধারণ সম্পাদক শুভ রায় ও অধ্যাপিকা হোসনে আরা। সভায় আরও সংযুক্ত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সউদ চৌধুরী,  সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মনির হোসেন, অধ্যাপক সাহদাত হাসান, প্রমুখ।