NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, সোমবার, মে ১৯, ২০২৫ | ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
নির্বাচন ডিসেম্বরেই হতে পারে তবে জুনের পরে নয় : প্রধান উপদেষ্টা নিউইয়র্কে ব্রুকলিন ব্রিজে জাহাজের ধাক্কায় নিহত ২, আহত ১৯ ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ হতেই গাজা-ইয়েমেনে ইসরায়েলি হামলা জোরদার বিমানবন্দরে অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া আটক টাইব্রেকারে হেরে বাংলাদেশের যুবাদের কান্না ৯ মাসে জুলাই যোদ্ধাদের ওপর ৩৮ হামলা, নিহত ২ : বাংলাফ্যাক্ট সৌদি পৌঁছেছেন ৪৯১০৩ হজযাত্রী, আরও একজনের মৃত্যু ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর: কূটনীতির আলোচনায় উপেক্ষিত মানবাধিকার আরব আমিরাতকে হারিয়ে সিরিজে শুভ সূচনা টাইগারদের মাইক্রোক্রেডিট ব্যাংক স্থাপন এখন সময়ের দাবি: প্রধান উপদেষ্টা
Logo
logo

নিজের ফাঁদে নিজেই ধরা খেলেন রাহুল গান্ধী


খবর   প্রকাশিত:  ১৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:১৬ এএম

>
নিজের ফাঁদে নিজেই ধরা খেলেন রাহুল গান্ধী

মোদি পদবী নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে আদালত থেকে দু’বছর কারাবাসের সাজা ঘোষণার পরদিনই ভারতের পার্লামেন্ট লোকসভার সদস্যপদ হারিয়েছেন বিরোধীদল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা রাহুল গান্ধী। আদালতের রায়কে আমলে নিয়ে শুক্রবার ভারতের পার্লামেন্ট লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা তার সদস্যপদ খারিজ করে দিয়েছেন।

লোকসভার স্পিকারের দপ্তর থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)-ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-র ৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করা হল।

২০১৯ সালের নির্বাচনে কেরালার সংসদীয় আসন ওয়ানাড থেকে নির্বাচিত হয়ে পার্লামেন্টের টিকিট পেয়েছিলেন তিনি। তবে তার সদস্যপদ খারিজ হয়ে যাওয়ায় ওয়ানাড আসনে এখন আর কোনো এমপি নেই।   

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সচল রাখতে নির্দিষ্ট সময় পর ওয়ানড আসনে উপনির্বাচন হবে, কিন্তু তাতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না রাহুল। এমনকি, ২০২৩ সালের লোকসভা নির্বাচন ও তার পরবর্তী ২০২৭ সালের নির্বাচনেও দাঁড়াতে পারবেন না তিনি। কারণ, যে আইনের ভিত্তিতে তার সংসদ সদস্যপদ খারিজ করা হয়েছে— সেই জনপ্রতিনিধিত্ব আইন বলছে, ভারতের কোনো পার্লামেন্ট সদস্য বা বিধায়ক যদি দু’বছর বা তার বেশি কারাবাসের সাজা পান— সেক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে তার সাংসদ বা বিধায়ক পদ চলে যাবে।

২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের ওপর ভিত্তি করে জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১) সংশোধন করা হয়। ঘটনাচক্রে, এক দশক আগে ওই রায় কার্যকর করার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছিলেন রাহুল নিজেই।

জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে আগে বলা ছিল, লোকসভার সদস্য-বিধায়ক দোষী সাব্যস্ত হলে তাতে স্থগিতাদেশ পাওয়ার জন্য তিন মাস সময় পাবেন। ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকার বনাম লিলি টমাস মামলায় আইনের সেই ধারাটি নাকচ করে রায় দেন—দু’বছরের কারাদণ্ডের সাজার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলেই পার্লামেন্ট সদস্য-বিধায়ক পদ চলে যাবে। তারপর জনপ্রতিনিধিত্ব আইনেও সংশোধন আনা হয়।

এই সংশোধনের পর ওই বছরই পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে কারাবাসের সাজাপ্রাপ্ত হন ক্ষমতাসীন কেন্দ্রীয় ইউপিএ জোট সরকারের অন্যতম নেতা ও পার্লামেন্ট সদস্য লালু প্রসাদ যাদব। এই জোটের নেতৃত্বে ছিল কংগ্রেস এবং ওই সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা মনমোহন সিংহ।

লালু প্রসাদের পদ বাঁচাতে মনমোহন সিংয়ের সরকার অধ্যাদেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিবর্তে পুরনো ব্যবস্থা বহাল রাখার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু রাহুল গান্ধী ‘ওই অধ্যাদেশ ছিঁড়ে বাতিল কাগজের ঝুলিতে ফেলে দেওয়ার উচিত’ বলে মন্তব্য করার পর পিছু হটে ইউপিএ সরকার।

এবার সুপ্রিম কোর্টের ২০১৩ সালের সেই নির্দেশের ভিত্তিতেই সাংসদ পদ খারিজ হল ওয়েনাডের এই  কংগ্রেস এমপির। ভারতের সাবেক আইনমন্ত্রী ও জেষ্ঠ্য কংগ্রেস নেতা কপিল সিবালও বলেছেন, সম্পূর্ণ আইনী প্রক্রিয়া মেনে বাতিল করা হয়েছে রাহুল গান্ধীর সংসদ সদস্যপদ।

‘রায় ঘোষণার পর গুজরাটের আদালত বিবাদিপক্ষকে উচ্চ আদালতে আপিলের জন্য ৩০ দিন সময় দিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু রায়ের ওপর কোনো সাসপেনশন বা স্থগিতাদেশ দেননি। আদালত যদি দণ্ডের ওপর স্থগিতাদেশ দিতেন, কেবল তাহলেই তিনি (রাহুল গান্ধী) পার্লামেন্টে নিজের সদস্যপদ টিকিয়ে রাখতে পারতেন,’ এনডিটিভিকে বলেন কপিল সিবাল।

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে কর্নাটকে প্রচারে গিয়ে রাহুল প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘সব চোরেদের পদবি ‘মোদী’ হয় কেন?’’ আইপিএল কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত ললিত মোদী, ব্যাঙ্ক-ঋণ মামলায় ‘পলাতক’ নীরব মোদীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তুলনা টেনেছিলেন তিনি। ওই ঘটনায় রাহুলের বিরুদ্ধে ‘পদবী অবমাননার’অভিযোগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৯ এবং ৫০০ ধারায় অপরাধমূলক মানহানির মামলা করেছিলেন গুজরাটের বিজেপি নেতা পূর্ণেশ মোদী। শুক্রবার সেই মামলাতেই দোষী সাব্যস্ত হলেন রাহুল।