খবর প্রকাশিত: ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১:২৩ এএম
ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটে ভোট শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) সকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নিজের এই রাজ্য ভোটগ্রহণ শুরু হয়। রাজ্য-স্তরের এই নির্বাচনকে মোদির জন্য সহজ পরীক্ষা বলেই মনে করা হচ্ছে।
মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যটিতে ক্ষমতায় রয়েছে এবং ভোট পূর্ব জরিপেও বিজেপির জয়েরই পূর্বাভাস মিলছে। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুজরাটে বৃহস্পতিবারের এই নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল টানা সপ্তম মেয়াদে জয়লাভ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। কিন্তু ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে অপ্রত্যাশিত ভাবে রাজ্যটিতে বেশ কঠোর প্রতিদ্বন্দ্বিতাও দেখা যেতে পারে।
রয়টার্স বলছে, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ১৯৯৫ সাল থেকে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় এই রাজ্যে কখনও হারেনি এবং কংগ্রেস দলকে টপকে ২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে নরেন্দ্র মোদি প্রায় ১৩ বছর রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
গুজরাট নির্বাচনের আগে পরিচালিত জনমত সমীক্ষায় দেখা গেছে, বিজেপি বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই এই রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে। অবশ্য মাত্র এক দশক আগে গঠিত হওয়া আম আদমি পার্টি (এএপি) কংগ্রেসকে টপকে গুজরাটের অন্যতম প্রধান বিরোধী দলে পরিণত হতে চলেছে বলেও আভাস মিলেছে।
আম আদমি পার্টি ভারতের দিল্লি রাজ্যের ক্ষমতায় রয়েছে এবং সম্প্রতি দেশটির গুজরাটেও নির্বাচনে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে গুজরাটের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর সুরাটের ভোটাররা দুই ধাপের নির্বাচনের প্রথম ধাপে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য ভোটকেন্দ্রে জড়ো হন। শহরটি কংগ্রেস এবং এএপির সঙ্গে বিজেপির ত্রিমুখী লড়াইয়ের সাক্ষী হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজ্যটিতে দ্বিতীয় ধাপের ভোট অনুষ্ঠিত হবে আগামী মঙ্গলবার এবং ফলাফল পাওয়া যাবে ৮ ডিসেম্বর। অবশ্য পাঁচ বছর আগে অনুষ্ঠিত রাজ্যটির সর্বশেষ নির্বাচনে ১৮২ আসনের বিধানসভায় বিজেপি ৯৯টি আসনে জয়লাভ করে এবং কংগ্রেস পেয়েছিল ৭৭টি আসন।
এবিপি-সিভোটার গত নভেম্বরে জানিয়েছিল, বিজেপি এবার ১৩১ থেকে ১৩৯ আসনের মধ্যে জিতবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া কংগ্রেস ৩১ থেকে ৩৯টি আসন জিততে পারে এবং আম আদমি পার্টি ১৫টি আসন পেতে পারে।
ইন্ডিয়া টিভি-ম্যাট্রিজ জনমত জরিপ অনুসারে, বিজেপি এই নির্বাচনে ১১৯টি পর্যন্ত আসন জিততে পারে। গত নভেম্বরে এই জনমত জরিপটি পরিচালিত হয়।
এএপি অবশ্য বিজেপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হতে ভোটারদের বিদ্যুৎ এবং অন্যান্য বিলগুলোতে ভর্তুকি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। অন্যদিকে, কংগ্রেস তার ভাগ্য পুনরুজ্জীবিত করার এবং কিছুটা জনপ্রিয়তা ফিরে পাওয়ার আশায় গত সেপ্টেম্বরে ভারতজুড়ে পদযাত্রা শুরু করেছে।
রয়টার্স বলছে, মুদ্রাস্ফীতি এবং বেকারত্ব নিয়ে তীব্র সমালোচনা সত্ত্বেও নরেন্দ্র মোদি এখনও ভারতের অনেক জায়গায় বেশ জনপ্রিয়। আর এই কারণে উত্তরাঞ্চলীয় হিমাচল প্রদেশে অনুষ্ঠিত রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনেও জয়ী হওয়ার প্রত্যাশা করছে বিজেপি।
গত মাসে রাজ্যটিতে ভোটগ্রহণ হয় এবং আগামী ৮ ডিসেম্বর সেখানকার ফলাফলও ঘোষণা করা হবে।