খবর প্রকাশিত: ২৯ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৯:০৩ এএম
কঠোর ‘জিরো কোভিড’ নীতির বিরুদ্ধে গত সপ্তাহে চীনের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করেন সাধারণ মানুষ। টানা চারদিন শেষে পঞ্চম দিনে পৌঁছায় তাদের এ বিক্ষোভ। তবে এখন বিক্ষোভকারীদের কঠোর হস্তে দমন শুরু করেছে দেশটির পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, পুলিশ মাঠে নামার পর এখন বিক্ষোভ প্রায় বন্ধই হয়ে গেছে। বেশ কয়েকটি বড় শহরে অসংখ্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এতে করে কিছু জায়গায় বিক্ষোভকারীরা জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলেও তারা ব্যর্থ হয়েছেন।
এছাড়া সাধারণ মানুষদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং তাদের মোবাইল ফোন চেক করার খবরও পাওয়া গেছে কিছু জায়গায়। মোবাইলে ভিপিএন ব্যবহার করছেন কিনা সেগুলো দেখা হচ্ছে। এছাড়া তাদের মোবাইলে চীনে নিষিদ্ধ টুইটার এবং টেলিগ্রামের মতো অ্যাপসগুলো আছে কিনা সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার (২৯ নভেম্বর) চীনের দক্ষিণাঞ্চলের জিনজিয়ানের উরুমছির একটি ভবনে অগ্নিকাণ্ডে দশজন মানুষ নিহত হন। ওই সময় সেখানে করোনার লকডাউন চলছিল। সাধারণ মানুষের দাবি কঠোর লকডাউন চলার কারণে ভবনে আটকে পড়াদের সঠিক সময়ে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এতে এত প্রাণহানী হয়েছে। এরপরই কঠোর কোভিড নীতি বাতিল করার দাবিতে রাস্তায় নামেন মানুষ। এমনকি তারা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পদত্যাগ দাবি করে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
কিন্তু সোমবার থেকে কঠোর হওয়া শুরু করে পুলিশ। এদিন রাজধানী বেইজিংয়ে বিক্ষোভের পরিকল্পনা করলেও পুলিশের কারণে জড়ো হতে পারেননি বিক্ষোভকারীরা। মঙ্গলবার সকাল থেকে পুলিশ বড় শহরগুলোতে টহল দেওয়া শুরু করে।
সোমবার রাতে ঝেংজুতে ছোট একটি দল জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।
বিবিসিকে একজন বিশ্লেষক জানিয়েছেন, চীনের বিক্ষোভ হয়ত এখনই পুরোপুরি নির্মূল হবে না। কারণ নির্দিষ্ট কারও নেতৃত্বে বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নামেননি। এরবদলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা করে তারা বিক্ষোভ করছেন।
তবে সিঙ্গাপুরের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ গবেষক ড্রিউ থম্পসন বলেছেন, এ ধরনের বিক্ষোভ দমন করার ক্ষমতা চীনের পুলিশের রয়েছে। তারা বেশ শক্তিশালী। ফলে আন্দোলন আরও লম্বা হবে এমন কোনো সম্ভাবনা নেই।
বার্তাসংস্থা এএফপিকে একজন নারী জানিয়েছেন, যারা বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন তাদের মধ্যে কয়েকজনকে পুলিশ স্টেশন থেকে ফোন দিয়ে অবস্থান জানতে চাওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, তার এক বান্ধবী পুলিশের ফোন পেয়ে তা ধরেননি। এতে করে তার বাড়িতে পুলিশ চলে গিয়েছিল। কিভাবে পুলিশ তাদের সম্পর্কে জানতে পেয়েছে তা কেউই জানেন না।