NYC Sightseeing Pass
Logo
logo

নারীদের ব্যাপারে অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগ রামদেবের বিরুদ্ধে


খবর   প্রকাশিত:  ১০ অক্টোবর, ২০২৪, ০১:১০ পিএম

নারীদের ব্যাপারে অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগ রামদেবের বিরুদ্ধে

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: ভারতের স্বঘোষিত ‘যোগগুরু’ রামদেব নতুন বিতর্কে জড়ালেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, নারীদের সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন।

একটি শিবিরে নারী অনুগামীদের সামনে যোগ প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন তিনি। সেই শিবিরে উপস্থিত ছিলেন মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবীশের স্ত্রী অম্রুতা ফড়নবীশ এবং মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের ছেলে শ্রীকান্ত শিন্ডে।

 

 

সেখানে রামদেবের একটি মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। তা থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। যদিও ওই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করা যায়নি।

ভিডিওটিতে রামদেব বলেছেন, নারীদের শাড়ি পরলে দেখতে ভালো লাগে, সালোয়ার পরলেও ভালো লাগে, আবার কিছু না পরলেও ভালো লাগে।

যোগগুরু মজার ছলে কথাটি বললেও নারী দর্শকদের পক্ষ থেকে কোনো হাততালি দেওয়া হয়নি। কেবল হাসতে দেখা যায় ফড়নবীশ-পত্নীকে।

রামদেবের ওই বিতর্কিত মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই নড়েচড়ে বসেছে মহিলা কমিশন। দিল্লির মহিলা কমিশনের চেয়ারপারসন ভিডিওটি টুইট করে রামদেবকে ক্ষমা চাওয়ার কথা বলেছেন।

রামদেবের ওই মন্তব্যকে ‘অত্যন্ত নিন্দাজনক’ বলেও আখ্যায়িত করেছেন তিনি। এই মন্তব্যকে ঘিরে রাজনীতির রং লাগতে বেশি সময় লাগেনি।

উদ্ধব-সেনার নেতা এ নিয়ে মহারাষ্ট্রের শাসক জোটের কড়া সমালোচনা করেছেন। উদ্ধব-ঘনিষ্ঠ নেতা সঞ্জয় রাউত জানিয়েছেন, ওই অন্যায় মন্তব্যের প্রতিবাদ করা উচিত ছিল ফড়নবীশ-পত্নীর। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, এই সরকার কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে জানে না।

এর আগে এ রকম নানা বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন রামদেব। ভারতের জনসংখ্যা কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, তার ‘মোক্ষম দাওয়াই’ দিয়েছিলেন রামদেব। যেসব দম্পতির দুইয়ের বেশি সন্তান, তাদের ভোটদানের অধিকার কেড়ে নেওয়ার প্রস্তাব দেন তিনি!

আলিগড়ের একটি অনুষ্ঠানে জনসমক্ষে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের এমন উপায় বাতলে দেন। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের এই একটা উপায়েই তিনি অবশ্য থেমে থাকেননি। প্রয়োজনে সরকারি চাকরি, চিকিৎসার সুবিধাও কেড়ে নেওয়ার কথা বলেন।  

তিনি বলেছিলেন, হিন্দু বা মুসলিম যে-ই হোন না কেন, যাদের দুইয়ের বেশি সন্তান, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে তাদের ভোটাধিকার, সরকারি চাকরি এবং চিকিৎসার সব সরকারি সুযোগ-সুবিধা কেড়ে নিতে হবে। তবেই দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।

রামদেব বিয়ে করেননি। তাঁর মতো অবিবাহিতদের বিশেষভাবে সম্মানিত করা উচিত বলেও মন্তব্য করেছিলেন। রামদেবের দাবি, তাঁদের মতো ব্যক্তিরাই ভারতের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছেন। হরিদ্বারে নিজের আশ্রমে রামদেবের ভক্তদের নিয়ে এক সমাবেশে এ কথা বলেছিলেন তিনি।

অ্যালোপ্যাথি ওষুধের কার্যকারিতা নিয়েও বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন রামদেব।   করোনা মহামারি আবহে রামদেব দাবি করেছিলেন, তার সংস্থার তৈরি আয়ুর্বেদিক ওষুধ কোরোনিল কভিড-১৯ ভাইরাস থেকে পুরোপুরিভাবে সুরক্ষা দিতে সক্ষম। একই সঙ্গে একটি ভিডিওতে তিনি কভিডের টিকা এবং এর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন করেন।  

তিনি আরো দাবি করেন, করোনার দুটি টিকা নেওয়ার পর ভারতে বেশ কয়েকজন চিকিৎসক মারা গেছেন। এমনকি অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসাকে ‘মূর্খ এবং দেউলিয়া’ বিজ্ঞান বলেও মন্তব্য করেছিলেন। এর পরই রামদেবের বিরুদ্ধে মুখ খোলে চিকিৎসক সংগঠনগুলো।

করোনা টিকার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ এনে রামদেবের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল চিকিৎসকদের সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)’। আইএমএ-এর আবেদনে কেন্দ্রের কী মত, সেই জবাব চেয়েও নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্ট। এর আগে তাঁর করা মন্তব্যের জন্য দিল্লি হাইকোর্টও রামদেবকে সতর্ক করেছিলেন।

সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস