খবর প্রকাশিত: ১৩ জানুয়ারী, ২০২৪, ০৫:১৪ এএম
বাংলাদেশে রেলেওয়েতে নিয়োগ পাওয়া অস্থায়ী শ্রমিকদের (টিএলআর) চাকরি স্থায়ীকরণ, আউটসোর্সিং প্রথা বাতিলসহ নানা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে বাংলাদেশ রেলওয়ের অস্থায়ী শ্রমিক পরিষদ।
রোববার (১৬ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের প্লাটফর্মে একটি ঝটিকা মিছিল করেন তারা। পরে বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজারের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন সংগঠনের সদস্যরা।
এসময় তাদের কয়েকজন গায়ে সাদা কাপড় জড়িয়েও অবস্থান নেন। সাদা কাপড়ে লেখা ছিল— ‘আউটসোর্সিং কালো আইন মানি না, মানবো না’; ‘৬ দফা দাবির বাস্তবায়ন চাই’; ‘লাশ হয়ে ফিরতে চাই, তবুও বেকার হয়ে নয়’; ‘আউটসোর্সিং বাতিল চাই’ ইত্যাদি।
বাংলাদেশ রেলওয়ের জনবল সংকট নতুন কথা নয়। জনবল পূরণে শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানটি শূন্য পদের বিপরীতে এত দিন অস্থায়ী শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে আসছিল। কিন্তু বর্তমানে আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লোক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এজন্য অস্থায়ী শ্রমিকরা আউটসোর্সিং প্রক্রিয়া বাতিল করার দাবি তুলেছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের অস্থায়ী শ্রমিকদের পদগুলো হচ্ছে— মেকানিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং (গেট কিপার, ওয়েম্যান, লোকো খালাসী, ক্যারেজ খালাসী) সিগন্যালিং ইলেকট্রিক্যাল ও ট্রান্সপোর্টেশন (গেট কিপার, পোর্টার, পয়েন্টসম্যান) ইত্যাদি।
বাংলাদেশ রেলওয়ের অস্থায়ী শ্রমিক পরিষদের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন বলেন, এখানে দারোয়ান, রেলের ইঞ্জিনিয়ারিংসহ বিভিন্ন পদে অস্থায়ীভাবে মোট সাত হাজার শ্রমিক কর্মরত আছেন। আমাদের মধ্যে অনেকের চাকরির বয়স ৩-১০ বছর। বর্তমানে আমাদের বয়স ৩৫-৪০ বছরের মধ্যে। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের অন্য কোথাও চাকরি করার বয়স নেই।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়েতে কখনো আউটসোর্সিং খাত ছিল না। বর্তমানে আমাদের অস্থায়ী শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার করার জন্য এটা চালু করা হয়েছে। যা আমাদের জীবন ধ্বংস করার খাত বলে বিবেচিত। আমরা এই আউটসোর্সিং প্রথা বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।
সংগঠনের সদস্য সচিব মোহাম্মদ হোসেন বলেন, রেলওয়েত ব্রিটিশ আমল থেকেই অস্থায়ী শ্রমিকরা ছিলেন। পরে তাদের শ্রম আইনের ভিত্তিতে স্থায়ী করা হতো। কিন্তু বর্তমানে তা কার্যকর হচ্ছে না। শ্রম আইনে বলা আছে, অস্থায়ীভাবে তিন বছর কাজ করার পর রাজস্ব খাতে চাকরি স্থায়ী হবে। বাংলাদেশ রেলওয়ে ২০১৭ সালে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। কিন্তু বিষয়টি এখন পর্যন্ত কার্যকর হয়নি।
তিনি বলেন, গত ৩০ জুন রেলের সব অস্থায়ী শ্রমিককে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য একটি চিঠি জারি করা হয়েছে। এসময় রেলের চট্টগ্রাম ও লালমনিরহাট বিভাগের ক্যারেজ শ্রমিকদের কাজ থেকে বাইরে রাখা হয়। ধীরে ধীরে সব অস্থায়ী শ্রমিককে বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। গত জুন মাস থেকে আমাদের কাজের কোনো বাজেট নেই। আমরা রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, সচিব হুমায়ুন কবির, মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদারের কাছে চিঠি দিয়েছি। রেলের মহাপরিচালক আমাদের বলেছেন, আগামী ডিসেম্বরের পর তোমাদের চাকরি নেই।
অবস্থান কর্মসূচিতে শতাধিক রেলের অস্থায়ী শ্রমিক অংশ নিয়েছেন। তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এখানে অবস্থান করবেন বলে জানান।