খবর প্রকাশিত: ১২ মে, ২০২৫, ০৮:০৫ পিএম
ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নবায়নসহ গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের উদ্যোগের অংশ হিসেবে নিজেদের কাছে থাকা সর্বশেষ জীবিত মার্কিন জিম্মি এডেন আলেক্সান্ডারকে মুক্তি দেওয়া হবে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস।
স্থানীয় সময় রোববার (১১ মে) হামাসের দুই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই আলেক্সান্ডারকে মুক্তি দেওয়া হতে পারে। এছাড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হামাসের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আলেক্সান্ডারকে সোমবার (১২ মে) মুক্তি দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। হামাসকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে একটি উপহার দাও এবং বিনিময়ে তিনি আরও বড় একটি উপহার দেবেন।
এমন এক সময়ে এই ঘোষণা এসেছে, যখন মধ্যপ্রাচ্য সফরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ট্রাম্প। সম্প্রতি যুদ্ধবিরতি আলোচনায় গতি আনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এরপরই মার্চে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেস্তে যাওয়ার পর প্রথমবারের মতো কোনো বন্দিমুক্তির কথা এসেছে। উইটকফ বলেন, ট্রাম্পের প্রতি সদিচ্ছা প্রদর্শনের প্রতীক হিসেবে আলেক্সান্ডারকে মুক্তি দিতে সম্মত হয়েছে হামাস।
রোববার নিজের সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোস্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, হামাসের এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্র এবং মধ্যস্থতাকারী কাতার ও মিসরের প্রচেষ্টার প্রতি সদিচ্ছার একটি পদক্ষেপ।
ট্রাম্প আরও বলেন, আশাকরি এটা সেই চূড়ান্ত ধাপগুলোর প্রথমটি, যা এই নিষ্ঠুর সংঘাতের অবসান ঘটাবে। আমি সেই উদযাপনের দিনের অপেক্ষায় আছি।
এ বিষয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিনাশর্তে আলেক্সান্ডারকে মুক্তি দিতে সম্মত হয়েছে হামাস। এই পদক্ষেপটি একটি যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনার পথ খুলে দিতে পারে।
তবে এর আগে হামাসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি আলোচনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন নেতানিয়োহু। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি করার শর্তে আলেক্সান্ডারসহ চার জিম্মির মরদেহ ফেরত দেওয়ার প্রস্তাব দেয় হামাস। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই আবার যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েল।
উইটকফ বলেন, আলেক্সান্ডারকে মুক্তি দেওয়ার মাধ্যমে হামাসের লক্ষ্য হলো যুদ্ধবিরতি আলোচনা পুনরায় শুরু করা, আরও বন্দিমুক্তি নিশ্চিত করা এবং গাজায় মানবিক সহায়তার প্রবাহ বাড়ানো।
এদিকে হামাস নেতা খালিল আল-হায়া বলেন, গত কয়েক দিনে দলটি যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতি, যুদ্ধের সমাপ্তি, গাজায় বন্দি থাকা ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি বন্দিদের বিনিময়, এবং গাজার শাসনক্ষমতা একটি নিরপেক্ষদের হাতে হস্তান্তর করার লক্ষ্যে আলোচনায় অংশ নিতে প্রস্তুত রয়েছে হামাস।
এদিকে গাজায় অব্যাহত রয়েছে ইসরায়েলের হামলা। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, শনিবার রাত ও রোববার সকালের বিমান হামলায় গাজায় ১৫ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।