NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, শনিবার, মে ১৭, ২০২৫ | ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
মাইক্রোক্রেডিট ব্যাংক স্থাপন এখন সময়ের দাবি: প্রধান উপদেষ্টা ভারত ও পাকিস্তানের পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা ঠেকিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র -ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজায় বড় সামরিক অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই আরও গভীর তুরস্ক-পাকিস্তান সম্পর্ক রোনালদোকে ছাড়া খেলতে নেমে এবার বড় ধাক্কা আল নাসরের ফিরছে লাক্স সুপারস্টার প্রতিযোগিতা অভ্যুত্থানের ৯ মাস পরও বড় পরিবর্তন সহজ হচ্ছে না এনসিপির যুব সংগঠন ‘জাতীয় যুবশক্তি’ স্বাগত জানাতে মেলোনিকে দেখে হাঁটু গেড়ে বসলেন আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী দুই ঘণ্টাতেই শেষ রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনা, মেলেনি সমাধান
Logo
logo

মুন্সীগঞ্জের হত্যা মামলার আসামি নিউ ইয়র্কে গ্রেপ্তার


খবর   প্রকাশিত:  ০৬ এপ্রিল, ২০২৪, ০৭:৪০ পিএম

মুন্সীগঞ্জের হত্যা মামলার আসামি নিউ ইয়র্কে গ্রেপ্তার

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে একজনকে হত্যার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ গত বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটান থেকে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের ফৌজদারি শাখার প্রধান ও মুখ্য উপসহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নিকোল এম আর্জেন্টিয়েরি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিককে হত্যার অভিযোগ রয়েছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের নথিতে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে আমেরিকান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ জানিয়েছে, হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে গত বৃহস্পতিবার আদালতে তোলা হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগ আনা হয়েছে। একটি হলো বিদেশে একজন মার্কিন নাগরিককে হত্যা। অন্যটি সশস্ত্র সহিংসতার সময় আগ্নেয়াস্ত্র সঙ্গে রাখা, বহন ও ব্যবহারের বিষয়ে।
অপরাধ প্রমাণিত হলে যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। 

 

মুখ্য উপসহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নিকোল এম আর্জেন্টিয়েরি বলেন, ‘যখন একজন আমেরিকান বিদেশে আরেকজন আমেরিকানকে হত্যা করেছেন, তখন তাঁকে গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে। সহিংস অপরাধ যেখানেই সংঘটিত হোক না কেন, ফৌজদারি বিচার শাখা মার্কিন নাগরিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের তদন্ত ও বিচার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অপরাধীদের তাঁদের কাজের জন্য জবাবদিহি করতে হবে।

 

আদালতের নথি অনুযায়ী, নিউ ইয়র্কের ব্রংকসের বাসিন্দা গেনেট রোজারিও (৫২) বাংলাদেশে মাইকেল রোজারিওকে ২০২১ সালের ১১ জুন বা কাছাকাছি সময়ে হত্যা করে। গেনেট রোজারিওর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছেন এবং এর মাধ্যমে হত্যা করেছেন। 

নিউ ইয়র্কের সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্টের মার্কিন অ্যাটর্নি ড্যামিয়ান উইলিয়ামস বলেন, ‘মার্কিন নাগরিক গেনেট রোজারিও বাংলাদেশে একজন আমেরিকানকে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায়, আইন প্রয়োগকারী অংশীদারদের সঙ্গে এই অফিসের (অ্যাটর্নি অফিস) যোগাযোগ অনেক বিস্তৃত। নিউ ইয়র্কের নারী ও পুরুষদের সুরক্ষায় আমাদের অঙ্গীকার ভৌগোলিক সীমানার বাইরেও রয়েছে।

 

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল তদন্ত ব্যুরো এফবিআইয়ের লস অ্যাঞ্জেলেস ফিল্ড অফিসের ভারপ্রাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর মেহতাব সাইদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ ও আমেরিকান নাগরিকদের ওপর প্রভাব ফেলে, বিদেশে সংঘটিত এমন অপরাধগুলো তদন্তে এফবিআই উল্লেখযোগ্য সম্পদ ব্যয় করছে। বিদেশের মাটিতেও কেউ আমেরিকানদের সঙ্গে অপরাধ করলে এফবিআইয়ের তদন্তের মাধ্যমে তাঁকে জবাবদিহি করানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।
 
এফবিআই নিউ ইয়র্ক ফিল্ড অফিসের ভারপ্রাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর তৃতীয় জেমস এইচ স্মিথ বলেন, গেনেট রোজারিও ঠাণ্ডা মাথায় হিসাব-নিকাশ করেই আমেরিকান এক নাগরিককে বিদেশের মাটিতে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অপরাধী যেখানেই অপরাধ করুন না কেন, তাঁকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে—গেনেট রোজারিওকে গ্রেপ্তার এফবিআইয়ের ওই প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। এফবিআইয়ের লস অ্যাঞ্জেলেস ও নিউ ইয়র্ক ফিল্ড অফিস গেনেট রোজারিওর বিরুদ্ধে তদন্ত করেছে। 

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১১ জুন মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে মাইকেল রোজারিও (৭২) নামে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসীকে গুলি করে হত্যা করেন তাঁর ভাতিজা গেনেট রোজারিও। ওই দিন রাত ১২টার দিকে জেলার একমাত্র খ্রিস্টানপল্লী কেয়াইন ইউনিয়নের শুলপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সেই রাতেই স্থানীয় পুলিশ গেনেট রোজারিওকে একনলা বন্দুক ও গুলিসহ গ্রেপ্তার করেন। পরে গেনেট রোজারিও আদালত থেকে জামিন নিয়ে পালিয়ে যান।

ওই হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে কেয়াইন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নয়ন রোজারিও সাংবাদিকদের বলেছিলেন, শুলপুর গ্রামের মাইকেল রোজারিওর সঙ্গে তাঁর বড় ভাই প্রয়াত বাড়ন রোজারিওর ছেলে গেনেট রোজারিওর জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে একাধিক মামলাও ছিল। চাচা-ভাতিজা উভয়েই পরিবার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতেন। হত্যাকাণ্ডের প্রায় দুই মাস আগে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ নিরসনে তাঁরা দুজনই বাংলাদেশে আসেন।

২০২১ সালের ১১ জুন শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে একটি সালিসি বৈঠক হয়। সেখানে জমিজমা নিয়ে বিরোধের অবসানও ঘটে। কিন্তু সেদিনই রাত ১২টার দিকে ভাতিজা গেনেট চাচা মাইকেল রোজারিওকে গুলি করেন। গুরুতর অবস্থায় মাইকেল রোজারিওকে ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে মারা যান।