এবার বাংলা একাডেমি নিজেই বইমেলার সার্বিক আয়োজনের দায়িত্বে থাকছে।
বইমেলার বিন্যাসে এবার বড় কোনো পরিবর্তন নেই। তবে এবার লিটল ম্যাগাজিন চত্বর স্থানান্তরিত হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত মঞ্চের কাছাকাছি গাছতলায়। টিএসসি, দোয়েল চত্বর, এমআরটি বেসিং প্লান্ট এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন অংশে মোট আটটি প্রবেশ ও বাহির পথ থাকবে।
ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে বইমেলা। তবে রাত সাড়ে ৮টার পর কেউ বাইরে থেকে মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবে না। ছুটির দিন বইমেলা চলবে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। আর শহীদ দিবস ২১ ফেব্রুয়ারি মেলা শুরু হবে সকাল ৮টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। এ ছাড়া প্রতি শুক্র ও শনিবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত থাকবে ‘শিশুপ্রহর’। এ সময় অগ্রাধিকার থাকে অভিভাবকের সঙ্গে আশা শিশুদের।
নিরাপত্তা নিয়ে পুলিশ কর্তৃপক্ষের আশ্বাস
বইমেলায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান। গতকাল বুধবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলা উপলক্ষে নিরাপত্তা পরিকল্পনা সম্পর্কে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি।
কমিশনার হাবিবুর রহমান জানান, বইমেলা ঘিরে সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকি নেই। তবে সব দিক মাথায় রেখে নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কয়েক স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
কমিশনার আরো বলেন, মেলায় আইন-শৃঙ্খলার জন্য ক্ষতিকর বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে—এমন কোনো বিতর্কিত বই এলে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।
হাবিবুর রহমান বলেন, ‘মেলায় মানুষের ব্যাগ তল্লাশিসহ সব নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ তত্পর থাকবে। ডগ স্কোয়াড, বোম ডিসপোজাল টিম থাকবে। পুলিশি নিরাপত্তার বাইরেও ব্রেস্ট ফিডিং সেন্টার (শিশুর স্তন্যপান কেন্দ্র), ব্লাড ব্যাংক, বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা এবং শিশু হারিয়ে গেলে তাকে খুঁজে দেওয়ার ব্যবস্থাও থাকবে মেলায়।’
এবার মেট্রো রেলের জন্য মেলায় দর্শনার্থী বাড়বে বলে উল্লেখ করেন হাবিবুর রহমান। কমিশনার জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মোট পাঁচটি গেট থাকবে। নারী-পুরুষের জন্য আলাদা গেটের ব্যবস্থা থাকবে।
সকালে শুরু হচ্ছে জাতীয় কবিতা উৎসব
আজ সকাল ১০টায় শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী কবিতা উৎসবে থাকবে কবিতা পাঠ, সেমিনার, আবৃত্তি ও সংগীতের আয়োজন। এসবের মধ্য দিয়ে তুলে ধরা হবে ‘যুদ্ধ গণহত্যা সহে না কবিতা’ স্লোগান। উৎসবের দ্বিতীয় দিন বিকেলে জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কারপ্রাপ্ত কবির নাম ঘোষণা করবে।
এবারের উৎসব উৎসর্গ করা হয়েছে প্রয়াত কবি আসাদ চৌধুরী, কবি মোহাম্মদ রফিক, কবি জাহিদুল হক, কবি বুলবুল মহলানবীশ ও কবি হানিফ খানকে। আয়োজকরা জানিয়েছেন, উৎসবে প্রায় আটটি দেশের কবিরা অংশ নেবেন। উৎসবের পোস্টার, ব্যাকড্রপ, স্যুভেনিরের প্রচ্ছদে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যার ওপর ভারতীয় শিল্পী নীরেন সেনগুপ্তের আঁকা ছবি, ১৯৩৭ সালে পাবলো পিকাসোর আঁকা বিশ্ববিখ্যাত শিল্পকর্ম ‘গোয়ের্নিকা’ ও গাজায় চলমান হত্যাকাণ্ডের ওপর রাশিদ বাউহামিদির শিল্পকর্ম ‘মা ও শিশু’ ব্যবহার করা হয়েছে।