আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: ইউক্রেনের যুক্ত করে নেওয়া চার অঞ্চলে সামরিক আইন জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বুধবার রুশ ফেডারেশনের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে এই আদেশ জারি করেন তিনি।
রাশিয়ার দখল করে নেওয়া ইউক্রেনীয় অঞ্চলগুলো হলো জাপোরিঝিয়া, খেরসন, লুহানস্ক ও দোনেৎস্ক। গত মাসে এ চারটি অঞ্চল নিজেদের বলে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয় রাশিয়া।
প্রতিক্রিয়ায় এসব এলাকায় জোরালো পাল্টা হামলা চালাচ্ছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। এই পরিস্থিতিতে সামরিক আইন জারির পদক্ষেপ নিলেন পুতিন। বিবিসির রাশিয়া বিষয়ক সম্পাদক স্টিভ রোজেনবার্গসহ পর্যবেক্ষকরা বলছেন, রাশিয়া যে চাপে পড়েছে প্রেসিডেন্টের সর্বশেষ উদ্যোগ তারই ইঙ্গিত।
সামরিক আইন জারি হওয়ায় সংশ্লিষ্ট এলাকার জনসাধারণের চলাচলের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপিত হবে। বৃহস্পতিবার থেকে সামরিক আইন কার্যকর হবে। এই আইন কার্যকর হলে অঞ্চল চারটির অধিবাসীরা অন্য এলাকায় যেতে পারবে না।
সরকারের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের আগে এক ভাষণ দেন পুতিন। ইউক্রেনের ওই অঞ্চলগুলোয় যুদ্ধ জোরদার করতে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্তিনের নেতৃত্বে একটি বিশেষ কাউন্সিল গঠনের আদেশ দেন তিনি।
পুতিন আরো বলেন, এই অঞ্চলগুলোর সরকারপ্রধানদের জরুরি কিছু ক্ষমতা দেওয়া হবে। তবে তা কী সেটি খুলে বলেননি তিনি।
পুতিনের ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ পরিকল্পনা অনুযায়ী চলেনি। ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণের ফলে রাশিয়া তার দখলকৃত অঞ্চল হারাচ্ছে। অন্যদিকে ইউক্রেন সীমান্তবর্তী রুশ অঞ্চলগুলো নিরন্তর গোলাগুলির শিকার হচ্ছে। তবে এতে হতোদ্যম না হয়ে পুতিন দৃশ্যত বরং যুদ্ধের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছেন।
সামরিক আইন জারি কী তফাত বয়ে আনবে তা স্পষ্ট নয়। নিঃসন্দেহে রাশিয়ার হুকুমে ইউক্রেনীয় সেনারা তাদের অস্ত্র সমর্পণ করতে রাজি হবে না। বরং কিয়েভ হারানো অঞ্চল ফিরে পেতে বদ্ধপরিকর।
ক্রেমলিন নেতা পুতিন তিনটি ভিন্ন নিরাপত্তা স্তর চালুর মাধ্যমে রাশিয়াজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করেছেন।
ইউক্রেনের সঙ্গে সীমান্তের কাছাকাছি অঞ্চলগুলোর (যেমন বেলগোরোদ, ব্রায়ানস্ক, ক্রাসনোদর এবং রোস্তভ অঞ্চল) পাশাপাশি সংযুক্ত ক্রিমিয়াতে ‘মাঝারি স্তরের সতর্কতা’ ঘোষণা করা হয়েছে। গৃহীত ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে থাকবে নিরাপত্তা এবং জনশৃঙ্খলা বৃদ্ধি করা।
পরবর্তী স্তরটি হলো ‘বাড়তি প্রস্তুতি’। এটি মস্কোসহ রাশিয়ার মধ্য এবং দক্ষিণ অঞ্চলে প্রযোজ্য।
সর্বনিম্ন নিরাপত্তা স্তর দেশের বাকি অংশে প্রযোজ্য, যার মধ্যে রয়েছে উত্তর রাশিয়া, সাইবেরিয়া এবং রাশিয়ার দূরপ্রাচ্য। সূত্র : বিবিসি।