আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: বিজয়া দশমীর দিন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার মালবাজারে নিরঞ্জন ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন দিতে গিয়ে সাতজনের প্রাণহানি ঘটেছে।

আরো অন্তত ২০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। বুধবার রাতে মালবাজার কলেজ সংলগ্ন মাল নদীতে প্রতিমা বিসর্জন চলাকালীন নদীতে হঠাৎ করেই হড়পা বান চলে আসে। সেই সময় নদীর মাঝে কয়েক হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

 

পানির প্রবল বেগে প্রতিমা বিসর্জন দিতে এবং দেখতে আসা নারী, শিশুসহ প্রচুর লোক ভেসে যায়। এখন পর্যন্ত সাত জনের মরদেহ নদী থেকে উদ্ধার করা গেছে।  

আহতদের মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অনেকেই এখনো নিখোঁজ রয়েছে।  

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, নদীতে বালুর বাঁধ দিয়ে পানির মূল স্রোতকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে নদীর মাঝে নিরঞ্জন ঘাট তৈরি করা হয়েছিল। মালবাজার মহকুমার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিমা বিসর্জন দিতে আসা এবং বিসর্জন দেখতে প্রচুর মানুষ এখানে জমা হয়েছিল।  

আবহাওয়াও যথেষ্ট মনোরম ছিল, মালবাজারে এই সময় বৃষ্টি হয়নি। ফলে সবাই নিশ্চিন্তেই নদীতে নেমে প্রতিমা বিসর্জন করছিল। বিসর্জন চলাকালীন বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ নদীর পানি হঠাৎ করেই বাড়তে শুরু করে এবং মুহূর্তের মধ্যে নদী ভয়াবহ চেহারা ধারণ করে। পানি বেড়ে যাওয়ায় বালুর বাঁধ উপচে মূল নদীর পানি নিরঞ্জন ঘাটের দিকে চলে আসে।  

নদীর মাঝে প্রতিমা নিয়ে একটি ট্রাক আটকে পড়ে। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই নদীতে থাকা প্রচুর লোক ভেসে যেতে থাকে। প্রাথমিকভাবে নদীর পারে থাকা মানুষের এই বীভৎস দৃশ্য দেখে আতঙ্কে চিৎকার করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।  

পরে তারাও নদীতে ভেসে যাওয়া ব্যক্তিদের টেনে পাড়ে তোলার চেষ্টা করতে থাকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের চেষ্টায়ই বহু মানুষকে নদী থেকে বাঁচানো সম্ভব হয়।

এখন পর্যন্ত এক নারী, এক শিশুসহ মোট সাতজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। যারা প্রবল স্রোতে ভেসে গিয়েছিল, তাদের অনেকেই এখনো নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে।  

মাল পৌরসভা এবং স্থানীয় বাসিন্দারা নিখোঁজদের খোঁজে অনুসন্ধান চালাচ্ছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ এবং বিপর্যয় মোকাবেলা দপ্তরের কর্মীরাও পৌঁছেছেন। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।  

মাল নদীর উৎস পাহাড়ে, ফলে মালবাজারে বৃষ্টি না হলেও পাহাড়ে হওয়া হঠাৎ প্রবল বৃষ্টিতে নদীতে মাঝে মাঝেই জলোচ্ছ্বাস দেখা দেয়। কিছুদিন আগে এই নদীতেই একটি ট্রাক হড়পা বানে ভেসে গিয়েছিল।
সূত্র : আজকাল।