চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন, চরম খাদ্য সংকট ও ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই শুক্রবার (৬ জুন) ঈদুল আজহা উদযাপন করছে গাজাবাসী। ধ্বংসপ্রাপ্ত মসজিদ ও বাড়িঘরের বাইরে খোলা আকাশের নিচেই নামাজ আদায় করেছেন তারা।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার অধিকাংশ অঞ্চল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ায় পুরুষ ও শিশুরা বাধ্য হয়ে উন্মুক্ত জায়গায় ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। মুসলিমদের অন্যতম প্রধান এই ধর্মীয় উৎসবের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী জোগাড়ে হিমশিম খাচ্ছে সবাই। সামান্য যা কিছু জোগাড় করতে পেরেছে, তাই দিয়েই উৎসবের আয়োজন করছে পরিবারগুলো।

 

খান ইউনিস শহরে ঈদের নামাজ শেষে কামেল এমরান বলেন, এই ঈদ ফিলিস্তিনিদের জন্য সবচেয়ে কঠিন ঈদ। এই অন্যায় যুদ্ধের কারণে কোনো খাবার নেই, ময়দা নেই, আশ্রয় নেই, মসজিদ নেই, ঘর নেই, বিছানা নেই... পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ।

 

ইসলামী চন্দ্রমাস জিলহজের ১০ম দিনে ঈদুল আজহা উদযাপন করা হয়। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় বছরের মতো গাজার মুসলিমরা সৌদি আরবে গিয়ে হজ পালন করতে পারেননি।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে গাজায় এখন পর্যন্ত ৫৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা বেশি।

ইসরায়েলি অভিযানে গাজার বেশিরভাগ অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। উপত্যকার ২০ লাখ ফিলিস্তিনির প্রায় ৯০ শতাংশই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

 

দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজায় খাদ্য ও ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ রাখার পর সম্প্রতি জাতিসংঘের জন্য সামান্য কিছু ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। তবে জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক বিধিনিষেধ ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে অনেক ত্রাণই বিতরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরে গাজার জনগণ চরম খাদ্য সংকটে পড়তে পারে। প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ চরম খাদ্যাভাব ও অপুষ্টিতে ভুগতে পারেন।

এফএও-র জরুরি বিভাগের পরিচালক রেইন পলসন বলেন, গাজা উপত্যকায় দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি পুরো জনগণের ওপরই নেমে এসেছে।

 

 

 

গত দুই সপ্তাহে গাজায় নতুন ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রগুলোতে প্রায় প্রতিদিনই গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এসব এলাকায় অবস্থানরত ইসরায়েলি সেনারা গুলি চালিয়েছেন। গাজার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এতে এ পর্যন্ত ৮০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

সূত্র: এপি, ইউএনবি