বাগদাদ ও ওয়াশিংটন ইরাকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা শুরুর উদ্দেশ্যে একটি কমিটি গঠন করতে সম্মত হয়েছে, যাতে পর্যায়ক্রমে সেনা প্রত্যাহার এবং জোটের অবসানের জন্য একটি সময়সূচি নির্ধারণ করা যায়। ইরাকের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ কথা জানিয়েছে।
ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের আড়াই হাজার সেনা রয়েছে। তারা ইসলামিক স্টেটের (আইএস) পুনরুত্থান ঠেকাতে স্থানীয় বাহিনীকে পরামর্শ দেয় এবং সহায়তা করে।
ইরাকের সরকার বলেছে, আইএস পরাজিত হয়েছে এবং জোটের কাজ শেষ হয়ে গেছে। তবে তারা জোটের সদস্যদের সঙ্গে প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামে সামরিক সহযোগিতাসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্থাপন করতে আগ্রহী।
ইরাক আরো বলেছে, ইরান সমর্থিত মিলিশিয়াদের ঘাঁটিতে প্রায় প্রতিদিনের হামলা এবং মার্কিন পাল্টাহামলার কারণে অস্থিতিশীল অবস্থায় জোটের উপস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলি যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে উত্তেজনাও বাড়ছে।
ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনীর কার্যক্রমের প্রয়োজনীয়তা ও কার্যকারিতা এবং তারা যে হুমকির সম্মুখীন হয় তা মূল্যায়ন করতে সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে, যার ভিত্তিতে উভয় পক্ষ নির্ধারণ করবে কত দ্রুত জোটটি পর্যায়ক্রমে বিচ্ছিন্ন হবে এবং ভবিষ্যতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক কেমন হবে। বুধবার রয়টার্স জানিয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরাক আলোচনা শুরু করতে প্রস্তুত।
মার্কিন ও ইরাকি কর্মকর্তারা বলছেন, প্রক্রিয়াটি দীর্ঘ না হলেও অনেক মাস লাগবে এবং ফলাফল অস্পষ্ট ও মার্কিন সেনা প্রত্যাহার অপরিহার্য হবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
ওয়াশিংটন আশঙ্কা করছে, দ্রুত সেনা প্রত্যাহার একটি নিরাপত্তা শূন্যতা তৈরি করতে পারে এবং চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইরান বা আইএস সে সুযোগ নিতে পারে, যারা মরুভূমি অঞ্চলে স্লিপার সেল বজায় রেখেছে এবং কোনো অঞ্চল দখলে না থাকা সত্ত্বেও নিম্নস্তরের আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে আক্রমণ করে এবং ২০০৩ সালে দেশটির নেতা সাদ্দাম হোসেনকে ক্ষমতাচ্যুত করে, বছরের পর বছর ধরে চলা বিদ্রোহী যুদ্ধ এবং ইরাকের জাতিগত ও ধর্মীয় গোষ্ঠীর সঙ্গে লড়াই শুরু করে। তারা ২০১১ সালে সেনা প্রত্যাহার করলেও তিন বছর পর দেশটিতে আইএসের উত্থানের পর হাজার হাজার সেনাকে ফেরত পাঠায়।