স্প্যানিশ লা লিগার শিরোপা নির্ধারণ হয়েই গেলো বলা যায়। রিয়াল মাদ্রিদকে মৌসুমের শেষ এল ক্ল্যাসিকোয় ৭ গোলের থ্রিলারে ৪-৩ গোলে হারিয়ে লিগে ৭ পয়েন্টের স্পষ্ট ব্যবধান তৈরি করলো বার্সেলোনা। দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিক করলেন কিলিয়ান এমবাপে। তবুও বার্সার কাছে হারতে হলো তার দল রিয়াল মাদ্রিদকে।
৩৫ ম্যাচ শেষে বার্সেলোনার পয়েন্ট ৮২। সমান ম্যাচে ৭৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রইলো রিয়াল মাদ্রিদ। লিগে ম্যাচ বাকি আর ৩টি। পরের ম্যাচ জিতলেই লা লিগার চ্যাম্পিয়নশিপ নিশ্চিত করে ফেলবে লামিনে ইয়ামালরা। রিয়াল মাদ্রিদের লক্ষ্য ছিল এই ম্যাচে জিততে পারলে, ব্যবধান ১ পয়েন্টে কমিয়ে আনতে পারবে তারা; কিন্তু সেটা আর সম্ভব হলো না আনচেলত্তির শিষ্যদের।
তবে ম্যাচে অনেকগুলো গোল অফসাইড এবং ভিএআরের কারণে বাতিল হয়ে যায়। না হয়, ম্যাচের ফল ভিন্নও হতে পারতো। শেষ মুহুর্তে ফারমিন লোপেজ দুর্দান্ত এক গোল করেছিলেন। স্কোর দেখাচ্ছিল ৫-৩; কিন্তু পরে ভিএআরের কারণে সেটা বাতিল হয়ে যায়। এমবাপের দুটি গোল বাতিল হয় অফসাইডের কারণে।
শুধু তাই নয়, বেশ কিছু দারুণ সুযোগও মিস করেন এমবাপে। গোলরক্ষক সিজনিকে ওয়ান-টু ওয়ান পেয়েও বার্সার জালে বল জড়াতে পারেননি। একইভাবে রাফিনহা ও লামিনে ইয়ামালও বেশ কয়েকটি দারুণ সুযোগ মিস করেন রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কুর্তোয়ার কারণে।
ম্যাচের ৫ম মিনিটেই পেনাল্টি। গোল করে ফেললেন কিলিয়ান এমবাপে। ১৪তম মিনিটে আবারও গোল। গোলরক্ষক সেজনিকে একা পেয়ে বার্সার জালে বল জড়াতে মোটেও কষ্ট করতে হয়নি ফরাসি স্ট্রাইকার এমবাপেকে।
অর্থ্যাৎ, এল ক্ল্যাসিকো ম্যাচের বয়স যখন ১৪ মিনিট, তখনই ২-০ গেলে এগিয়ে গেলো রিয়াল মাদ্রিদ। এমন পরিস্থিতিতে ম্যাচের ফল কী হতে পারে? না, খুব সহজে এর উত্তর দেয়া সম্ভব নয়।
কারণ, প্রতিপক্ষ দলটির নাম তো বার্সেলোনা। চলতি মৌসুমে এ নিয়ে চতুর্থবার এল ক্ল্যাসিকোয় মুখোমুখি দুই দল। আগের তিনবারই বার্সার কাছে হারতে হয়েছে রিয়াল মাদ্রিদকে। তবে, আজকের এল ক্ল্যাসিকো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই ম্যাচ দিয়েই লা লিগা শিরোপা নির্ধারণ হবে, নয়তো শেষ ম্যাচ পর্যন্ত লড়াই জারি থাকবে।
২-০ গোলে এগিয়ে থাকার পর রিয়াল ফুটবলাররাও সম্ভবত আত্মতুষ্টিতে ভুগতে শুরু করেছিলেন। যার খেসারত দিতে হলো প্রথমার্ধের বাকি সময়ে। ঘরের মাঠ এস্টাডি অলিম্পিক লুইস কোম্পানিসে ম্যাচের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় বার্সেলোনা। ১৯তম মিনিটেই এরিক গার্সিয়ার দুর্দান্ত গোলে প্রথম গোল শোধ করে বার্সা।
এরপর ৩২তম মিনিটে লামিনে ইয়ামালের গোলটা ছিল স্রেফ দেখার মত। ফেরান তোরেস বলটা এগিয়ে দিলে বক্সের ডান কোন থেকে বাম পায়ের দুর্দান্ত গোলে রিয়ালের জাল ভেদ করেন ইয়ামাল।
বিজ্ঞাপন
এর ২ মিনিট পর আবারও গোল। রিয়াল ডিফেন্ডারদের ভুল কাজে লাগিয়ে বার্সাকে প্রথমবার এগিয়ে দেন ব্রাজিলিয়ান তারকা রাফিনহা। প্রথমার্ধের একেবারে শেষ মুহূর্তে, ৪৫তম মিনিটে আবারও গোল করে বসেন রাফিনহা। রিয়াল ডিফেন্ডারদের অমার্জনীয় ভুলে বল পেয়ে যান রাফিনহা। তিনি সেটা ঠেলে দেন ফেরান তোরেসের কাছে। এরপর ছোট বক্সের সামনে জায়গা করে দাঁড়ান। তোরেসের ফিরতি বল দারুণ এক শটে রিয়ালের জালে জড়ান রাফিনহা।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে এমবাপে একটি গোল করলেও অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায়। একটি পেনাল্টিও পেয়েছিলেন এমবাপে। কিন্তু ভিএআর দেখে সেটা বাতিল করে দেন রেফারি। শেষ পর্যন্ত রিয়ালের বিপক্ষে ৪-২ গোলে এগিয়ে থেকে মাঠ ছাড়ে বার্সা।
দ্বিতীয়ার্ধে গোল হলো ১টি। গোলটি করেন রিয়াল মাদ্রিদের কিলিয়ান এমবাপে। ৭০তম মিনিটে একেবারে ফাঁকায় বল পেয়ে যান ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। বক্সের সামনে গিয়ে তিনি আলতো করে ঠেলে দেন এমবাপের দিকে। গোল করার জন্য শট নিতে পারতেন ভিনি। কিন্তু গোল হতো কি না নিশ্চিত ছিল না। তা না করে এমবাপেকে দিয়ে দেন। একেবারে ফাঁকা জালে বল জড়িয়ে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন রিয়ালের ফরাসী তারকা।