বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক শাসন দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। গত সোমবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার এ কথা বলেন।
ম্যাথু মিলার বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করার পর বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন বাংলাদেশের জনগণের পাশে রয়েছে এবং আরো সহিংসতা থেকে বিরত থাকতে সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।
মার্কিন সরকারের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা গণতান্ত্রিক শাসন দেখতে চাই। চাই বাংলাদেশের জনগণ তাদের সরকার ঠিক করুক। এ বিষয়ে আগামী দিন ও সপ্তাহগুলোতে আমরা নজর রাখব।’
ব্রিফিংয়ে অন্তর্বর্তী সরকার প্রসঙ্গে ম্যাথু মিলার বলেন, এ ক্ষেত্রে জনগণের গণতান্ত্রিক প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটানো ও একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করার বিষয়ে তাঁরা জোর দিচ্ছেন এবং এটি গুরুত্বপূর্ণ।
মুখপাত্র মিলার আরো বলেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহে অনেক প্রাণহানি ঘটেছে। আমরা সবার প্রতি শান্ত থাকার ও আগামী দিনগুলোতে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের ঘোষণাকে স্বাগত ও বাংলাদেশের আইনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানাই।’
একই সঙ্গে কয়েক সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশে মানবাধিকার লংঘন ও হতাহতের ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত খবরে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে (সেনাবাহিনীর প্রচেষ্টাকে) যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে কি না, জানতে চাইলে মুখপাত্র বলেন, তাঁরা চান, বাংলাদেশ সরকারের ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জনগণই ঠিক করবে।
চলমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন
ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ম্যাথু মিলারের কাছে একাধিক প্রশ্ন করা হয়। একটি প্রশ্নে একজন সাংবাদিক বলেন, ‘স্বৈরশাসক’ শেখ হাসিনার ‘দেখামাত্র গুলির নির্দেশে’ কয়েক শ মানুষ নিহত হওয়ার পর বাংলাদেশ এখন মুক্ত। কিন্তু পরিস্থিতি এখনো স্পষ্ট নয়।
জবাবে মিলার বলেন, ‘সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য প্রথমেই আমাদের সমবেদনা জানাই। এখন আমরা সহিংসতার অবসান ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সমর্থন দেওয়ার বিষয়ে মনোযোগ দিচ্ছি। অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব সিদ্ধান্ত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, আইনের শাসন ও বাংলাদেশের গণমানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে নেওয়া উচিত।’
মিলারের কাছে প্রশ্ন ছিল, শেখ হাসিনা পশ্চিমা কোনো দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তাঁর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ থাকায় তাঁকে যুক্তরাষ্ট্র গ্রহণ করবে কি না?
এ প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেন, এ ধরনের কোনো অনুরোধের বিষয়ে তিনি অবগত নন।