কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে রাজধানীতে যে ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছে, তা দেখে বিদেশি কূটনীতিকরা স্তম্ভিত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। গতকাল বুধবার বিকেলে ঢাকায় সাম্প্রতিক ধ্বংসযজ্ঞ বিদেশি কূটনীতিকদের দেখানোর পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের কাছে ওই প্রতিক্রিয়া জানান।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, “বিদেশি কূটনীতিকদের মেট্রো রেল, সেতু ভবন ও বিটিভি ভবনের ধ্বংসযজ্ঞ দেখানো হয়েছে। তাঁরা এসব ধ্বংসযজ্ঞ দেখে স্তম্ভিত হয়েছেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ১৯৬৪ সালে বিটিভি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।
হাছান মাহমুদ আরো বলেন, প্রতিটি ঘটনার ফুটেজ আছে। যারা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, ফুটেজ দেখে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, বৃষ্টি ও যানজটের কারণে ধারণার চেয়েও বেশি সময় লেগেছে কূটনীতিকদের ঢাকার ওই ধ্বংসযজ্ঞ দেখাতে। আজকের পরিদর্শনে ৪৯ দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে ২৩ জন ছিলেন রাষ্ট্রদূত।
এদিকে ধ্বংসযজ্ঞের স্থান পরিদর্শনে জাতিসংঘের কোনো প্রতিনিধি ছিলেন কি না—এমন প্রশ্নের উত্তরে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী বাংলাদেশে নেই। অন্য কেউ গিয়েছিলেন কি না, তা যাচাই করে বলতে হবে।
জানা গেছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ধ্বংসযজ্ঞের স্থান পরিদর্শনে জাতিসংঘের ঢাকা কার্যালয় থেকে দুজনকে মনোনীত করা হয়েছিল। এর মধ্য থেকে একজনকে কেন বাদ দেওয়া হয়েছে, তার ব্যাখ্যা সরকারের কাছে চাওয়া হয়েছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাতের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর জাতিসংঘের লোগোযুক্ত যান ব্যবহারের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের কোনো গাড়ি ব্যবহার হচ্ছে না। গাড়িগুলো জাতিসংঘ শান্তি মিশনে ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। ভুলে জাতিসংঘের লোগো মোছা হয়নি। এখন সেগুলো মুছে ফেলা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশে বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি-জামায়াত বিক্ষোভ করেছে। লস অ্যাঞ্জেলেসে তাদের সমাবেশে পাকিস্তানিরা যোগ দিয়েছে। বিএনপি-জামায়াত পাকিস্তানিদের সহায়তা নিয়েছে। বিদেশে বিভিন্ন স্থানে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এগুলোর বিষয়ে আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশে প্রবাসীরা বিক্ষোভ করেছেন। বিক্ষোভে আরব আমিরাতে ৫৪ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তিনজনকে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়েছে। একজনকে ১১ বছর, বেশ কয়েকজনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একইভাবে আরো কয়েকটি দেশে গ্রেপ্তার ও দণ্ড দেওয়া হয়েছে। সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, সেখানেও বিক্ষোভ করায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।