এক সপ্তাহ ধরে সারা দেশের মতো মোংলায়ও বয়ে যাচ্ছে প্রচণ্ড দাবদাহ। এতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। সবচেয়ে বেশি বিপাকে আছেন খেটে খাওয়া মানুষ। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, সপ্তাহখানের মধ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।

বরং গরমের তীব্রতা আরো কয়েক ডিগ্রি বাড়তে পারে। শনিবারও (২০ এপ্রিল) তাপমাত্রা ছিল ৪১ ডিগ্রির বেশি। 

 

ঋতুচক্রের হিসাবে এখন গরম পড়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু যেটি ঘটছে সেটি অতিমাত্রায় অস্বাভাবিক।

মোংলায় গত কয়েক দিনে প্রচণ্ড দাবদাহে হাঁসফাঁস জনজীবন। একে তো দেখা নেই বৃষ্টির! তার মধ্যে বাতাসে জলীয় বাষ্পের মাত্রা কমে যাওয়ায় গরমও যেন চরমে। কষ্ট বেড়েছে খেটে খাওয়া মানুষের। তারা যেখানে একটু ছায়া সেখানেই খুঁজছেন প্রশান্তির মায়া।
তবে গরমের হাওয়া পৌঁছে গেছে ছায়াতলায়ও। এত গরম আগে দেখেনি মোংলাবাসী।

 

মোংলা বন্দরের পুরনো শ্রমিক মো. আক্কাচ আলী (৭০) বলেন,  ‘সম্প্রতি যে গরম পড়ছে, আমার এই জীবনে আগে দেখিনি। মানুষ রাস্তাঘাটে চলাফেরা করতে পারছে না। বাচ্চারাও ঘরে থাকতে পারছে না।

এত গরম কেন পড়তেছে আল্লাহই ভালো জানেন।’

 

আকরাম হোসেন (৫২) নামের আরেক শ্রমিক বলেন, ‘এত রোদ, শান্তি নাই কোথাও। জাহাজেও প্রচণ্ড গরম, কিনারেও গরম। মানুষের কাজকর্ম নাই, শান্তিও নাই। মানুষ কোথায় যাবে এই রোদে? কী করে খাবে?’ 

পৌর শহরের ১ নম্বর জেটির শ্রমিক সোহারাব হোসেন (৪৩) বলেন, ‘প্রচণ্ড গরমে জীবনটা অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। পেটের দায়ে কাজে বেরিয়েছি, কিন্তু এত গরমে কাজে শান্তি পাচ্ছি না। হাঁপিয়ে উঠতে হচ্ছে, শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে। শুধু পানির পিপাসা পাচ্ছে।’

চট্টগ্রাম থেকে মোংলা বন্দরে আসা মো. জাহাঙ্গীর আলম নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘মোংলা বন্দরে অবস্থানরত একটি বিদেশি জাহাজের জন্য পণ্য নিয়ে এসেছি। কিন্তু যে গরম, পণ্য নিয়ে জাহাজে যেতে সাহস হচ্ছে না। নদীর পানি ও বাতাস অতিমাত্রায় গরম।’ 

গরম হাওয়ায় শান্তির পরশ মিলছে না কোথাও। মামার ঘাটের মেরিন ড্রাইভের গাছের ছায়াতলে আশ্রয় নেওয়া মো. মামুন শেখ বলেন, ‘ভ্যান না চালালে সংসার চলে না। এক দিন বসে থাকলে তো খাবার জুটবে না। এই গরমে একটু বৃষ্টি হলে আমাদের জন্য ভালো হতো।’

তবে আপাতত সপ্তাহখানেকের মধ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই উল্লেখ করে মোংলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘শনিবার মোংলার আকাশে তাপমাত্রা ছিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গরমের তীব্রতা কমবে না, বরং আরো বাড়বে।’