আকিব মাহমুদ: নির্বাচনের বাকি আর মাত্র হাতে গোনা কয়েকটা দিন। শেষ মুহুর্তের নির্বাচনী প্রচার প্রচারনায় ব্যস্ত সময় করছেন প্রার্থীরা। গত ১৮ জুন থেকে শুরু হয়েছে আগাম ভোটিং কার্যক্রম। ভিড়বাট্টা এড়াতে পছন্দের প্রার্থীকে আগাম ভোট দিতে ভোটকেন্দ্রে যাচ্ছেন ভোটাররা। এদিকে ভোটারদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নিউইয়র্কের ডেমোক্র্যাটিক ডিস্ট্রিক্ট লিডার পদপ্রার্থী বাংলাদেশি আমেরিকান শাহ নাওয়াজ। ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের পাশাপাশি বিভিন্ন সভা সেমিনার, মোটর শোভাযাত্রা, ফোন ব্যাকিং এর মাধ্যমেও ভোট চাইছেন তিনি। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৩ জুন অনুষ্ঠিত হয় ভার্চুয়াল নির্বাচনী সভা। শাহ নাওয়াজের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্য থেকে বিশিষ্ট ব্যাক্তিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এই ভার্চুয়াল সভায় মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন ডাঃ ইবরুল চৌধুরী এবং মাকসুদ চৌধুরী, এসময় উপস্থিত ছিলেন এশিয়ান আমেরিকান বারাকা ওবামার কমিশনের সাবেক উপদেষ্টা ডঃ নিনা আহমেদ, জর্জিয়া স্টেট সিনেটর শেখ রহমান, প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা সংস্করণের সম্পাদক ইবরাহিম চৌধুরী, মিলর্বন বরোর কাউন্সিলম্যান মোহাম্মদ নূরুল হাসান, টিবিএন নিউজ-২৪ এর সুলতানা রহমান, নিউইয়র্কের কমিউনিটি লিডার ফখরুল আলম, কাজী সাখাওয়াত হোসেন আজম, ফিরোজ আহমেদ এবং মোহাম্মদ রশিদ, পেনসিলভেনিয়ার গর্ভনর এ্যাপেয়ার্স অফিস-এর প্রতিনিধি মোহাম্মদ এনাম চৌধুরী, শিক্ষক ফারহানা আফরোজ (পেনসিলভেনিয়া), সাংবাদিক সাখাওয়াত হোসেন সেলিম, আটলান্টা থেকে কমিউনিটি সংগঠক আবু লিয়াকত হুসেন পেনসিলভেনিয়ার কমিউনিটি সংগঠক কামরুল হাসান, মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম আরিফ, বিসিপি’র প্রেসিডেন্ট জাহিদ চৌধুরী, বাংলাদেশী আমেরিকান কমিউনিটি ফোরাম অব পেনসিলভেনিয়ার সোলায়মান ইবনে মজিব অন্তু, বাফেলো থেকে আসিফ মোক্তাদির প্রমুখ। এসময় তারা নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট লিডার পদে শাহ নাওয়াজকে সমর্থন জানিয়ে এবং সবরকম সহযোগীতার আশ্বাস দেন। বক্তারা বলেন বাংলাদেশি-আমেরিকান ভোটাররা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভোট দিলে ডিস্ট্রিক্ট লিডার পদে অবশ্যই জয়ী হবেন শাহ নেওয়াজ। কমিউনিটির একজন সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে তিনি এতোদিন আমাদের দিয়ে এসেছেন। এখন সময় এসেছে তাকে কিছু দেওয়ার। তার বিজয় সুনিশ্চিত করতে স্থানীয় সব বাংলাদেশি-আমেরিকান ভোটারদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
এদিকে শাহ নাওয়াজের সমর্থনে বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) নিউইয়র্ক সিটিতে এক মোটর শোভাযাত্রা বের হয়। তার সমর্থনে প্লাকার্ড নিয়ে বিপুর সংখ্যক প্রবাসী মোটর শোভাযাত্রায় অংশ নেন। শোভাযাত্রাটি তার নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এসময় শাহ নাওয়াজ ভোটারদের কাছে তার নির্বাচনী এজেন্ডা তুলে ধরে ভোট প্রার্থনা করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে শাহ নাওয়াজের নির্বাচনী ক্যাম্পেইন পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছে বাংলাদেশি মালিকানাধীন প্রথম পলিটিক্যাল ক্যাম্পেইন পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান সেরা পলিটিক্যাল সল্যুশনস। নির্বাচনী ক্যাম্পেইনের শুরু থেকে ডিজিটাল ক্যাম্পেইন পরিচালনাসহ সকল ধরনের সেবা প্রদান করে আসছে সংস্থাটি শুরু থেকেই। সাম্প্রতিক সময়ে ভোট ব্যাঙ্কিং এর ক্ষেত্রে খুবই ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা। সেরা পলিটিক্যাল সল্যুশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা যায়, অটোমেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভোটারদের কাছে ক্ষুদে বার্তা, ইমেইল এবং নির্বাচনী বার্তা নিয়ে পৌছে গিয়েছে অটোমেটেড কল, এখন শেষ মুহুর্তে ফোন ব্যাংকিং এর পাশাপাশি, পোস্টারিং এবং লিফলেট বিতরন চলছে।
উল্লেখ্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে অনন্য এক নাম শাহ নাওয়াজ। বিপদে আপদে কমিউনিটির পাশে থেকে কুড়িয়েছেন অকৃত্রিম ভালোবাসা। করোনা অতিমারির প্রকোপে বিদ্ধস্ত যুক্তরাষ্ট্রের দূর্গত মানুষের পাশে ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের মত আলোকবর্তিকা হাতে নিয়ে এগিয়ে আসেন শাহ নেওয়াজ। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতদের দাফন, বিনামূল্যের কোভিড টেস্ট, হালাল খাবার সরবারহ, ফ্রি ব্লাড গ্রুপিংসহ নগদ অর্থ সহায়তা দিয়ে থেকেছেন গণমানুষের পাশে। স্বীকৃতিস্বরুপ পেয়েছেন অসংখ্যা পুরষ্কার। করোনাকালীন সময়ে কমিউনিটির মানুষের পাশে থাকায় ২০২০ সালের ১০ নভেম্বর নিউইয়র্কের ব্রুকলিন বোরো প্রেসিডেন্ট এরিক এডামস কর্তৃক ভূষিত হন কোভিড-১৯ হিরো অ্যাওয়ার্ডে।
বাংলাদেশের দক্ষিন পূর্বাঞ্চলীয় জেলা খুলনায় জন্ম নেয়া শাহ নেওয়াজ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে নেন সর্বোচ্চ ডিগ্রি। এছাড়া একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ থেকে অর্জন করেছেন বিজনেস এডমিনিষ্টেশন-এ মাস্টার্স ডিগ্রি। শিক্ষাজীবন শেষে যোগ দেন বাংলাদেশ টোবাকোতে। পরবতীর্তে নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলেন শাহ নেওয়াজ। চেয়ারম্যান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন ‘নেওয়াজ গ্রুপ’। নেওয়াজ গ্রুপের অধীনে সুপার মার্কেট, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী, এম্রয়ডারী ফ্যাক্টরী, বায়িং অফিস প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতেন তিনি। দীর্ঘদিন সুনামের সাথে কাজ করার পর ২০০৬ সালে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। শুরুর দিকে গিফট শপের ব্যবসায় জড়িত হন। ধীরে ধীরে নিউইয়র্কের এনওয়াই ব্রোকারেজ ইনক, নিউইয়র্ক ইন্সুরেন্স ব্রোকরেজ ইনক, নিউইয়র্ক কার অ্যান্ড লিমো সার্ভিসেস ইনক, গোল্ডেন এজ হোম কেয়ার, সম্প্রচারধীন সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইউএসএ ইনক-স্যাম টিভি, সাপ্তাহিক বর্তমান বাংলা ইনক, ব্রোকারেজ ইনক ও এসএসআরআর প্রোপার্টিজ ইনক প্রতিষ্ঠা করেন। পাশাপাশি তিনি বিনোদন ম্যাগাজিন জেমিনি ও পরিবর্তণ—এর সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশীদের ‘অ্যামব্রেলা সংগঠন’ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ সোসাইটি, সন্দ্বীপ সোসাইটি ইউএসএ এবং BACLAI-এর আজীবন সদস ̈এবং নিউইয়র্ক-বাংলাদেশী লায়ন্স ক্লাব, এর মেম্বার, বাংলাদেশী বিজনেস এসোসিয়েশন (জেবিবিএ)-এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এছাড়াও ফোবানা কনভেনশন ২০১৯ সালের আহ্বায়ক এবং বাংলাদেশ কালচারাল ফেস্টিভ্যাল নিউইর্য়কের ২০১৯ এর সফল কনভেনর ছিলেন। নিউইয়র্কের ৫ বোরোর চার বোরোতে অর্থাৎ কুইন্স, ব্রুকলীন, ব্রঙ্কস ও ম্যানহাটনের সামার ফেস্টিভ্যাল(পথসভা) আয়োজনের সাথে প্রত্যক্ষ্য ও পরোক্ষভাবে জড়িত থেকে ব্যবসা- বাণিচজ্যর প্রসার ছাড়াও কমিউনিটির কল্যাণে কাজ করছেন।